হাসপাতালে অবাধ ‘ওপিডি টুকটুক’

টোটো চালকেরা বলছেন বলছেন, ‘‘না, আমাদের সঙ্গে হাসপাতালের কোনও সম্পর্ক নেই। তবে টোটোর গায়ে এ সব লিখে রাখলে হাসপাতালে ঢুকতে কেউ বাধা দেয় না। সেই জন্যই নিজেরা খরচ করেই এই স্টিকার লাগিয়েছি।’’ 

Advertisement

ইন্দ্রাশিস বাগচী

বহরমপুর শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:৪৪
Share:

এরকমই ওপিডি লেখা টোটো ঘুরছে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে। —নিজস্ব চিত্র

কোনওটার সামনে লেখা, ‘ওপিডি’। কোনওটার গায়ে সাঁটানো ‘মাতৃমা’। প্রথমে দেখলে কিঞ্চিৎ হোঁচট খেতে হয়! মনে হবে বুঝি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই রোগী পরিষেবার জন্য এমন বন্দোবস্ত করেছেন। কিন্তু টোটো চালকেরা বলছেন বলছেন, ‘‘না, আমাদের সঙ্গে হাসপাতালের কোনও সম্পর্ক নেই। তবে টোটোর গায়ে এ সব লিখে রাখলে হাসপাতালে ঢুকতে কেউ বাধা দেয় না। সেই জন্যই নিজেরা খরচ করেই এই স্টিকার লাগিয়েছি।’’

Advertisement

অতএব বিনা বাধায় বহরমপুর দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ‘ওপিডি’ কিংবা ‘মাতৃমা’ টুকটুক। শহরের অনেকেই বলছেন,‘‘পুলিশ, অ্যাডভোকেট, প্রেস, আর্মি, এমনকি এক্স আর্মি লেখা গাড়িও দেখেছি। কিন্তু চলমান ওপিডি কিংবা মাতৃমা এই প্রথম বার দেখলাম।’’

এত দিন পর্যন্ত মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের মূল গেটের সামনেই দাঁড়িয়ে থাকত টোটো। যানজটে হয়রান হতেন রোগী ও রোগীর আত্মীয়েরা। শেষতক অবশ্য কড়া পদক্ষেপ করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও। মেডিক্যাল কলেজের মূল গেটের সামনে থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় টোটো। নিয়মের যাতে অন্যথা না হয় সেই কারণেই মূল গেটের সামনে মোতায়েন করা হয় সিভিক ভলান্টিয়ারও। তার পরে অবশ্য সেই চেনা চেহারায় বদল এসেছে।

Advertisement

টোটো চালকেরাও থেমে নেই। তাঁদের তৎপরতায় সাধারণ টোটো হয়ে গিয়েছে ‘ওপিডি টোটো’ কিংবা ‘মাতৃমা টোটো’। টোটো চালক বরুণ বিশ্বাস বলছেন, ‘‘এ ভাবে লেখা থাকলে আমাদের হাসপাতালের ভেতরে ঢুকতে কেউ বাধা দেয় না।’’ টোটো দৌরাত্ম্য রুখতে জেলা পুলিশ প্রশাসনের তরফে একাধিক জায়গায় টোটো চলাচলের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। টোটো চালকেরা বলছেন, ‘‘ওপিডি, মাতৃমা লেখা দেখে কেউই বাধা দেয় না।’’

এ ভাবেই মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে রয়েছে সব মিলিয়ে প্রায় ৬০টি টোটো রয়েছে। যার মধ্যে প্রায় ৫০টি ‘ওপিডি’ আর ১০টি ‘মাতৃমা’ টোটো। মেডিক্যাল কলেজের ওপিডি বিল্ডিংয়ের পাশের রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে স্টিকার লাগানো টোটো। রোগী নিয়ে সেটি চলে গেলে আর একটি টোটো সেখানে এসে দাঁড়ায়। টোটো চালক শ্যামল রায়ের দাবি, ‘‘এতে বহু রোগীর সুবিধা হয়। হাসপাতালের গেট থেকে আউটডোর পর্যন্ত অনেকেরই হেঁটে আসতে অসুবিধা হয়। কিন্তু আমরা একেবারে তাদের ওপিডি-র সামনে পৌঁছে দিই। একই ভাবে ডাক্তার দেখানোর পরেও তাঁদের বাড়ি পৌঁছে দিই।’’

কিন্তু টোটোর গায়ে কি এ ভাবে ‘ওপিডি’ বা ‘মাতৃমা’ লেখা যায়? টোটো চালকদের কাছে অবশ্য এ প্রশ্নের কোনও সদুত্তর নেই। আর মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, টোটো চালকদের এমন কোনও অনুমতি দেওয়া হয়নি। বিষয়টি তাঁরা খতিয়ে দেখবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন