kali Puja 2022

এলইডি-র দাপটে দীপাবলিতেও হারিয়ে যাচ্ছে মাটির প্রদীপ

প্রদীপ থেকে শুরু করে বিদ্যুতের তৈরি মোমবাতি সব কিছুই পাওয়া যাচ্ছে। দামও লোকজন মাটির প্রদীপের দিকে না গিয়ে সেই সব আলো কিনে বাড়ি ফিরছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর ও বহরমপুর শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০২২ ০৯:১৩
Share:

মাটির প্রদীপ টিকে রয়েছে প্রতিমার সামনে। ছবি: গৌতম প্রামাণিক

দীপাবলির কয়েক দিন থেকেই বাড়ির বয়স্ক মহিলারা পুরনো কাপড় পরিষ্কার করে সলতে পাকাতেন। অন্য দিকে কুমোরপাড়া থেকে আসত মাটির প্রদীপ। কালীপুজো-দীপাবলির রাতে সেই প্রদীপে খাঁটি সর্ষের তেল এবং বাড়ির পাকানো সলতে দিয়ে জ্বালানো হত প্রদীপ। বছর পনেরো আগেও গ্রাম বাংলায় কালীপুজো-দীপাবলিতে এমনই ছবি দেখা যেত। কিন্তু এলইডি, টুনি বাল্বের আলোর রোশনাইয়ে এখন সে সব হারিয়ে যেতে বসেছে।

Advertisement

প্রদীপ থেকে শুরু করে বিদ্যুতের তৈরি মোমবাতি সব কিছুই পাওয়া যাচ্ছে। দামও লোকজন মাটির প্রদীপের দিকে না গিয়ে সেই সব আলো কিনে বাড়ি ফিরছেন। এই আলো বাতাসে নেভে না। তাতে তেলও দিতে হয় না। এর পরে রঙ-বেরঙের আলো, টুনি বাল্বে গোটা বাড়ি সাজিয়ে তোলা হচ্ছে।

তাতেই মাটির প্রদীপের ব্যবহার কমে যাচ্ছে। ফলে কুমোরদেরও বিক্রি কমে গিয়েছে। তবে ধর্মীয় রীতি মেনে পূর্ব পুরুষদের উদ্দেশ্যে যে ‘চৌদ্দ প্রদীপ’ জ্বালানো হয় তা অনেকেই মাটির প্রদীপ ব্যবহার করেন।

Advertisement

জিয়াগঞ্জের বাসিন্দা সত্তর ঊর্ধ্ব সমীর ঘোষ বলছেন, ‘‘মাটির প্রদীপ জ্বালানোর মধ্যে যে আন্তরিকতা, নিষ্ঠা ছিল তা এই সব এলইডি, টুনি বাল্বের আলো জ্বালানোর ক্ষেত্রে নেই। কালীপুজো-দীপাবলিতে নিষ্ঠা ভরে আন্তরিকতার সঙ্গে মাটির প্রদীপ জ্বালাতেন বাড়ির লোকজন। আর এখন আলো জ্বালাতে একটি সুইচে চাপ মারলেই হয়ে যায়। ফলে আলোর রোশনাইয়ে ক্রমে হারিয়ে যাচ্ছে আন্তরিকতা, নিষ্ঠা।’’

বহরমপুরের কাঠালিয়া, বালিরঘাট এলাকায় কুমোরপাড়ায় অন্য জিনিসপত্রের সঙ্গে মাটির প্রদীপ তৈরি হয়। এ ছাড়া জেলার অন্য এলাকাতেও মাটির প্রদীপ তৈরি হয়।

বছর পনেরো আগেও মাটির প্রদীপের চাহিদা থাকায় কুমোরপাড়ায় দীপাবলির সময় কুমোররা বসার সময় পেতেন না। কিন্তু এলইডি, টনি বাল্বের আলোর গুঁতোয় এখন অন্ধকার কুমোরপাড়াও।

বহরমপুরের বাসিন্দা সুরজিৎ গনাই বলছেন, ‘‘এখন লোকজন বৈদ্যুতিক আলোর দিকে ঝুঁকছেন। যার জেরে মাটির প্রদীপের চাহিদা কমেছে।’’ তবে এখনও কেউ কেউ মাটির প্রদীপ, কাঁসা, পিতলের প্রদীপ ব্যবহার করছেন।’’ সুরজিৎবাবু বলেন, ‘‘চৌদ্দ প্রদীপ জ্বালাতে এখনও অনেকে মাটির প্রদীপ ব্যবহার করেন।’’

সূত্রের খবর, এখন কেরোসিনের দাম লিটার পিছু প্রায় একশো টাকা, সর্ষের তেলের দামও প্রায় পৌনে দুশো টাকা। ঘিয়ের দামও তো চড়াই। ফলে অনেকেই এসবের কারণে মাটির প্রদীপকে এড়িয়ে চলছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন