কন্যাশ্রী প্রকল্পে সেরার পুরস্কার পেল মুর্শিদাবাদ।
রাজ্যের নারী ও শিশু কল্যাণ দফতরের সচিব মুর্শিদাবাদ জেলাশাসককে চিঠি দিয়ে সম্প্রতি এ কথা জানিয়েছেন। ওই চিঠিতে, ওই প্রকল্প-প্রসারে বিশেষ ভূমিকার জন্য প্রশংসা করা হয়েছে।
১৪ অগস্ট কন্যাশ্রী দিবসে রাজ্যস্তরের অনুষ্ঠানে পুরস্কৃত করা হবে মুর্শিদাবাদকে।
মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক পি উলাগানাথন বলছেন, “কন্যাশ্রী প্রকল্প রূপায়ণে মুর্শিদাবাদ জেলা রাজ্যের মধ্যে ভাল কাজ করেছে। এ জন্য আগামী ১৪ অগস্ট পুরস্কার দেবে বলে আমাদের জানানো হয়েছে।”
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নবগ্রামের জুলেখা খাতুন পড়াশোনা চালানোর জন্য বছর দু’য়েক আগে নিজের বিয়ে রুখে দিয়েছে। আর সেজন্য জুলেখা বাড়ির চক্ষুশূল হয়ে স্কুলের জীবন বিজ্ঞানের পরীক্ষাগার থেকে মাধ্যমিক পাশ করে। পরবর্তী সময় জুলেখা বহরমপুরের শিলায়ন হোমে আশ্রয় নেয়। এই হোম থেকেই উচ্চ মাধ্যমিকে পড়াশোনা করছে। তার লড়াইকে কুর্নিশ জানাতে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে রাজ্যস্তরের কন্যাশ্রী দিবসের মঞ্চে তার হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
কন্যাশ্রী প্রকল্পে মুর্শিদাবাদে কেমন কাজ হয়েছে? পালস পোলিও থেকে শুরু করে মিশন নির্মল বাংলা, কিংবা নাবালিকার বিয়ে বন্ধ কন্যাশ্রী মেয়েদের সচেতনতার কাজে লাগিয়েছে জেলা প্রশাসন। নাবালিকার বিয়ে রুখতে কন্যাশ্রী মেয়েদের নিয়ে তৈরি করা হয়েছে কন্যাশ্রী যোদ্ধা। নাবালিকার বিয়ের খবর পেলেই প্রশাসনের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে তাঁরা ছুটেছে নাবালিকা বিয়ে রুখতে। গত বছর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে নাবালিকা বিয়ে বন্ধে রাজ্যের মধ্যে মুর্শিদাবাদ সব থেকে এগিয়ে।
জেলার প্রায় ৪১ শতাংশ মানুষ এ বিষয়ে সচেতন। প্রশাসনের দাবি, কন্যাশ্রী প্রকল্পের ফলে বাল্যবিবাহ বন্ধে সচেতনতা অনেক বেড়েছে। গত এক বছরে অন্তত ২০০টি নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করা গিয়েছে। যার সিংহভাগ কন্যাশ্রীদের কাছ থেকে খবর এসেছে।
এছাড়া মিশন নির্মল বাংলার সচেতনতায় ভোরে উঠে হুইসল হাতে কন্যাশ্রীদের ছুটতে দেখা গিয়েছে। এ ভাবে কন্যাশ্রী প্রকল্প মুর্শিদাবাদ জেলায় সাড়া ফেলে দিয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে কন্যাশ্রী ১ প্রকল্পে, কন্যাশ্রী মেয়েরা বছরে এক কালীন ৭৫০ টাকা পায়। এ ছাড়াও কন্যাশ্রী ২ প্রকল্পে, মেয়েরা এককালীন ২৫ হাজার টাকা পায়। জেলায় চলতি বছরে কন্যাশ্রী ১ প্রকল্পে প্রায় দু’লক্ষ অনুমোদন পেয়েছে।