শোকস্তব্ধ: ভরতপুরের সাহাপুরে। ছবি: কৌশিক সাহা
দুই পরিবারের পুরনো বিবাদ। আর, তার জেরেই ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে মধ্য পঞ্চাশের এক ব্যক্তিকে। ঘটনাচক্রে যিনি তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যের নিকটআত্মীয়।
শনিবার সকালে, ভরতপুরের সাহাপুর গ্রামে সালেক শেখ (৫২) খুনের ঘটনায় দুই পরিবারের লড়াই অবশ্য ক্ষতবিক্ষত করেছে আরও অন্তত দশ জনকে। তাদের মধ্যে আর্জান শেখ ও তালুক শেখ নামে দু:জনকে শঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি করানো হয়েছে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। আহত হয়েছেন বেশ কয়েক জন মহিলাও। ঘটনার পর পুলিশ দশ জনকে আটক করেছে। তবে মূল অভিযুক্তেরা পলাতক।
এ দিন সকালে, তখনও কুয়াশার চাদরে মুড়ে আছে গোটা সাহাপুর। জমি সংক্রান্ত বিবাদের উত্তাপ ছড়ায় তখনই। পুলিশ জানায়, বছর পাঁচেক আগেও সালেক ছিল বাম সমর্থক। পরে দল বদলে সে এখন তৃণমূলের মাতব্বর বলেই পরিচিত।
দিন কয়েক আগে, সালেকের সঙ্গে অশান্তি শুরু হয় ধুলু মল্লিকের। বৃহস্পতিবার থেকে তা নিয়েই দু’পক্ষের হাতাহাতি শুরু হয়। তারই জেরে এ দিন সকালের হানাহানি।
এ দিন সকালে সালেক বাজার থেকে চা খেয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। রাস্তাতেই ধারাল অস্ত্র নিয়ে তাঁর উপরে চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। তার গলায়, পায়ে কোপ মারার ছোড়া হয় বোমাও। ঘটনাস্থলেই মারা যান সালেক।
এর পরেই গ্রাম রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তারই মধ্যে পুলিশের সামনে দিয়েই অভিযুক্তরা পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ। এমনকি গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যায় পঞ্চায়েত সদস্য আরজিনা বিবি ও তার স্বামী রাজা শেখ। মৃতের আত্মীয় সামাদ শেখ বলেন, “পরিকল্পিত ভাবে দাদাকে খুন করা হয়েছে। পঞ্চায়েত সদস্য আরজিনা বিবির শ্বশুর জাব্বার শেখ বাইরে থেকে সমাজবিরোধীদের গ্রামে নিয়ে এসে গ্রামকে অশান্ত করছে।”
জেলা তৃণমূলের সভাপতি সুব্রত সাহা বলেন, “ওরা সবাই তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। তবে সব ঘটনাই কি তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল বলে দেগে দিতে হবে? বিরোধীরা ঘোলা জলে মাছ ধরতে চাইছে।’’
জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ওই গ্রামে টহলদারি বাড়ানো হয়েছে। জেলার পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন, “ওই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ আছে বলে মনে হয়নি। পুরোন জমি সংক্রান্ত বিবাদকে কেন্দ্র করেই ঘটনাটি। পুলিশ দশ জনকে আটক করেছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।”