জমিদাতা তিন ভাই। নিজস্ব চিত্র
ফের সম্প্রীতির নজির গড়ল তেহট্ট। মাস দুয়েক আগে তেহট্টের প্রতাপনগরে ইদগাহে যাওয়ার রাস্তার জন্য জমি দিয়েছিল দুই হিন্দু ভাই। এ বার তেহট্টের সাহেবনগরে বিশালাক্ষী মন্দির গড়তে জমি দিলেন তিন মুসলিম ভাই।
বহু পুরনো ঠাকুরের থান হলেও কোনও স্থায়ী মন্দির ছিল না। মন্দির গড়তে দরকার ছিল এক চিলতে জমি। সেই জমি দিলেন ইসমাইল মণ্ডল, আদম মণ্ডল ও হারান আলি মণ্ডল। তাঁদের দানের জমিতে গড়া হবে বিশালাক্ষী মন্দির।
স্থায়ী মন্দির না থাকায় সমস্যা যে হচ্ছে সে কথা জানতেন তিন ভাই। ছোট থেকেই দেখে আসছেন। তাই তিন ভাই-ই মনস্থির করেন, মন্দির গড়তে জমি দেবেন। নিজেরাই বিশালাক্ষীতলার পুজো কমিটির কাছে সেই প্রস্তাব দেন। মন্দির কমিটির সম্মতি পেয়ে জমির দানপত্র করে দেন তাঁরা।
ফি বছর পুজো বসে। প্রতি অগ্রহায়ণ মাসে বিশালাক্ষীতলায় উৎসব হয়। মেলা হয়। প্রচুর লোক আসে। উৎসবে যোগ দেন উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ। কিন্তু এত লোকের সমাগম হলেও মন্দির বলতে একটি কুলগাছের নীচে অনেক পুরানো ভাঙাচোরা বেদি। সেখানেই চলে পুজোপাঠ। তিন ভাই জমি দেওয়ায় সেখানে গড়া হবে মন্দির। মন্দির কমিটির দাবি, ইতিমধ্যেই মন্দির গড়ার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। ইসমাইলের ছেলে লতিবউদ্দিন বলেন, “ছোটবেলা থেকে আমাদের জমিতে পুজো হতে দেখে এসেছি। পুজোর দিনে হিন্দু মুসলিম সকলেই প্রসাদ খান। বেশ কিছুদিন আগে বাবা ও কাকারা মন্দির তৈরির জন্য এই জায়গা দান করবে বলে মনস্থির করেন।’’ তিনি জানান, দানের জমিতে মন্দির তৈরি হওয়ায় তাঁরা খুশি। পুজো কমিটির সম্পাদক ভক্তরাম বিশ্বাস জানান, তিন ভাই ওই জমি দান না করলে মন্দির হত না। তিনি বলেন, ‘‘তাঁরাও পুজোয় যোগ দিয়েছেন। পুজো কমিটির সদস্য হয়েছেন।’’ স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, এখানে পুজো বা ইদে সকল সম্প্রদায়ের মানুষ আনন্দ করে। মাস দুয়েক আগে তেহট্টের প্রতাপনগরে ইদগাহে যাওয়ার রাস্তার জন্য হিন্দু দুই ভাই জমিদান করেন। সম্প্রীতির এমন উদাহরণ এখানে খুব নতুন নয়।