Muslim community

কালীমন্দিরের জন্য জমি আজিজুল, নিজাম, আলির

কমিটির পক্ষ থেকে সংলগ্ন  জমির মালিকদের জমিদানের অনুরোধ জানানো হয়েছিল। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে তিন জন মুসলিম ব্যক্তি সহ এলাকার মোট এগারো জন এগিয়ে আসেন।

Advertisement

কল্লোল প্রামাণিক

শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২০ ০২:৪৪
Share:

মন্দির নির্মাণের জন্য জমি দান করলেন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষেরা। ধর্মীয় সম্প্রতির এক অনন্য নজির স্থাপন করল নদিয়ার করিমপুরের দুই ভিন্ন সম্প্রদায়ের কয়েক জন মানুষ।

Advertisement

করিমপুর কুয়োরপাড় কালীতলার কালীমন্দির তৈরিতে সম্প্রতি এগারো জন প্রায় সতেরো শতক জমি দান করেন। তার মধ্যে ছয় শতক জমির মালিক আজিজুল বিশ্বাস, নিজাম মণ্ডল ও আলি হোসেন মণ্ডল। এ ছাড়াও জমিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন সুবল মণ্ডল, বিনীতা প্রামাণিক, পৃথা প্রামাণিক, শৈলেন বিশ্বাস, দিলীপ বিশ্বাস, নিখিল মণ্ডল, উত্তম বিশ্বাস ও দেবব্রত সরকার।

সর্বজনীন ডাকাত কালী মন্দির কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, বহু কাল আগে থেকে জঙ্গলের মধ্যে কালীপুজো হয়ে আসছে। পরবর্তী সময়ে এখানে ছোট্ট একটি পাকা মন্দির তৈরি হলেও মন্দিরের আশেপাশে সামান্য জমিও ছিল না। মন্দির সংলগ্ন সব জমিই আবাদি জমি। ফলে, মন্দিরে যাওয়ার কোনও রাস্তাও এত দিন ছিল না। অথচ, প্রতি বছর বিরাট ধুমধাম করে এই মন্দিরে এক রাতের কালী পুজো অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে এলাকার বহু দর্শনার্থী পুজোয় আসেন। ওই পুজো উপলক্ষে প্রায় পনেরো হাজার মানুষকে খিচুড়ি প্রসাদ খাওয়ানো হয়।

Advertisement

যদিও রাস পূর্ণিমার পরের দিন মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত এ দিনের পুজোয় এ বারে করোনার কারণে জমায়েত এড়াতে বসিয়ে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা হয়নি। মন্দির কমিটির সম্পাদক নীরেন বিশ্বাস জানান, সামান্য জায়গার এই মন্দিরে অনেক সমস্যা হত। তাই কমিটির পক্ষ থেকে সংলগ্ন জমির মালিকদের জমিদানের অনুরোধ জানানো হয়েছিল। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে তিন জন মুসলিম ব্যক্তি সহ এলাকার মোট এগারো জন এগিয়ে আসেন। তাঁরা জমি দান করতে রাজি হয়ে যান।

নীরেন বলেন, ‘‘তাঁদের এই দান ছাড়া মন্দিরের উন্নয়ন সম্ভব হচ্ছিল না।’’

জমিদাতা আজিজুল বিশ্বাস বলেন, ‘‘এখানে দীর্ঘ দিন দুই সম্প্রদায়ের মানুষ মিলেমিশে বসবাস করে আসছে। সম্প্রীতির পরিবেশে সবাই সবার পাশে দাঁড়ায়। মন্দিরের জমির প্রয়োজন ছিল। সেই কারণে সকলের সুবিধার্থে জমি দেওয়া হয়েছে।’’

একই কথা জানাচ্ছেন অপর জমি দাতা নিজাম মণ্ডল। তাঁর কথায়, “বহু প্রাচীন এই মন্দির ছোট থেকেই দেখে আসছি। জমি না থাকায় অনেক সমস্যা হত। এই জমি উত্তরাধিকার সুত্রে পাইনি। নিজের টাকায় কিনেছিলাম। তবুও মন্দিরের দরকারে কমিটিকে জমির একটা অংশ দান করলাম।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement