কয়েনের সঙ্গে ভোগান্তি ‘ফ্রি’, জেরবার নবাবের জেলা

কোথাও সে দিব্যি দৌড়চ্ছে। কোথাও আবার একেবারে ‘অচল’! অথচ পিঠে কিন্তু দিব্যি জ্বলজ্বল করছে অশোকস্তম্ভ। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, এক টাকা থেকে দশ টাকার সমস্ত কোনও কয়েন অচল নয়। প্রশাসনের বক্তব্য— কয়েন কেউ নিতে না চাইলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Advertisement

সামসুদ্দিন বিশ্বাস

বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৮ ০৮:৩০
Share:

খুচরো-ঝঞ্ঝাট! বহরমপুরে। ছবি: গৌতম প্রামাণিক

কয়েনেরও এলাকা থাকে!

Advertisement

কোথাও সে দিব্যি দৌড়চ্ছে। কোথাও আবার একেবারে ‘অচল’! অথচ পিঠে কিন্তু দিব্যি জ্বলজ্বল করছে অশোকস্তম্ভ। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, এক টাকা থেকে দশ টাকার সমস্ত কোনও কয়েন অচল নয়। প্রশাসনের বক্তব্য— কয়েন কেউ নিতে না চাইলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কিন্তু বাস্তব বলছে অন্য কথা। এক টাকার কয়েন দেখলেই রে রে করে উঠছেন বহু ব্যবসায়ী— ‘ও কয়েন অচল, নেব না দাদা।’

Advertisement

‘অচল? তা হলে কলকাতায় চলছে কী করে?’

‘কলকাতা কেন, বারাসাতের পর থেকেই চলছে। কিন্তু আমাদের এখানে এ টাকা অচল!’ অথচ নোট বাতিলের ঠিক পরে পরে মাটির ভাঁড়ে জমানো এই কয়েনই ত্রাতার ভূমিকা নিয়েছিল। সেই সময়ে অনেকেই বুক ফুলিয়ে বলেছেন, ‘‘মেরে পাস কয়েন হ্যায়।’’

এখন সেই ‘ডায়ালগ’ পুরো ফ্লপ!

অভিযোগ, ব্যাঙ্ক থেকে ব্যবসায়ী, ডাকসাইটে ব্যবসায়ী থেকে ডাকঘর সকলের একটাই পোঁ, ‘‘খুচরো নিতে পারব না।’’

নিট ফল, ঘরে ঘরে জমছে অজস্র কয়েন। তার পরিমাণ শুনলে চোখ কপালে উঠবে। কারও ঘরে জমেছে ৬০ হাজার টাকা, কারও আবার জমে যাওয়া কয়েনের পরিমাণ আট লক্ষ টাকা! এ দিকে নবাবের জেলা জুড়ে গতি নেই সেই কয়েনে। কয়েনের পাহাড়ের সামনে বসে এক ব্যবসায়ীর আক্ষেপ, ‘‘এই কয়েন নিয়ে কী করি, বলুন তো!’’

একটা সময়ে গুজবের জেরে দশ টাকার কয়েন নেওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। পরে সেই সমস্যা মেটে। এখন গেরো এক টাকার। ছোট কয়েন একেবারেই চলছে না। বহরমপুরের স্বর্ণময়ীর এক চা ব্যবসায়ী বলছেন, “অন্যেরা এক টাকার ছোট কয়েন নেয় না। ফলে আমিও নিচ্ছি না।”

মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক পি উলগানাথন বলছেন, “ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে কয়েন সমস্যা সমাধানের কথা বলা হয়েছে। তাঁরা বিষয়টি দেখছেন।” মুর্শিদাবাদের লিড ব্যাঙ্কের ম্যানেজার অমিত সিংহ বলছেন, “এক থেকে দশ টাকার কোনও কয়েন অচল নয়। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বিভিন্ন সময় নোটিশ দিয়ে তা জানিয়েছে। আমরাও নানা ভাবে প্রচার করেছি।”

তা হলে ব্যাঙ্কগুলোই বা কয়েন নিচ্ছেনা কেন? লিড ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের দাবি, “ব্যাঙ্কগুলিতে কয়েন রাখার চেস্ট ভর্তি। তা সত্ত্বেও বিভিন্ন ব্যাঙ্ক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে স্থানীয় ভাবে আলোচনা করে কয়েন নিচ্ছে। কয়েন যে একেবারেই নিচ্ছে না এমনটা নয়।” কিন্তু বাস্তব বলছে অন্য কথা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন