ভেজাল ঘি, নকল কালো জিরের ধরা পড়েছে আগেই। এ বার সেই নকলের তালিকায় ঠাঁই নিল পুদিনহারাও। পুলিশ নকল পুদিনহারা কারখানার মালিক সাধন মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছে।
নদিয়ায় এ ভাবে একের পর এক নকল ও ভেজাল খাদ্য দ্রব্যের হদিস মেলায় কপালে ভাঁজ পড়তে শুরু করেছে প্রশাসন থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের। মাস কয়েক আগে নদিয়া জেলার ফুলিয়াতে প্রথম ভেজাল ঘিয়ের সন্ধান মেলে। ইবির তদন্তকারীরা এসে একাধিক ভেজাল ঘিয়ের কারখানায় হানা দেন। সেই সময়ে চক্রের পাণ্ডারাও ধরা পড়ে। কয়েকদিনের মধ্যে সিআইডি হানা দেয় গোবিন্দপুর এলাকায় ভেজাল সর্ষের তেল তৈরির কারখানায়।
এ ভাবে একের পর এক ভেজাল খাদ্য দ্রব্যের কারখানার হদিস মেলার পরে এ বার নকল পুদিনহারা তৈরির কারখানা উদ্ধার হওয়ায় কার্যত দিশেহারা অবস্থা প্রশাসনের। বৃহস্পতিবার বিকেলে পুদিনহারা প্রস্তুতকারক একটি সংস্থার প্রতিনিধিরা হাঁসখালি থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে হানা দেন হাঁসখালি থানার ভাগারচর এলাকায় সাধন মণ্ডলের বাড়িতে। সেখান থেকে প্রচুর পরিমানে নকল পুদিনহারা উদ্ধার হয়। উদ্ধার হয় নকল পুদিনহারা তৈরির উপকরণ ও যন্ত্রপাতি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কিছু দিন ধরেই ওই ব্যক্তি নিজের বাড়িতে নকল পুদিনহারা বানাচ্ছিলেন। বাজারে এমন কিছু নমুনা চলে আসে এই সংস্থার হাতে। তারা নিজেদের মতো করে খোঁজ-খবর করতেই সাধন মণ্ডলের কথা জানতে পারেন। সেই মতো এ দিন তাঁরা প্রথমে হাঁসখালি থানার পুলিশকে গোটা বিষয়টি জানান। তারপর পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে তাঁরা হানা দেন সাধন মণ্ডলের বাড়িতে।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, ভাগারচর হাঁসখালির অন্যতম প্রত্যন্ত এলাকা। ফলে এই গ্রামে নকল পুদিনহারা তৈরি করলে সাধারণ মানুষের নজরে পড়ার কথা নয়। সেই সুযোগ নিয়ে ওই ব্যক্তি ঘরের ভিতরে রীতিমতো কাখানা বানিয়ে ফেলেন। বাইরে থেকে কোনও কিছুই বোঝার উপায় ছিল না গ্রামবাসীদের। তার তৈরি করা নকল পুদিনহারা বগুলা, রানাঘাট হয়ে ছড়িয়ে পড়ত রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায়। বিশেষ করে কলকাতার বাজারে। এ ভাবে একের পর এক নকল খাদ্য সামগ্রী তৈরির কারখানা উদ্ধার হওয়ায় প্রশ্নের মুখে পুলিশের ভূমিকা। থানার পাশাপাশি জেলার ইন্টিলিজেন্ট ব্রাঞ্চের লোকেরা কী করছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন ব্যবসায়ীদের অনেকেই। যদিও জেলার পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া বলেন, “সব সময়ই আমরা জেলায় এই বিষয়ে নজরদারি চালাচ্ছি। ধরা পড়ছে অনেকে।” তাও কী ভাবে একের পর এক এই ধরনের কারখানার সন্ধান মিলছে? এই প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি পুলিশ সুপার।