COVID-19

কেন ফিরলেন পরিযায়ীরা, খোঁজ নেননি কেউ

জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিযায়ী শ্রমিক আছে ডোমকল মহকুমা এলাকায়। লকডাউনের সময় ডোমকল জুড়ে একটা হাহাকার তৈরি হয়েছিল ভিন রাজ্য থেকে ঘরে ফেরা নিয়ে।

Advertisement

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস

সাগরপাড়া  শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২১ ০৯:৫৭
Share:

প্রতীকী ছবি। ফাইল চিত্র

লকডাউনের সময় পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে রাজনীতির জলঘোলা কম হয়নি, পাশে আছি বোঝাতে কোনও রাজনৈতিক দলের নেতারা ফুল হাতে ছুটে গিয়েছেন স্টেশনে। কেউ আবার এগিয়ে দিয়েছেন জলের বোতল থেকে খাবার। কিন্তু তারপরে পদ্মা দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে, ঘরে ফিরে কাজ না পেয়ে আবারও ভিন রাজ্যের উদ্দেশে ফিরে গিয়েছে অনেক শ্রমিক। কিন্তু তাদের পরিবার কেমন আছে, বা ঘরে ফিরে কাজে না পাওয়া পরিযায়ী শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের ব্যাপারেও মাথা ঘামায়নি কোনও রাজনৈতিক দল। কেবল শাসক দল নয়, বিরোধী দলের নেতারাও আর ফিরে তাকায়নি তাদের দিকে। পরিযায়ী শ্রমিকদের দাবি, ‘‘সামনে ভোট। আবারও হয়তো আমাদের নিয়ে রাজনীতির খেলা হবে। কিন্তু আমাদের পেটে কী পড়বে তা নিয়ে মাথাব্যথা নেই কারও।’’

Advertisement

জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিযায়ী শ্রমিক আছে ডোমকল মহকুমা এলাকায়। লকডাউনের সময় ডোমকল জুড়ে একটা হাহাকার তৈরি হয়েছিল ভিন রাজ্য থেকে ঘরে ফেরা নিয়ে। অনেকেই সেখানে আটকে পড়েছিলেন দেখা দিয়েছিল খাবারের অভাব দুশ্চিন্তায় আত্মহত্যাও করেছিল ডোমকলের এক যুবক। তা ছাড়া কাজ হারিয়ে সেই সময়ে অসুস্থ হয়েও মৃত্যু হয়েছিল মহকুমার ২ পরিযায়ী শ্রমিকের। কিন্তু সেই সময়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ানোর একটা প্রতিযোগিতা দেখা দিয়েছিল রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে। বিভিন্ন ভাবে তাদের সাহায্য করা হয়েছিল। এমনকি, ঘরে ফেরার সময় তাদের স্বাগত জানানো থেকে খোঁজখবর নেওয়া সবটাই করেছিল রাজনৈতিক দলের নেতারা। বিশেষ করে এই জেলার আটকে থাকা শ্রমিকদের ফেরানো নিয়ে তৎপর ছিল কংগ্রেস। তারা আটকে থাকা শ্রমিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা থেকে তাদের ঘরে ফেরানোর নানা উদ্যোগ নেয় তাঁরা। অন্যদিকে কংগ্রেসকে টক্কর দিতে শ্রমিকদের ঘরে ফেরার সময় একেবারে ফুল হাতে স্টেশনে পৌঁছে গিয়েছিল শাসক দলের নেতারা।

যদিও শাসক দলের নেতাদের দাবি, দুয়ারে সরকার সহ একাধিক সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে পরিযায়ী শ্রমিক ছাড়াও সর্ব স্তরের মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে রাজ্য সরকার। ফলে আলাদা করে আর পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ানোর দরকার নেই। শাসক দলের এক নেতার দাবি, ‘‘বিরোধী দলগুলো রাজনীতির খেলা খেলতে গিয়েই আমাদের বিরুদ্ধে নানা সময়ে নানা অভিযোগ তুলছে।’’

Advertisement

জলঙ্গির বিধায়ক তৃণমূলের আব্দুর রাজ্জাক মণ্ডল বলছেন, ‘‘আমরা লোক দেখানোর জন্য কিছু করি না, লকডাউনের শুরু থেকেই পরিযায়ী শ্রমিক এবং সাধারণ দরিদ্র মানুষের পাশে আছি। নানাভাবে তাঁদের সাহায্য করেছি, এলাকার মানুষ জানে আমরা কতটা পাশে দাঁড়িয়েছি তাদের।’’

যদিও বিরোধীদের দাবি, তৃণমূল বিধায়ক কতটা পরিযায়ী শ্রমিকের পাশে আছে সেটা তার পাশের গ্রাম মালোপাড়ার ২ পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনা থেকেই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। এমন মর্মান্তিক ঘটনার পরও পরিযায়ী শ্রমিকের পরিবারে পা পড়েনি শাসক দলের ওই নেতাদের। আর কংগ্রেস নেতা আবদুর রাজ্জাক মোল্লা বলছেন, ‘‘আমরা লকডাউনের শুরু থেকেই পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশে ছিলাম, এখনও আছি, আগামী দিনেও থাকব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন