প্রতীকী ছবি।
দশে দশ হল। শান্তিপুর ব্লকের দশটি গ্রাম পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় এল তৃণমূল। চার দশক পরে এমনকি নবলা পঞ্চায়েতেও বোর্ড গঠিত হল বামেদের বাদ দিয়েই।
কিন্তু এই বিপুল জয়েও ফুটে রইল কাঁটা। মঙ্গলবার নবলা পঞ্চায়েতে প্রধান মনোনীত হলেও উপপ্রধান পদের জন্য ভোটাভুটি হল শাসক দলের সদস্যদের মধ্যেই। সেখানে দলের প্রার্থী সুপ্রিয়া ঘোষকে হারিয়ে উপপ্রধান হলেন তৃণমূলেরই বিউটি সাহা। ভোটের পরে দলের ব্লক সভাপতির দিকেই আঙুল তুলেছেন অন্য শিবির।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে থেকেই শান্তিপুরে তৃণমূলের কোন্দল চলছিল। নির্বাচনে টিকিট না পেয়ে নির্দল হয়ে দাঁড়িয়ে যান একাধিক নেতা। যাঁদের মধ্যে অনেকেই প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য বা প্রধান। যে সব বিক্ষুব্ধ নেতা নির্দল হিসেবে দাঁড়িয়ে জিতেছিলেন, তাঁদের অনেকে ভোটের পরে তৃণমূলে দলে ফিরে যান। কিন্তু আরবান্দি ২ বা বেলগড়িয়া ১ পঞ্চায়েতে দলের প্রধান এবং উপপ্রধান নির্বাচনে ভোটাভুটি হয়। আরবান্দিতে হেরে যান দলীয় প্রার্থী। সদ্য দলে ফেরা নির্দলেরাই বোর্ড গঠন করেন।
চার দশকের বেশি ধরে শান্তিপুর ব্লকের নবলা পঞ্চায়েত ছিল বামেদের দখলে। এ বারের নির্বাচনে নবলার ২৭টি আসনের মধ্যে ১৯টিতে জয়ী হয় তৃণমূল, দু’টি করে আসনে জয়ী হয় সিপিএম এবং বিজেপি, চারটি আসনে জয়ী হন নির্দল প্রার্থীরা। ভোটের পরে চার নির্দল প্রার্থী তো বটেই, বিজেপি ও সিপিএম থেকেও এক জন করে সদস্য তৃণমূলে যোগ দেন। এ দিন ছিল পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন। সেখানে দলের তরফে প্রধান পদে প্রার্থী হিসাবে স্থির করা হয় সুদীপ প্রামাণিকের নাম। তিনি বিনা বাধায় মনোনীত হন। তবে গোল বাধে উপপ্রধান পদ নিয়ে। দলের একটি অংশের তরফে উপপ্রধান পদে স্থির করা হয়েছিল সুপ্রিয়া ঘোষের নাম। তিনি আবার বিধায়ক শঙ্কর সিংহের ঘনিষ্ঠ ফুলিয়ার তৃণমূল নেতা অসিত ঘোষের শিবিরের লোক। তাঁর বিরুদ্ধেই উপপ্রধান পদে প্রার্থী হয়ে যান বিউটি সাহা। ১৩-১২ ভোটে জিতে বিউটিই উপপ্রধান হয়েছেন।
দলের প্রার্থী হেরে যাওয়ার পরে অবশ্য ব্লক তৃণমূলের সভাপতির দিকেই তোপ দেগেছেন তৃণমূল নেতা অসিত ঘোষ। তাঁর আক্ষেপ, “দলের প্রার্থী ছিলেন সুপ্রিয়া ঘোষ। তাঁকে হারিয়ে দেওয়া হল। ব্লক সভাপতির ইন্ধনেই এই কাজ হয়েছে। দলীয় নেতৃত্বকে গোটা ঘটনা জানাব।” তবে এই অভিযোগ উড়িয়ে ব্লক তৃণমূলের সভাপতি তপন সরকার বলেন, “সম্পূর্ণ বাজে কথা। এর সঙ্গে আমার কোনও যোগ নেই। উপপ্রধান পদে দলের কোনও প্রার্থীকে মনোনীত করা হয়নি। তবে ভোটাভুটি হয়েছে।”