নবরত্নের লক্ষ্য এ বার স্বপ্নপূরণ

মাদ্রাসা শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মাদ্রাসা পরীক্ষায় ৭৭১ নম্বর পেয়ে রাজ্যে প্রথম হয়েছে নওদার ত্রিমোহিনী হাই মাদ্রাসার ছাত্র সাইনুল হক। সে ৯৬.৩৮ শতাংশ নম্বর পেয়েছে। দরিদ্র পরিবারের সাইনুল রাজ্যে প্রথম হওয়ায় উচ্ছ্বসিত ত্রিমোহিনী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর ও বেলডাঙা শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৯ ০২:৫০
Share:

মাদ্রাসা পরীক্ষায় রাজ্যের শীর্ষে জায়গা করে নিল মুর্শিদাবাদ। রাজ্যের প্রথম দশে থাকা কুড়ি জনের মধ্যে ন’জন পড়ুয়াই এই জেলার। প্রথম, তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম (দু’জন), সপ্তম (দু’জন), নবম ও দশম স্থান দখল করেছে মুর্শিদাবাদ। এমনকি ফাজিল পরীক্ষায় (উচ্চ মাধ্যমিক সমতুল) রাজ্যে পঞ্চম স্থান দখল করেছে জেলার এক ছাত্রী।

Advertisement

মাদ্রাসা শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মাদ্রাসা পরীক্ষায় ৭৭১ নম্বর পেয়ে রাজ্যে প্রথম হয়েছে নওদার ত্রিমোহিনী হাই মাদ্রাসার ছাত্র সাইনুল হক। সে ৯৬.৩৮ শতাংশ নম্বর পেয়েছে। দরিদ্র পরিবারের সাইনুল রাজ্যে প্রথম হওয়ায় উচ্ছ্বসিত ত্রিমোহিনী। মাদ্রাসার বাংলার শিক্ষক মাসুদ নাস্তুর বলছেন, ‘‘সাইনুল পড়াশোনায় খুবই ভাল। ভেবেছিলাম, ওর জন্য আমাদের মাদ্রাসা রাজ্যে ভাল জায়গা পাবে। তবে ও যে একেবারে প্রথম হয়ে যাবে, ভাবতে পারিনি। খুবই ভাল লাগছে। সাইনুল আমাদের গর্ব।’’

বেলডাঙার দেবকুণ্ড হাইমাদ্রাসার ছাত্রী তাবাসুম সিদ্দিকি ৭৫৬ নম্বর পেয়ে রাজ্যে তৃতীয় স্থান পেয়েছে। সে ৯৪.৫০ শতাংশ নম্বর পেয়েছে। মা নিলুফার জেসমিন আনসারি আশাকর্মী। তিনি জানিয়েছেন, তাবাসুম তিন জন গৃহশিক্ষকের কাছে পড়ত। বিজ্ঞান নিয়ে আল আমিন মিশনে লেখাপড়ার ইচ্ছে রয়েছে তাবাসুমের। দিনে ৮-১০ ঘণ্টা পড়াশোনা করেছে। অবসর কাটত ছবি এঁকে আর টিভি দেখে।

Advertisement

বেলডাঙার দেবকুণ্ড হাই মাদ্রাসার মাদ্রাসার ছাত্র মহম্মদ তৌফিক রেজওয়ানও ৭৫৫ নম্বর পেয়ে রাজ্যে চতুর্থ হয়েছে। তৌফিক চিকিৎসক হতে চায়। চার জন গৃহশিক্ষকের কাছে পড়ত। দিনে প্রায় দশ ঘণ্টা লেখাপড়া করত সে। তৌফিক সময় পেলেই গাছগাছালির পরিচর্যা করে।

রানিনগরের রামনগর হাই মাদ্রাসার ছাত্র মহম্মদ মেহেদি হাসান সিরাজ ৭৫৪ নম্বর পেয়ে রাজ্যে পঞ্চম হয়েছে। মেহেদি ভবিষ্যতে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়। ভাবতা আজিজিয়া হাই মাদ্রাসার ছাত্র মহম্মদ কাইফ আলিও ৭৫৪ নম্বর পেয়ে পঞ্চম হয়েছে। স্কুল থেকে কিছুটা দূরে মহেশপুরে তার বাড়ি। বাবা ঠিকাদার। ছোট থেকে গণিত ও ইংরেজি তার প্রিয় বিষয়। চার জন গৃহশিক্ষকের কাছে পড়ত সে। বাড়িতে প্রায় আট ঘণ্টা লেখাপড়া নিয়েই থাকত। ভবিষ্যতে সে আইপিএস হতে চায়।

কাজিসাহা হাই মাদ্রাসার ছাত্রী রানিফা খাতুন ও ভাবতা আজিজিয়া হাই মাদ্রাসার ছাত্র সাহিম মহম্মদ ৭৪৯ নম্বর পেয়ে রাজ্যে যুগ্ম ভাবে সপ্তম হয়েছে। রানিফা বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করে ভবিষ্যতে শিক্ষক হতে চায়। সাহিম ঘড়ি-ঘণ্টা ধরে পড়ত না। সমস্ত বিষয়ে টিউশন নিত সে। সাহিম জানিয়েছে, তার বাবা শিক্ষক। বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করে ভবিষ্যতে সে-ও অধ্যাপক হতে চায়।

৭৪৭ নম্বর পেয়ে আমিরাবাদ হাই মাদ্রাসার ছাত্রী রাজিয়া সুলতানা নবম হয়েছে। এ ছাড়া ৭৪৬ নম্বর পেয়ে ভাবতা আজিজিয়া হাইমাদ্রাসার ছাত্রী মোসাম্মত নাফিসা খাতুন দশম স্থান অধিকার করেছে। সে-ও চারটি বিষয়ে টিউশন নিত। দিনে ৮-১০ ঘণ্টা লেখাপড়া করত। নাফিসা জানিয়েছে, সে ভবিষ্যতে চিকিৎসক হতে চায়।

অন্য দিকে মাদ্রাসা আলিয়া অনন্তপুর সিনিয়র মাদ্রাসার ছাত্রী রাশিদা খাতুন ফাজিল পরীক্ষায় ৫৩০ নম্বর পেয়ে রাজ্যে পঞ্চম হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন