Murshidabad Book Fair

১ কোটি ২৭ লক্ষ টাকার রেকর্ড বিক্রি এ বারের জেলা বইমেলায়

জেলা বইমেলার কমিটি সূত্রে পাওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী এ বারে জেলা বইমেলায় প্রায় এক কোটি ২৭ লক্ষ টাকার বই বিক্রি হয়েছে। এটাই সর্বকালীন রেকর্ড।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২৩ ১০:০৮
Share:

মুর্শিদাবাদ জেলা বইমেলা। ছবি সংগৃহীত।

মুর্শিদাবাদ জেলা বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসে রাজ্যের গ্রন্থাগার দফতরের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা বলেছিলেন মুর্শিদাবাদ জেলা বইমেলায় ভাল পরিমাণ বই বিক্রি হয়। মন্ত্রীর সেই কথাই শেষ পর্যন্ত সত্যি হয়ে দেখা দিল। মুর্শিদাবাদ জেলা বইমেলা শেষে দেখা যাচ্ছে, বই বিক্রির নিরিখে অন্য বছরকে পিছনে ফেলে দিয়েছে এ বছর।

Advertisement

জেলা বইমেলার কমিটি সূত্রে পাওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী এ বারে জেলা বইমেলায় প্রায় এক কোটি ২৭ লক্ষ টাকার বই বিক্রি হয়েছে। এটাই সর্বকালীন রেকর্ড। এমনটাই দাবি জেলা বইমেলা কমিটির। এর আগে রেকর্ড ছিল ১ কোটি ১৬ লক্ষ টাকা।

জেলা গ্রন্থাগার আধিকারিক মনোঞ্জয় রায় বলেন, ‘‘আমাদের জেলা বইমেলায় বরাবরই ভাল পরিমাণ বিক্রি হয়। এবারে সেই ধারা অব্যাহত থাকল। পাঠক, প্রকাশক সকলকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’’

Advertisement

জেলা গ্রন্থাগার দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৯-২০ সালের জেলা বইমেলায় প্রায় এক কোটি ১৬ লক্ষ টাকার বই বিক্রি হয়েছিল। কিন্তু করোনার কারণে ২০২০-২১ সালের জেলা বইমেলায় ৮৫ লক্ষ টাকার বই বিক্রি হয়েছিল।

২০২১-২২ সালের জেলা বইমেলায় এক কোটি পাঁচ লক্ষ টাকার বই বিক্রি হয়েছিল। তবে দুবছর পরে ফের করোনার চোখ রাঙানি দেখা দিয়েছে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে। তারই মাঝে এবারে এক কোটি ২৭ লক্ষ টাকার বই বিক্রি হল। ই বুক, ডিজিটালের যুগেও এত পরিমাণ বিক্রি হওয়ায় খুশি বইপ্রেমীরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, বইয়ের প্রতি আকর্ষণ শাশ্বত। ফলে বইয়ের প্রতি এমন ভালবাসা।

তৃণমূলের সংগঠন বঙ্গীয় সাধারণের গ্রন্থাগার ও কর্মী কল্যাণ সমিতির রাজ্যের সভাপতি তথা মুর্শিদাবাদ স্থানীয় গ্রন্থাগার কৃত্যকের সদস্য মহম্মদ ফারুখ হোসেন জানান, ‘‘এবারে রেকর্ড পরিমাণ বই বিক্রি হয়েছে জেলা বইমেলায়। বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এবারে বই বিক্রির পরিমাণ বেড়েছে।’’

জেলা বইমেলায় আসা একটি প্রকাশনী সংস্থার কর্তা নৃপেন মণ্ডল বলেন, ‘‘বরাবরই বহরমপুরে জেলা বইমেলায় বই বিক্রি ভাল হয়। এবারেও ভাল পরিমাণ বই বিক্রি হয়েছে।’’

বাংলাদেশের বইয়ের স্টলে মেলার কদিন ভাল পরিমাণ বই বিক্রি হয়েছে। ওই স্টলের কর্মকর্তা শফিউল্লাহ বলেন, ‘‘এ বারে মেলার আয়তন অনেক বড় হয়েছে স্টল ছড়িয়ে ছিটিয়ে হওয়ায় ভেবেছিলাম বিক্রি ভাল হবে না। কিন্তু মেলা শেষে।দেখলাম বই বিক্রিতে ভাল সাড়া পেয়েছি।"

তা হলে বইয়ের কদর কমেনি? কী বলছেন সকলে?

প্রকাশক কৌশিক গুড়িয়া, বলছেন, ‘‘হাতে বই নাড়া চাড়া করে বই পড়ার যে মজা আছে সেটা ডিজিটাল বই পড়ে পাওয়া যায় না। তাই বই পড়ার মানসিকতা কোনও অংশে কমেনি।’’

মনোঞ্জয়বাবুর বক্তব্য, ‘‘গত কয়েক বছরের বই বিক্রির রেকর্ড ভেঙেছে এ বারের জেলা বইমেলায়। এবারে প্রায় এক কোটি ২৭ লক্ষ টাকার বই বিক্রি হয়েছে। এতেই প্রমাণ বইপ্রেমীর সংখ্যা কম নয়।’’

বহরমপুর গার্লস কলেজের অধ্যক্ষ হেনা সিংহের কথায়, ‘‘বই চিরকালই মানুষের আকর্ষণের কেন্দ্র বিন্দুতে থাকে। মাঝে ই-বুকের দিকে মানুষের নজর কিছুটা ঘুরলেও বইয়ের প্রতি ভালবাসা কমেনি।’’গোরাবাজার আইসিআই স্কুলের প্রধান শিক্ষক জয়ন্ত দত্ত বলছেন, ‘‘বইয়ের বিকল্প ডিজিটাল নয়। যাঁরা বই পড়েন, তাঁরা বই কিনবেন। উঠতি বয়সী ছেলেমেয়েদের মধ্যে বই পড়ার মানসিকতা বাড়ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন