শোকার্ত পরিজন। —নিজস্ব চিত্র।
জমি নিয়ে বিবাদ। শনিবার তার জেরে কোথাও ভরা বাজারে ভাগ্নের হাতে খুন হলেন মামা। কোথাও বোমার ঘায়ে জখম হল পাঁচ জন।
এ দিন দুপুরে ডোমকলের কুচিয়ামোড়া গ্রামে জমি নিয়ে এক পুরনো বিবাদ ফের মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। শুরু হয় বোমাবাজি। জখম হয় পাঁচ জন। বিকেলে সালারের দিনবাজারে প্রথমে বোমা মেরে ও পরে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মোক্তার শেখ (৫৮) নামে এক ব্যক্তিকে খুন করে নিহতের ভাগ্নে ও তার দলবল। ভোটপর্ব মিটতে না মিটতে এমন ঘটনায় স্বভাবতই মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয় লোকজন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সালার বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন একটি জমি দখলকে কেন্দ্র করে বছর সাতেক আগে মামা মোক্তার শেখের সঙ্গে ভাগ্নের রতন শেখের সম্পর্কে চিড় ধরে। জমিটি সালারের শেখপাড়ার বাসিন্দা মোক্তারের দখলে ছিল। পরে জমিটি ভাগ্নে রতন শেখ ওরফে কালু জবরদখল করে নেয়। সেই থেকে বিবাদ শুরু। বিধানসভা ভোটের আগে ওই জমিতে একটি ভবন তৈরির কাজ শুরু করে রতন। মোক্তার বাধা দিতে গেলে দু’পক্ষের মধ্যে মারামারি শুরু হয়। একে অপরকে বোমাবাজি ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ভয় দেখায় বলে অভিযোগ। এ দিন বিকেলে সালার দিনবাজারের কাছে মোক্তার দাঁড়িয়ে ছিলেন। অভিযোগ, সেই সময় রতন ও তার ভাই জালু শেখ, ভাগ্নে মোহন শেখ মোক্তারকে লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ে। বোমার ঘায়ে মোক্তার মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তাতেও রেহাই মেলেনি। বাজারের এক লোহার দোকান থেকে একটি ধারাল অস্ত্র এনে মোক্তারের গলায় কোপ বসায় রতন। তারপর বোমা ফাটাতে ফাটাতে এলাকা ছাড়ে। ভরা বাজারে প্রকাশ্যে এ ভাবে খুনের ঘটনায় হকচকিয়ে যান মানুষ। আতঙ্কে দ্রুত বাজার জনশূন্য হয়ে যায়।
সালার থানায় মোক্তারের ভাই টগর শেখ বলেন, “ভাগ্নেরা দাদাকে পরিকল্পিত ভাবে খুন করেছে। জমি নিয়ে অশান্তি হচ্ছিল ঠিকই কিন্তু দাদাকে ওরা এ ভাবে খুন করবে ভাবিনি।”
পুলিশ অবশ্য এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। জেলার পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, “পারিবারিক বিবাদের জেরে ওই খুন বলেই মনে হচ্ছে। ওই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।”
এ দিকে, বিঘা ছয়েক জমি নিয়ে গ্রামের জামালুদ্দিন ও বাসারুদ্দিন মণ্ডলের পরিবাবের মধ্যে দীর্ঘদিনের গন্ডগোল। আদালতে তা নিয়ে মামলাও চলছে। এ দিন ফের ওই জমি নিয়ে গণ্ডগোল শুরু হয়। প্রথমে দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। পরে বোমাবাজি চলে। ঘটনায় দু’পক্ষের পাঁচ জন জখম হয়। তাদের মধ্যে এক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। ডোমকল মহকুমা হাসপাতালে বাকিদের চিকিৎসা চলছে। ঘটনার পর দু’পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে এ দিন সন্ধ্যা পযর্ন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।