মিতার মৃত্যুতে ধরা পড়েনি কেউ

একটু বেশি রাত থেকেই থমথমে হরিহরপাড়ার নিশ্চিন্তপুর। শুক্রবারও থমথমে ওই এলাকায় পুলিশ বাহিনী টহল দিয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে স্থানীয় লোকজন চড়াও হয় হরিহরপাড়া থানার পুলিশের উপর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হরিহরপাড়া শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৭ ০১:৪২
Share:

একটু বেশি রাত থেকেই থমথমে হরিহরপাড়ার নিশ্চিন্তপুর। শুক্রবারও থমথমে ওই এলাকায় পুলিশ বাহিনী টহল দিয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে স্থানীয় লোকজন চড়াও হয় হরিহরপাড়া থানার পুলিশের উপর। সেই অভিযোগে পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে। কিন্তু পুলিশ নাবালিকার আত্মহত্যায় প্ররোচনায় অভিযুক্তদের এখনও ধরতে পারেনি।

Advertisement

এক নাবালিকার দিনকয়েক আগে বিয়ে হয়। অভিযোগ, পণের দাবিতে মারধর করা হয় ওই নাবালিকাকে। তার গায়ে কালসিটেও পরে যায়। অপমানে অভিমানে আত্মঘাতী হয় হরিহরপাড়ার প্রদীপডাঙার দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী মিতা খাতুন (১৭)। বৃহস্পতিবার তার দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তারপর গ্রামের মানুষ ও মিতার আত্মীয়েরা থানায় যান অভিযোগ জানাতে। মৃতের বাড়ির লোকের অভিযোগ, থানায় পা দিতেই এক পুলিশকর্মী তাঁদের জানান, বর ও তাঁর পরিবারের লোকজন নির্দোষ। গ্রামে সে কথা দুপুর থেকেই রটে যায়। পরে পুলিশ আত্মহত্যার প্ররোচনা অভিযোগ নেয়। পাত্র বাহাদুর মোল্লা ও তার পরিবারের দু’জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ হয়।

কিন্তু পুলিশ কেন অপরাধীদরে ধরছে না এই অভিযোগ তুলে মৃতের গ্রাম প্রদীপডাঙা থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে দেহ আগলে শুরু হয় বহরমপুর-হরিহরপাড়া রাজ্য সড়ক অবরোধ। ঘণ্টা দুই অবরোধ চলার পর রাত ৮টা নাগাদ হরিহরপাড়ার এক এএসআই, ভিলেজ পুলিশ, সিভিক পুলিশ ও কনস্টেবল অবরোধ ওঠানোর চেষ্টা করেন। পুলিশ জোর করে বিক্ষোভ ওঠাতে গেলে গ্রামবাসীরা গাড়ি ভাঙচুর করে। পরে ভিলেজ পুলিশদের উপর চড়াও হয়। অনেক পুলিশকর্মী এ দিক সে দিক লুকিয়ে পড়েন। পরে পাশের থানা থেকে প্রায় ২৫০ জন পুলিশ কর্মী এলাকা ঘিরে ফেলে। তখন বিক্ষোভকারীদের উপর লাঠি চালায় পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, পুলিশের উপর আক্রমনের ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাহাদুর ও তার পরিবারের লোক পলাতক। তাদের সন্ধান চলছে। বিক্ষোভে উপস্থিত ছিলেন হরিহরপাড়া পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের বিলাসচন্দ্র মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘মিতার বাবা ও মা হিমাচলপ্রদেশে শ্রমিকের কাজ করেন। তারা পণের টাকা কোথায় পাবে। পুলিশের অভিযুক্তদের আড়াল করছে। তাদের শীঘ্রই ধরা হোক।’’

Advertisement

৪৮ ঘণ্টা কাটলেও কেন ধরা পরল না অভিযুক্তেরা? বাহাদুরের বাড়ি পাশের তাজপুর গ্রামে। সেখানে তার বাবা টারজান শেখ মুদির দোকান চালায়। টারজানের ভাইয়ের ছেলে লাল্টু শেখ হরিহরপাড়া থানায় সিভিক ভলান্টিয়ার। গ্রামবাসী ও মৃতার পরিবারের দাবি, লাল্টু প্রভাব খাটিয়ে বাহাদুর ও তার পরিবারকে আগলে রেখেছে। যদিও হরিহরপাড়া থানার পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তেরা শীঘ্রই ধরা পড়বে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন