গাঁধীজয়ন্তীতে অভুক্ত শিশু, প্রসূতিরাও

ছুটি না থাকলেও মঙ্গলবার বন্ধ রাখা হল তেহট্ট মহকুমার বহু অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। সকালের পুষ্টিকর খাবার থেকে বঞ্চিত হল শিশু এবং গর্ভবতী মায়েরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

করিমপুর শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৮ ০০:২৩
Share:

বন্ধ অঙ্গনওয়াড়ি। —নিজস্ব চিত্র।

ছুটি না থাকলেও মঙ্গলবার বন্ধ রাখা হল তেহট্ট মহকুমার বহু অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। সকালের পুষ্টিকর খাবার থেকে বঞ্চিত হল শিশু এবং গর্ভবতী মায়েরা।

Advertisement

এ দিন এলাকার মানুষের অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার মহাত্মা গাঁধীর জন্মদিবস উপলক্ষে ছুটি থাকলেও সরকারি নিয়ম অনুযায়ী অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র খোলা রাখার কথা। কিন্তু মহকুমার বেশির ভাগ কেন্দ্র, বিশেষ করে, তেহট্ট ১ ব্লক ও করিমপুর ২ ব্লকের কেন্দ্রে এ দিন রান্না বন্ধ ছিল। কর্মী থেকে সহায়িকারা এ দিন কেন্দ্রে না আসায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের তালা খোলেনি। যে কারণে পুষ্টিকর খাবার পায়নি ওই সব এলাকার শিশু ও গর্ভবতী মায়েরা।

আইসিডিএস প্রোজেক্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার বাদ দিয়ে বছরের ১৪ দিন প্রোজেক্টের তালিকা অনুযায়ী, ছুটি থাকার কথা। যেমন ২৬ জানুয়ারি, ইদুজ্জোহা, ঈদুলফিতর, মহরম, সপ্তমী থেকে দশমী পর্যন্ত দুর্গা পুজোর চার দিন, কালী পুজো, সরস্বতী পুজো, ১৫ অগস্ট, ২৫ ডিসেম্বর, দোল উৎসব ও পয়লা বৈশাখ। এই ছুটির বাইরে বছরের অন্য সব দিন কেন্দ্র খুলে রাখার কথা। সেই কারণেই গাঁধীজির জন্মদিনেও সেন্টার খুলে রাখার কথা ছিল। অবশ্য কার্যক্ষেত্রে তা হয়নি।

Advertisement

এলাকার বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গিয়েছে, তেহট্ট ১ ব্লকের ছিটকা পঞ্চায়েত, বেতাই ১ ও ২ গ্রাম পঞ্চায়েত ও করিমপুর ২ ব্লকের বেশ কয়েকটি কেন্দ্র এ দিন বন্ধ ছিল। নাজিরপুর পালপাড়ার ২৬৫ নম্বর কেন্দ্রের কর্মী সুচিত্রা রায় সরকার বলেন, ‘‘এদিন গাঁধীজির জন্মদিন উপলক্ষে সরকারি ছুটি থাকার কারণে আমার সেন্টারটি বন্ধ ছিল।’’

একই ভাবে তেহট্টের খাঁ পাড়ার কেন্দ্রের সহায়িকা নাসিমা বিবি বলেন, ‘‘আমাদের কেন্দ্রের দিদিমণি অর্থাৎ, কর্মী সেন্টারে না আসার কারণে কেন্দ্রটি বন্ধ ছিল। তাই কোনও রান্না করা যায়নি।’’

এলাকার বাসিন্দা জামাল শেখের অভিযোগ, কোন দিন বন্ধ ও কোন দিন কেন্দ্র খোলা থাকবে, সেই ছুটির তালিকা এলাকার মানুষের জানা নেই। তবে দিন কে দিন এলাকার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের খাবার ও শিক্ষার মান কমেছে। তাঁর মত, এ বিষয়ে প্রশাসনের নজর দেওয়া উচিত।

যদিও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী ও সহায়িকাদের দাবি, জাতির জনকের জন্মদিনে গোটা দেশের বেশির ভাগ সরকারি দফতরই ছুটি থাকে। তা হলে তাঁরা কেন ওই ছুটি পাবেন না! তাঁরা এ-ও দাবি করেন, এই ধরনের সরকারি ছুটির দিনে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই শিশু ও গর্ভবতী মায়েরা সেন্টার বন্ধ থাকবে ভেবে কেন্দ্রে আসেন না। যে কারণে এর আগেও রান্না করে খাবার নষ্ট হয়েছে।

তেহট্ট ১ ও করিমপুর ব্লকের আইসিডিএস প্রোজেক্ট এর দায়িত্বে থাকা সিডিপিও মুকুল মিস্ত্রী জানান, গাঁধীর জন্মদিনে আইসিডিএস কেন্দ্র বন্ধ রাখার কথা নয়। কিন্তু করিমপুর ২ ব্লকে কিছু কেন্দ্র বন্ধ থাকার খবর পেয়েছেন। ইতিমধ্যেই সেই কেন্দ্রের কর্মীদের চিঠি দিয়ে জবাবদিহি চাওয়া হয়েছে। অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন