নাবালিকা সহপাঠীর বিয়ে আটকে দিল বগুলা পূর্বপাড়া হাই স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রীরা।
বুধবার তাদের এক সহপাঠীর বিয়ের আয়োজন করা হয়েছিল। খবরটা পৌঁছে যায় স্কুলের সহপাঠীদের কাছে। প্রথমে গুঞ্জন। পরে তারা সকলে মিলে সিদ্ধান্ত নেয় যে ভাবেই হোক আটকাতে হবে এই বিয়ে। সেই মতো তারা যোগাযোগ করে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে। এই উদ্যোগকে সমর্থন করেন তাঁরাও।
ঠিক হয়, স্কুলের টিফিনের সময় ওই ছাত্রীরা দেখা করবে পঞ্চায়েত প্রধানের সঙ্গে। তাঁর কাছেই তারা আবেদন করবে এই বিয়ে আটকানোর জন্য। সেই মতো সোমবার দুপুরে জনা কুড়ি ছাত্রী হাজির হয় বগুলা ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের দুলাল বিশ্বাসের কাছে। সেখানে তারা পুরো বিষয়টি খুলে বলে। গোটা বিষয়টি জানার পরে দুলালবাবু হাঁসখালি খানার পুলিশের সাহায্য চান। খবর পেয়ে পুলিশ চলে আসে বগুলার সেই নাবালিকা ছাত্রীর বাড়ি।
বুধবার বিয়ে। মণ্ডপ তৈরি। চলে এসেছেন আত্মীয়স্বজনও। পুলিশ ও ব্লক প্রশাসনের কর্মীদের কথা কোনও ভাবেই মানতে রাজি নয় পরিবারে লোকজনও। বেগতিত বুঝে ছুটে আসেন হাঁসখালির ওসি অনিন্দ্য বসু। বগুলা ফাঁড়িতে ডেকে হয় পাত্রী পক্ষকে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়, এই বিয়ে কোনও ভাবেই মানা যাবে না। পাত্র পক্ষকেও জানিয়ে দেওয়া হয় যে, বিয়ে করলে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রশাসনের চাপে পড়ে বিয়ে বন্ধ করতে রাজি হয় ওই নাবালিকার পরিবার।
গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান দুলালবাবু বলছেন, ‘‘ভাবুন একবার, ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে সচেতনতা কোথায় গিয়ে পৌঁছিয়েছে! কাউকে বলে দিতে হয় নি। ওরা নিজেরেই কেমন এগিয়ে এসে নাবালিকা সহপাঠীর বিয়ে রুখে দিল। এটা প্রশংসনীয় ঘটনা।’’ স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুধাংশু বিশ্বাস বলেন, ‘‘ওরা আমাদের স্কুলের গর্ব।’’ তবে এটা নিয়ে আলাদা করে কিছু ভাবতে রাজি নয় ছাত্রীরা। তাদের কথায়, ‘‘নাবালিকা বিয়ে সামাজিক অপরাধ। আমরা সেই অপরাধটাই রুখতে চেয়েছি মাত্র।’’