মাস চারেক আগেও খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের সময় ছবিটা ছিল অন্য রকম। পুরুষ-মহিলা আনুপাতিক হারেও রাজ্যের গড়ের থেকে পিছিয়ে ছিল নবাবের জেলা, মুর্শিদাবাদ। তখন থেকেই ‘পিছিয়ে পড়া’ তকমা ঘোচাতে উদ্যোগী হয়েছিল মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন। ভোটার তালিকায় নাম তোলার জন্য নিয়ে আসা হয়েছিল ‘গুটিপিসি’কে। গ্রামে-গঞ্জে, হাটে-বাজারে, স্কুল-কলেজে চারটি স্বল্প দৈর্ঘ্যের ভিডিয়োও দেখানো হয়। সে শিবির করে ভোটার তালিকায় নাম তোলার জন্য সচেতনও করা হয়। যার ফলে রাজ্যের গড়কে ছাপিয়ে গিয়েছে মুর্শিদাবাদ। এ বারে রাজ্যে যেখানে পুরুষ-মহিলা ভোটারের গড় আনুপাতিক হার ৯৪৯, সেখানে মুর্শিদাবাদ জেলার গড় আনুপাতিক হার হয়েছে ৯৫৮।
জেলা প্রশাসনের কর্তাদের দাবি, মহিলা ভোটার বৃদ্ধির ফলে পৃথিবীর বৃহত্তম গণতান্ত্রিক উৎসবে মহিলাদের যোগদান আরও বাড়ল। যদিও নতুন ভোটারদের অনেকেই বলছেন, ‘‘শুধু ভোটার তালিকায় নাম তুললেই হবে না। ভোটাররা যাতে ভোটদান করে বৃহত্তম গণতান্ত্রিক উৎসবে যোগ দিতে পারেন তার ব্যবস্থাও করতে হবে। তবেই ভোটার তালিকায় নাম তোলা সার্থক হবে।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বহরমপুর ও শমসেরগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে পুরুষ ভোটারদের থেকে এগিয়ে মহিলা ভোটাররা। বহরমপুরে ভোটার তালিকায় পুরুষ-মহিলার আনুপাতিক হার ১০২৩ এবং শমসেরগঞ্জে ভোটার তালিকায় পুরুষ-মহিলার আনুপাতিক হার ১০২০। তবে জেলায় পিছিয়ে রয়েছে রেজিনগর। সেখানে পুরুষ-মহিলার গড় অনুপাত ৯২৬।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোটার তালিকায় নাম তোলা নিয়ে জেলার মহিলাদের একাংশের নানা রকম ভুল ধারণা ছিল। আবার অনেকে মনে করতেন, মেয়ে তো বিয়ের পরে শ্বশুরবাড়ি চলে যাবে। সেখানেই ভোটার তালিকায় নাম তুলবে। এই ধরনের একাধিক বিষয় প্রশাসনের সামনে এসেছিল। তাই প্রশাসন বাসিন্দাদের সচেতন করতে নানা ভাবে প্রচারে নেমেছিল। বাড়ি বাড়ি সরকারি কর্মী, বুথ লেভেল আধিকারিকদের পাঠানো হয়েছিল। স্কুল কলেজের পড়ুয়াদেরও ভোটার তালিকায় নাম তোলার বিষয়ে সচেতন করা হয়। আর তার ফলও মিলল মাত্র চার মাসেই। পুরুষ-মহিলা ভোটারের আনুপাতিক হার বৃদ্ধিতে রাজ্যের শীর্ষে এখন নবাবের জেলাই।