Crime

ছেলে দোষী হলে শাস্তি চান মা

পুলিশের দাবি, ব্যক্তিগত রেষারেষির জেরেই চিরঞ্জিতকে সে খুন করেছে বলে পুলিশ কর্তাদের কাছে সে কথা স্বীকারও করেছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

বহরমপুর শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০২০ ০৮:৩৮
Share:

ফাইল চিত্র

ছেলে সুমন রায় খুনে অভিযুক্ত হয়ে পুলিশের হেফাজতে। সারা রাত দু’চোখের পাতা এক করতে পারেননি তার মা তপতী রায়। তাঁদের ইন্দ্রপ্রস্থের বাড়িতে সুমনের স্ত্রী গার্গী রায় ও পাঁচ বছরের পুত্র সন্তানও। বৃহস্পতিবার তপতী বলেন, ‘‘গতকাল থেকে মন মেজাজ ভাল নেই। তবে ছেলে যা করেছে, তার শাস্তি হওয়া দরকার। তবে পুলিশ যেন প্রকৃত তদন্ত করে।’’ তিনি জানান, ‘‘বেশ কিছু বছর থেকে, হাই প্রেসার, সুগার ও থাইরয়েডের সমস্যা ছিল। সেই কারণেই নিয়মমাফিক ওষুধ খেত।’’ ছেলের সঙ্গে থানায় দেখা করতে পর্যন্ত যাননি তপতীদেবী। জানেন না, কোনও আইনজীবী তাঁর ছেলের হয়ে দাঁড়াবেন কি না। সুমন গ্রেফতারের পর থেকে তাঁর স্ত্রী গার্গী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এদিন বাড়িতে বিছানা ছাড়েননি গার্গী। ফলে সকালে ঝোলা হাতে নিয়ে বাজারে যেতে হয় তপতীদেবীকেই।

Advertisement

সুমনকে বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে রাত দশটা পর্যন্ত একাধিক পুলিশ অফিসার বহরমপুর থানায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। কখনও বহরমপুর থানার আইসি, কখনও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, কখনও বা খোদ পুলিশ সুপারের সামনে সুমনকে বসতে হয়েছে। পুলিশের দাবি, ব্যক্তিগত রেষারেষির জেরেই চিরঞ্জিতকে সে খুন করেছে বলে পুলিশ কর্তাদের কাছে সে কথা স্বীকারও করেছে। জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব শেষ হতেই বুধবার রাত দশটা নাগাদ তাকে থানার লকআপে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। বুধবার রাত ১০টা নাগাদ চারটি রুটি ও আলুর তরকারি খেতে দেওয়া হয় সুমনকে। এ ছাড়া চাহিদা মতো সুগার, প্রেসারের ওষুধও এনে দেওয়া হয়। সেদিন রাত ১১টা ৫ মিনিটে পুলিশ লকআপে মেঝেতেই শতরঞ্চি পেতে অন্য অভিযু্ক্তদের সঙ্গে সে ঘুমিয়ে পড়ে।

বৃহস্পতিবার সাত সকালে ঘুম ভাঙতেই চিনিছাড়া লিকার চা ও দুটি বিস্কুটের আব্দার করেছিল। সেই আবদার মেটাতে পুলিশ লকআপে চা-বিস্কুট দেওয়া হয়। পুলিশ হেফাজতে থাকা অন্য অভিযুক্তদের সঙ্গে সুমনকে ফিস ফিস করে কথা বলতেও দেখা গিয়েছে। আর একটু বেলা হতে দু’টি রুটি এবং একবাটি আলুর তরকারি দিয়ে প্রাতরাশ সারে সে। বৃহস্পতিবার ভাত ডাল সব্জি দিয়ে দুপুরের আহার শেষ হয় বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

সুমনের বাবা সীতারাম রায় ছিলেন বিদ্যুৎ দফতরের কর্মী। ইন্দ্রপ্রস্থ এলাকায় প্রায় ৪০ বছর ধরে সুমনের পরিবার বাস করেন। সুমনের বাবা এলাকায় ভাল মানুষ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। সুমনেরা দুই ভাই ও এক বোন। ভাইবোনদের মধ্যে সুমন বড়। বহরমপুরের জিটিআই স্কুল থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে ইতি টানে সুমন। তপতী বলছেন, “পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে বন্ধুবান্ধবদের পাল্লায় পড়ে ছেলে আমার বিপথে চলে যায়।" তবে মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার অজিত সিংহ যাদব বলেন, “পুলিশের খাতায় সুমনের নাম নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন