বিন্দু সেচে সিন্ধু লাভের আশায় চাষি

কখনও অনাবৃষ্টি আবার কখনও বা ফসলের মরসুমে বিদ্যুৎ সঙ্কট। আর এ সবের ফলে সেচের অভাবে মার খায় ফলন। আর দিন দিন লাগাতার ভূর্গভস্থ জল তোলায় নামছে জলস্তর। এ বার জলের অপচয়ে রোধে মুর্শিদাবাদে বিন্দু সেচ পদ্ধতি ব্যবহার করতে চাইছে জেলা কৃষি দফতর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৭ ০১:৪৬
Share:

কখনও অনাবৃষ্টি আবার কখনও বা ফসলের মরসুমে বিদ্যুৎ সঙ্কট। আর এ সবের ফলে সেচের অভাবে মার খায় ফলন। আর দিন দিন লাগাতার ভূর্গভস্থ জল তোলায় নামছে জলস্তর। এ বার জলের অপচয়ে রোধে মুর্শিদাবাদে বিন্দু সেচ পদ্ধতি ব্যবহার করতে চাইছে জেলা কৃষি দফতর।

Advertisement

ইতিমধ্যেই জেলার সুতি১, রঘুনাথগঞ্জ-২, মুর্শিদাবাদ-জিয়াগঞ্জ ও বহরমপুর— এই চারটি ব্লকের ১০০ হেক্টর জমিতে বিন্দু সেচের মাধ্যমে চাষ হবে। প্রাথমিক ভাবে প্রায় আড়াইশো জন চাষিকে এর আওতায় আনা হয়েছে। কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রক ‘কৃষি সিচাই যোজনা’ প্রকল্পে চাষিদের খরচের ২৫ শতাংশ অনুদান নেবে। সব্জি, ছোট ফলের বাগান, শ্রী পদ্ধতিতে লাগানো ধানে বিঘে প্রতি প্রায় ২৫ হাজার টাকা খরচ করে প্রায় ৫ বছর এ ভাবে সেচ দেওয়া যাবে।

শুক্রবার ‘বিন্দু সেচ পদ্ধতি’র সাফল্য হাতেকলমে চাষিদের বোঝাতে সুতি-১ ব্লকের সুজনিপাড়া ও বহুতালি গ্রামে প্রশিক্ষণ দিল কৃষি দফতরের কর্তারা। ব্লকের সহকারি কৃষি অধিকর্তা প্রতাপ সিংহ বলেন, “জল সঙ্কট বাড়ছে। তাই চাষে জলের ব্যবহার কমিয়ে “বিন্দু সেচ পদ্ধতি’তে কী ভাবে ফলন বাড়ানো যায় চাষিদের তা হাতে কলমে দেখানো হয়েছে এ দিন।” ব্লকের সহকারি টেকনোলজি ম্যানেজার নিলাদ্রী লোধ জানান, এই পদ্ধতিতে সেচ দিলে ৭৫ শতাংশ জলের ব্যবহার কমানো যাবে। তাছাড়া আগাছা, ছত্রাকের বাড়বাড়ন্ত ঠেকানো যাবে। কী ভাবে সেচ দেওয়া হবে? একটি জলের ট্যাঙ্কের সঙ্গে পাইপ দিয়ে ফিল্টার লাগিয়ে জল পাঠানো হয় মূল পাইপে। তার সঙ্গে নির্দিষ্ট দূরত্ব রেখে একাধিক পাইপ সমান্তরাল ভাবে জমির শেষ প্রান্ত পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হবে। এই সমান্তরাল পাইপগুলিতে রয়েছে ৩০ থেকে ৪০ সেন্টিমিটার অন্তর ছোট ছোট ছিদ্র। ওই ছিদ্র দিয়ে জল বার হয়ে তা পৌঁছে যাবে গাছের শিকড়ের গভীরে। এতে অহেতুক জলের অপচয় হবে না। তাছাড়া অতিরিক্ত জলে বেড়ে ওঠে আগাছা। এই পদ্ধতিতে আগাছার বাড়বাড়ন্ত দেখা যাবে না।

Advertisement

এলাকার চাষি কাঞ্চনকুমার দাস বলছেন, “এর ফলে সেচের জন্য সামান্য জল লাগছে। এছাড়া পাইপের জলে সার মিশিয়ে তা জমিতে দেওয়া যাচ্ছে। এতে কীটনাশক ছড়ানোর জন্য কোনও মজুরি লাগছে না।’’ জেলার উপ কৃষি অধিকর্তা তাপস কুণ্ডু বলেন, “জেলার ৪টি ব্লকে এই পদ্ধতি চালু করা হচ্ছে। সেচের খরচ কমবে। জল বাহিত ভাইরাস ছড়ানোর সম্ভাবনাও হ্রাস পাবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন