সারফান শেখ
হন্তদন্ত হয়ে টোটো নিয়ে হাসপাতালে এসেছিল এক যুবক।
সংজ্ঞাহীন এক যুবককে কোলে করে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ঢুকে সে বলেছিল, ‘‘এ ব্যাটা রাস্তায় মদ খেয়ে পড়েছিল। অবস্থা বোধহয় সুবিধার নয়। হাসপাতাল পর্যন্ত পৌঁছে দিলাম। বাকিটা আপনারা দেখুন।’’
তার পর ঝড়ের বেগে সে বেরিয়ে যায় হাসপাতাল থেকে। ডোমকল মহকুমা হাসপাতালের কর্মী ও ওই যুবকের বাড়ির লোকজন যখন আসল বিষয়টা জানতে পেরেছে ততক্ষণে সেই টোটোও নেই। হাওয়া সেই ‘সহৃদয়’ যুবকও।
পুলিশ জানিয়েছে, টোটোর চালককে চায়ের সঙ্গে মাদক মিশিয়ে খাইয়ে দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। তারপর তাদের একজন হাসপাতালে পৌঁছে দিয়ে টোটো ছিনতাই করে পালিয়েছে। জলঙ্গির সাহেবরামপুর গ্রামের বছর পঞ্চাশের সারফান শেখের দাবি, ‘‘পাঁচশো টাকায় সারা দিনের জন্য ওরা কয়েক জন টোটো ভাড়া করেছিল। অনেক গল্পও করছিল। রাস্তায় ওরা এক জায়গায় চা খায়। আমাকেও চা দেয়। ডোমকলে ঢোকার পরে আর কিছু মনে নেই।’’
সারফানের বাড়ির লোকজনের দাবি, শুক্রবার সকালে বাড়ি থেকে টোটো নিয়ে বের হন সারফান। সন্ধ্যায় তাঁরা খবর পান সারফান ডোমকল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। রবিবার গোটা ঘটনা জানিয়ে সারফান পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
মাস দুয়েক আগে ৬ কাঠা জমি বিক্রি করে ৮০ হাজার টাকা দিয়ে সারফান টোটো কিনেছিলেন। সেখান থেকেই তাঁর সংসার চলত। শুক্রবার সকালে জলঙ্গির জোড়তলা থেকেই ওই দুষ্কৃতীরা তাঁর টোটো ভাড়া করে। পুলিশ জানিয়েছে, যাত্রী সেজে টোটো চুরির ঘটনা এর আগেও ঘটেছে ডোমকলে। তবে সেগুলো সবই রাতের দিকে হয়েছে। বেশি ভাড়ার টোপ দিয়ে মাঠের ধারে নিয়ে গিয়ে চালককে বেঁধে টোটো নিয়ে পালানোর ঘটনা ঘটেছে বছর খানেক আগে। তবে এমন কায়দায় টোটো ছিনতাই এই প্রথম বলেই পুলিশের দাবি।
তবে এমন ঘটনায় টোটো চালকেরা উদ্বিগ্ন। তাঁরা জানাচ্ছেন, যাত্রীদের বার বার বিশ্বাস করে এমন ঠকতে হচ্ছে। দিন কয়েক আগে, ফরাক্কায় সন্ধ্যায় এক টোটো চালককে দু’শো টাকা ভাড়া দেবে বলে টোটোতে চাপে জনা চারেক দুষ্কৃতী। তারপর রাস্তার মাঝে ভাড়া নিয়ে গণ্ডগোল শুরু হয়। খুন হন সেই টোটো চালক।