ব্লক সভাপতি পঙ্কজ, অস্তে গেলেন তপন

তৃণমূল সূত্রে জানা যাচ্ছে, দলে তপনের আর্বিভাব ছিল অনেকটাই ধূমকেতুর মতো।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কল্যাণী শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৯ ০১:৪৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

লোকসভা ভোটের ফল বেরনোর পর থেকেই জল্পনা চলছিল। কল্যাণী ব্লক থেকে তৃণমূল প্রায় পাঁচ হাজার ভোটে পিছিয়ে থাকায় দলের অন্দরে প্রশ্ন উঠেছিল ব্লক তৃণমূল সভাপতি তপন মণ্ডলের নেতৃত্ব নিয়ে। শেষমেশ তাঁকে সরিয়ে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি করা হল কাঁচরাপাড়া পঞ্চায়েতের প্রধান পঙ্কজ সিংহকে।

Advertisement

ভোটে বিপর্যয়ের পর থেকেই তৃণমূলের নানা সভায় মঞ্চে ডাকা হচ্ছিল না তপনকে। পরিবর্তে ডাকা হচ্ছিল পঙ্কজকে। ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতিতেও তাঁকেই সক্রিয় হতে বলা হয়েছিল। সোমবার সন্ধ্যায় কল্যাণীতে দলীয় সভায় এসে দলের রানাঘাট সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শঙ্কর সিংহ কল্যাণী ব্লক সভাপতি হিসেবে পঙ্কজের নাম ঘোষণা করেন। রাতেই কল্যাণীর বিধায়ক রমেন্দ্রনাথ বিশ্বাস তাঁর হাতে চিঠি তুলে দেন। পঙ্কজ বলেন, ‘‘বিধায়ক খুব দ্রুত ব্লক কমিটি তৈরি করতে বলেছেন। এখন দলকে ঘুরে দাঁড় করানো চ্যালেঞ্জ। মঙ্গলবারই জনসংযোগের কাজে নেমে পড়েছি।’’

তৃণমূল সূত্রে জানা যাচ্ছে, দলে তপনের আর্বিভাব ছিল অনেকটাই ধূমকেতুর মতো। এক সময়ে কল্যাণী শহর তৃণমূলের সভাপতি অরূপ মুখোপাধ্যায় ওরফে টিঙ্কু গ্রামীণ কল্যাণীর রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করতেন। আর দলের মধ্যে টিঙ্কুর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিতি ছিল তপনের। সেই কারণেই যুব তৃণমূলের নেতা তপন বছর আড়াই আগে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি হন। পরে পঙ্কজ হন ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি। কিন্তু পুরো ক্ষমতা ভোগ করতেন তপন। পঙ্কজকে সীমাবদ্ধ করে রাখা হয় কাঁচরাপাড়া পঞ্চায়েত এলাকায়। ভোটের আগে তাঁকে শহিদপল্লি এলাকাতেই সীমাবদ্ধ করে রাখা হয় বলে পঙ্কজের খেদ।

Advertisement

বেশ কিছু আগে অটো মালিকদের কাছ থেকে কাটমানি নেওয়ার ঘটনায় কয়েক জন পরোক্ষে তপনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। সরকারি জায়গায় দোকানঘর তৈরির ব্যাপারে সরাসরি এক মহিলা তপনের বিরুদ্ধে পঞ্চায়েতে অভিযোগ করেন। এরই মধ্যে তপনের ভাইকে সন্ধ্যায় দুষ্কৃতীরা অপহরণ করে। তপন দিন-দিন নানা বিতর্কে জড়িয়ে পড়ছিলেন। দলের কাজে প্রথমের সারিতেও আর তাঁকে দেখা যাচ্ছিল না।

তৃণমূল সূত্রের দাবি, বিতর্কে জর্জরিত তপনের কাছ থেকে ভোটের পর তার ঘনিষ্ঠেরা সরে যেতে শুরু করেছিল। তপন বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ হওয়া সত্ত্বেও ওঁর এলাকার মানুষ পাট্টা নিয়ে ক্ষুব্ধ। দলের মধ্যে তিনি নিজের কয়েক জন অনুগামীকে নিয়ে চলতেন। সেই অনুগামীদের বিরুদ্ধেও নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠছে। তপন অবশ্য বলেন, ‘‘দল হারার পরেই আমি ইস্তফা দিতে চেয়েছিলাম। আমাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। নতুন সভাপতি আমার কাছ থেকে যা সাহায্য চাইবেন, আমি তা করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন