নার্সিংহোমের সামনে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
এক প্রসূতির মৃত্যুকে ঘিরে রবিবার দুপুরে ব্যাপক ভাঙচুর চলল রঘুনাথগঞ্জের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে।
জঙ্গিপুর হাসপাতাল লাগোয়া ওই নার্সিংহোমে শনিবার সন্ধ্যেয় ভর্তি হন তাজকেরা বিবি (৩০) নামে ওই প্রসূতি। তাঁর বাড়ি রঘুনাথগঞ্জ ২ ব্লকের ইমামনগর গ্রামে। রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালেরই এক স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ওই নার্সিংহোমেই তাঁর অস্ত্রোপচার করেন। জন্ম হয় এক কন্যা সন্তানের। এটি ওই মহিলার চতুর্থ সন্তান।
পরে ভোর সাড়ে ৩টে নাগাদ প্রসূতির শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। তখন চিকিৎসক ও নার্সিংহোমের মালিক মেহেবুব আলম ওই প্রসূতিকে পাশেই জঙ্গিপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করান। সকালে সেখানেই মৃত্যু হয় তাজকেরার। খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন গ্রাম থেকে তার পরিবারের লোকজন।
মৃতার দেওর মঙ্গল বিশ্বাসের অভিযোগ, “বৌদির কোনও সমস্যা ছিল না। সিজারিয়ান অপারেশনের পরও চিকিৎক প্রসেনজিৎ দাস জানান বৌদি ভাল আছে। বাড়ির লোকজন সকলেই নিশ্চিন্তে বাড়ি চলে যায়। তারপর কি এমন ঘটল যে শেষ রাতে তাকে গোপনে সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যেতে হল?’’
কি কারণে তার মৃত্যু তা জানতেই এরপর তাঁরা নার্সিংহোমে যান। সেখানে নার্সিংহোমের মালিক বা চিকিৎসক কাউকে না পেয়েই নার্সিং হোমে ঢুকে উত্তেজিত প্রায় শ’দুয়েক গ্রামবাসী ভাঙচুর শুরু করেন।
প্রথমেই সিসি ক্যামেরাগুলি ভেঙে দেওয়া হয়। পরে আসবাব পত্র, চেয়ার ছুঁড়ে ফেলা হয় বাইরে। প্রাণভয়ে তখন নার্সিংহোমের কর্মী ও নার্সরা পালিয়ে যান। আধঘন্টা ধরে তান্ডবের পরে ঘটনাস্থলে আসে বিশাল পুলিশ বাহিনী। নার্সিংহোম মালিক মেহেবুব আলম বলেন, “আমার নার্সিংহোমে ওই প্রসূতিকে ভর্তি করিয়ে অপারেশন হয়েছে। মধ্যরাতে অপারেশনের পর কেন তার অবস্থার অবনতি হল তা এক মাত্র ওই চিকিৎসকই
বলতে পারবেন।’’
রঘুনাথগঞ্জ থানার আইসি সৈকত রায় জানান, প্রসূতির মৃত্যু বা ভাঙচুর কোনও তরফেই এখনও অভিযোগ জানানো হয়নি পুলিশের কাছে। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায়। অবস্থা নিয়ন্ত্রণে এনে নার্সিং হোমের ভর্তি অন্য প্রসূতিরা যাতে বিপদে না পড়েন তার জন্য চিকিৎসক ও কর্মীদের নার্সিংহোমে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করেন। আপাতত পুলিশি পাহারা রাখা হয়েছে সেখানে।’’