আবেদনে শীর্ষে মুর্শিদাবাদ

জেলা প্রশাসন ও খাদ্য দফতর স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, ভোটার তথ্য যাচাই বা রেশন কার্ডের সঙ্গে এনআরসি-র (নাগরিক পঞ্জি) কোনও সম্পর্ক নেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:৪৯
Share:

ভিড় ভেঙেছে জেরক্সের দোকানে। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম

রাজ্য জুড়ে রেশন কার্ডের জন্য বিশেষ অভিযান শুরু করেছে খাদ্য দফতর। গত ৯ সেপ্টেম্বর থেকে গ্রামীণ এলাকায় বিডিও অফিসে এবং শহরে পুরসভায় বিশেষ শিবির করে রেশন কার্ডের জন্য আবেদনপত্র সংগ্রহ শুরু হয়েছে। সূত্রের খবর, রাজ্যে সবচেয়ে বেশি আবেদন জমা পড়েছে মুর্শিদাবাদে। তার পরে রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও হাওড়া। মঙ্গলবার খাদ্য দফতরের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জেলার আধিকারিকদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্স করেছেন। সেখানেই জেলাশাসকেরা এই তথ্য তুলে ধরেছেন। মঙ্গলবার পর্যন্ত মুর্শিদাবাদে আবেদন জমা পড়েছিল ২ লক্ষ ২৯ হাজার। বুধবার সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সাড়ে তিন লক্ষে।

Advertisement

মুর্শিদাবাদের জেলা খাদ্য নিয়ামক মহম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘রেশন কার্ডের আবেদন গ্রহণে রাজ্যের শীর্ষে রয়েছে আমাদের জেলা। সাড়ে তিন লক্ষ রেশন কার্ডের জন্য যে আবেদন এসেছে তার মধ্যে ১ লক্ষ ৫৭ হাজার নাম, ঠিকানা সংশোধনের জন্য।’’

জেলা প্রশাসন ও খাদ্য দফতর স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, ভোটার তথ্য যাচাই বা রেশন কার্ডের সঙ্গে এনআরসি-র (নাগরিক পঞ্জি) কোনও সম্পর্ক নেই। কিন্তু তাতেও আতঙ্ক কাটছে না। সীমান্তের এই জেলার বাসিন্দাদের একাংশ জানাচ্ছেন, এনআরসি না হলেই ভাল। কিন্তু এনআরসি হলে নথি কোথায় মিলবে? তাই ঘর গোছাতে যা পাচ্ছেন তা-ই জোগাড় করতে ঝাঁপিয়ে পড়ছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভয় কাটাতে লোকজনকে সচেতন করা হচ্ছে। তার পরেও এনআরসি আতঙ্ক কাটছে না।

Advertisement

রেশন কার্ডের জন্য ব্লকে ব্লকে ৯ সেপ্টেম্বর থেকে আবেদন গ্রহণ শুরু হয়েছে। চলবে ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। জেলায় সাড়ে তিন লক্ষ ফর্ম ছাপিয়েছিল খাদ্য দফতর। কিন্তু সেই ফর্ম শেষ হতেই আরও সাড়ে তিন লক্ষ ফর্ম ছাপানো হয়েছে। জেলা খাদ্য দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘খাদ্যসুরক্ষা যোজনা ১ রেশন কার্ডে ভর্তুকিতে খাদ্যসামগ্রী পাওয়া যায়। তাই আমরা ভেবেছিলাম খাদ্য সুরক্ষা যোজনা ২ থেকে খাদ্যসুরক্ষা ১ নম্বরে বদলি করার জন্য আবেদন সব থেকে বেশি আসবে। কিন্তু আমরা দেখলাম সাড়ে তিন লক্ষ আবেদনকারীর মধ্যে মাত্র সাড়ে চার হাজার খাদ্য সুরক্ষা যোজনা ২ থেকে খাদ্য সুরক্ষা যোজনা-১ এ বদলির আবেদন করেছেন।’’

খাদ্য দফতরের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, মুর্শিদাবাদে সবচেয়ে বেশি আবেদন জমা পড়েছে ৫ নম্বর ফর্মে। ওই ফর্মে নাম, ঠিকানা, বয়স সংশোধন করা যায়। সাড়ে তিন লক্ষ আবেদনের মধ্যে ১ লক্ষ ৫৭ হাজার নাম, ঠিকানা, বয়স পরিবর্তনের আবেদন করেছেন। এর পরেই রয়েছে ৪ নম্বর ফর্ম। সেখানে ১ লক্ষ ৫০ হাজার আবেদন জমা পড়ে‌ছে। পরিবারের কিছু লোক কার্ড পেয়েছেন, কিছু লোক কার্ড পাননি— এমন হলে চার নম্বর ফর্ম পূরণ করে জমা দিতে হয়। এই তথ্য বলছে, আবেদনকারীদের একটা বড় অংশ এনআরসি আতঙ্কে নথি সংগ্রহে রাখতে এমন আবেদন করছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন