West Bengal Municipal Election 2022

Taherpur: তাহেরপুর থানার ওসি ‘ক্লোজড’, সিপিএমের দাবি, তাদের পুরভোটে জেতাই এর কারণ

তাহেরপুর পুরসভার মোট ১৩টি ওয়ার্ড আছে। তার মধ্যে এ বার ৮টিতে জয় পেয়েছে সিপিএম। বাকি ৫টিতে জয়ী হয়েছে শাসকদল তৃণমূল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২২ ১২:৩৪
Share:

পুরভোটের ফল প্রকাশের পর ক্লোজ করা হয়েছে তাহেরপুর থানার ওসি অভিজিৎ বিশ্বাসকে। ফাইল চিত্র।

বুধবার রাতে নদিয়ার তাহেরপুর থানার ওসি অভিজিৎ বিশ্বাসকে ‘ক্লোজ’ করা হয়েছে। ঘটনাচক্রে, বুধবারেই রাজ্য জুড়ে পুরভোটের গণনাপর্ব শেষ হয়েছে। সেই ফলাফলে দেখা গিয়েছে, সারা রাজ্যে ১০৮টি পুরসভার মধ্যে ১০২টিতেই জিতেছে শাসক তৃণমূল। নদিয়ার তাহেরপুর এবং দার্জিলিং পুরসভায় জিতেছে যথাক্রমে সিপিএম এবং হামরো পার্টি।

Advertisement

সিপিএম-সহ বামপন্থীদের দাবি, তাহেরপুরে তাদের জয়ের কারণেই এলকার ওসি-কে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। যদিও শাসক তথা প্রশাসনিক শিবির ওই অভিযোগকে সটান উড়িয়ে দিয়েছে। তাদের বক্তব্য, এর সঙ্গে পুরভোটের কোনও সম্পর্ক নেই। পুরোটাই ‘রুটিন প্রশাসনিক প্রক্রিয়া’। বিরোধীরা অযথা এর সঙ্গে রাজনীতির যোগাযোগ টেনে আনছেন। তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘আমি বিষয়টা জানিই না। বিস্তারিত খোঁজ না-নিয়ে কিছু বলতে পারব না।’’

ঘটনাপ্রবাহ বলছে, বুধবার গণনাপর্ব শেষ হওয়ার পরে রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ তাঁকে ‘ক্লোজ’ করার সরকারি নির্দেশ এসে পৌঁছয় তাহেরপুরে ওসি অভিজিতের কাছে। তাঁর জায়গায় তাহেরপুরে আনা হয়েছে নদিয়ারই ধানতলা থানার ওসি অমিতোষ রায়কে।

Advertisement

অভিজিৎ এবং রানাঘাট পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে এই বিষয়ে তাঁরা কোনও মন্তব্য করতে চাননি। যদিও ঘটনার জেরে জেলা রাজনীতিতে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুমিত দে বলছেন, ‘‘ওই পুলিশ অফিসার বামেদের রুখতে পারেননি। সেই কারণেই তাঁকে শাস্তি পেতে হল।’’ রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারের কটাক্ষ, ‘‘তৃণমূল জমানায় ওসি, বিডিওরাই মূলত ব্লক সভাপতির দায়িত্ব পালন করে থাকেন। এ ক্ষেত্রে তাহেরপুরে তৃণমূলের পরাজয়ের দায় ওসিকেই নিতে হল!’’ যদিও সিপিএম এবং বিজেপি-র অভিযোগ মানতে চাননি তৃণমূলের রানাঘাটের সাংগঠনিক জেলার সভানেত্রী রত্না ঘোষ কর। তাঁর কথায়, ‘‘এটা একেবারেই প্রশাসনিক বিষয়। এর সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই।’’

এ বারের পুরভোটে রাজ্যে দক্ষিণবঙ্গের তাহেরপুরেই একমাত্র বামেরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং ছাড়া শুধু নদিয়ার এই শহরেই পুরভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে বিরোধীরা। নদিয়া জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, বছর তিনেক আগে তাহেরপুর থানার ওসি-র দায়িত্ব নিয়েছিলেন অভিজিৎ। কিন্তু বিধানসভা ভোটের আগে তাঁকে সরিয়ে বীননগর থানার ভারপ্রাপ্ত আইসি-কে তাহেরপুরের ওসি-র দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। আবার বিধানসভা ভোটের পরে তাহেরপুরে ফেরত আনা হয় অভিজিৎকে।

তাহেরপুর পুরসভার মোট ওয়ার্ডের সংখ্যা ১৩টি। তার মধ্যে এ বার ৮টিতে জয় পেয়েছে সিপিএম। বাকি ৫টিতে জয়ী হয়েছে শাসক তৃণমূল। যদিও গত বছর বিধানসভা ভোটের সময় ১৩টি ওয়ার্ডেই তৃতীয় স্থানে ছিলেন বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী। শহরের মধ্যে ৯টি ওয়ার্ডে তৃণমূল এবং ৪টি ওয়ার্ডে বিজেপি এগিয়ে ছিল। সেখানে এ বার বিজেপি-র ভোট অনেকটাই কমে গিয়েছে। তাহেরপুরে ২০১৫ সালেও জিতেছিল সিপিএম। সে অর্থে তারা সেই পুরসভার ‘দখল’ ধরে রেখেছে। কিন্তু দুই পুরভোটের মধ্যবর্তী সময়ে সিপিএম তথা বামপন্থীরা সেখানে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছিল। সেই বিষয়টিই টেনে এনে বামপন্থীরা তাহেরপুর পুরসভা জয়কে একটি ‘মাইলফলক’ বলে চিহ্নিত করতে চাইছেন। বুধবার ফলপ্রকাশের পর থেকে বিষয়টি নিয়ে নেটমাধ্যমে বিপুল উচ্ছ্বাসও প্রকাশ করা হচ্ছে। সেই কারণেই সিপিএমের দাবি, তাদের জয়ের কারণেই তাহেরপুরের ওসি-কে ‘ক্লোজ’ করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন