শাসকদলের লোকজন বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাস চালাচ্ছে। পুলিশ প্রশাসনের একাংশও শাসক দলের হয়ে কাজ করছে। নির্বাচনী পর্যবেক্ষকদের সামনে এমনই অভিযোগ তুলল বিরোধী দলগুলি। বুধবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত কৃষ্ণনগরে জেলাশাসকের অফিসের সভাগৃহে সর্বদলীয় বৈঠক ছিল। সেখানে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের পাশাপাশি নির্বাচনি পর্যবেক্ষক হিসাবে আসা ন’জন আইএএস অফিসার ছিলেন। বৈঠকে সিপিএম থেকে শুরু করে কংগ্রেস, বিজেপি একযোগে শাসক দলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছে। সেই সঙ্গে তারা জানিয়েছে, পুলিশ প্রশাসনের একাংশ শাসক দলের হয়ে কাজ করছে।
সন্ত্রাসের বর্ণনা দিতে গিয়ে সিপিএম নেতৃত্ব এ দিন বৈঠকে বলেছেন, নির্বাচন ঘোষনার পর থেকে কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা এলাকায় শাসক দলের লোকজনের হাতে তাঁদের দলের নেতা-কর্মীরা আক্রান্ত হচ্ছেন। রানাঘাট উত্তর পূর্ব বিধানসভা এলাকায় এক বিজেপি সমর্থক শাসক দলের দুষ্কৃতীদের হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। অন্য দিকে, শাসক দলও সিপিএমের বিরুদ্ধে ফ্লেক্স ফেস্টুন ছিঁড়ে দেওয়া থেকে শুরু করে দেওয়াল লিখন মুছে দেওয়ার পাল্টা অভিযোগ জানিয়েছে। পর্যবেক্ষকেরাও সব দলের অভিযোগ লিখে নিয়েছেন বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। জেলাশাসক বিজয় ভারতী বলেন,“আমাদের কাছে যে সব অভিযোগ আসছে তার তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ দিনের সর্বদলীয় বৈঠকে যে সব অভিযোগ এসেছে তারও তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সিপিএমের পক্ষ থেকে সর্বদলীয় বৈঠকে অভিযোগ করা হয়েছে, নির্বাচনের দিন ঘোষণার পর থেকে কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা এলাকায় তাদের দলীয় কর্মী-সমর্থকদের উপরে লাগাতার হামলা চালাচ্ছে শাসক দলের লোকজন। হাঁসখালির কৈখালি এলাকায় দলীয় কর্মীদের উপরে হামলার পাশাপাশি রামনগর বড়চুপড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিএমের প্রধানকে মারধর ও কৃষ্ণগঞ্জের সিপিএম প্রার্থী মৃণাল বিশ্বাসকে আক্রমণ করার কথা তুলে ধরেছে সিপিএম। সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুমিত দে বলেন, “শাসক দল যে ভাবে এলাকায় সন্ত্রাস চালাচ্ছে সেই ঘটনা এ দিনের বৈঠকে তুলে ধরা হয়েছে। চাপড়া এলাকায় আমাদের দেড়শো কর্মী শাসক দলের সন্ত্রাসের কারণে প্রায় আড়াই বছর ধরে ঘরছাড়া রয়েছে, সে কথাও এ দিন জানিয়েছি।’’
জেলা বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ সরকার, জেলা কংগ্রেস নেতা পার্থ মুখোপাধ্যায়েরাও শাসক দলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস ও পুলিশ প্রশাসনের একাংশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছেন। এ দিনের বৈঠকে তৃণমূলের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ দীপক বসু। তিনি বৈঠকে জানান, বিরোধীরাই তাঁদের দলের ব্যানার, পোস্টার ছিঁড়ে দিচ্ছে।