রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে সোমবার দুপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম বার মায়াপুর ঘুরে গেলেন। তার পর থেকেই বড় অভিমান হয়েছে নবদ্বীপের। নবদ্বীপের সনাতন সন্ত সমাজের সভাপতি, নবদ্বীপ চৈতন্য জন্মস্থান মন্দিরের প্রধান অদ্বৈতদাস বাবাজি বলছেন, ‘‘আমরা ভেবেছিলাম, মুখ্যমন্ত্রী যখন মায়াপুরে আসছেন, চৈতন্য জন্মস্থান দর্শন করতে নবদ্বীপেও আসবেন। বছর দু’য়েক আগে তিনি নবদ্বীপে প্রশাসনিক বৈঠক ও সভা করলেও চৈতন্য জন্মস্থান বা বিষ্ণুপ্রিয়াদেবীর জন্মভিটেয় তিনি যেতে পারেননি। সে আশা এ বারেও পূর্ণ হল না।’’
নবদ্বীপের বৈষ্ণবসমাজের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটের মাসখানেক আগে নবদ্বীপে প্রশাসনিক বৈঠকে এসে প্রকাশ্য সভায় মুখ্যমন্ত্রী নবদ্বীপকে হেরিটেজ শহর হিসাবে গড়ে তোলার কথা ঘোষণা করেন। কিন্তু ব্যস্ততার কারণে তিনি নবদ্বীপের প্রাচীন মঠমন্দির যেতে পারেননি। নবদ্বীপের মহাপ্রভু মন্দির কর্তৃপক্ষ আশা করেছিলেন, হয়তো এ বার মুখ্যমন্ত্রী এসে পাঁচশো বছরেরও বেশি সময় ধরে পূজিত মহাপ্রভুর প্রাচীনতম বিগ্রহ দর্শন করবেন। কিন্তু এ বারও সে আশা তাঁদের পূর্ণ হল না। মহপ্রভু মন্দিরের পরিচালন সমিতির সম্পাদক জয়ন্ত গোস্বামী বলেন, ‘‘আমাদের কাছে সারাদিন ধরে ফোন আসছে— কখন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মহাপ্রভু দর্শনে আসছেন। শেষে বাধ্য হয়ে ফোন বন্ধ করে দিয়েছি।” গৌড়ীয় বৈষ্ণব সমাজের সহ-সভাপতি কিশোর গোস্বামী বলেন, ‘‘মায়াপুরের উন্নতিতে আমরাও খুশি। কিন্তু নবদ্বীপ ক্রমশ কোনঠাসা হয়ে পড়ছে না তো? নবদ্বীপ মালঞ্চপাড়ায় বিষ্ণুপ্রিয়ার জন্মভিটে বা চৈতন্য জন্মস্থানের মতো প্রাচীন স্থান, প্রাচীন সব বিগ্রহ, পুঁথি বুকে নিয়ে বসে আছে নবদ্বীপ। ভেবেছিলাম, আমাদের আড়ম্বরহীন সুপ্রাচীন মন্দিরে প্রিয় মুখ্যমন্ত্রীকে পাব। কিন্তু শেষ পর্যন্ত না পাওয়াটা আমাদের কাছে বড় কষ্টের।”