ওষধি চেনাতে স্কুলে লাগানো হচ্ছে চারাগাছ

বেশি কিছু দিন আগেই কৃষ্ণনগরে সর্বশিক্ষা মিশনের অফিস চত্বরে প্রায় ৩০০ বর্গফুট জায়গায় ১০০টি ওষধি গাছ লাগানো হয়েছে। বাসক, তুলসী, অশ্বগন্ধা, ভৃঙ্গরাজ, সাতমূলী, পুদিনা, থানকুনি-সহ বিশ প্রজাতির গাছ টবে লাগানো হয়েছে।

Advertisement

সামসুদ্দিন বিশ্বাস

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৭ ০৭:১০
Share:

গাছের নাম থাকে বইয়ে।

Advertisement

বজ, কুলেখাড়া, বাসক, নিম, ভুঁই আমলা, সর্পগন্ধা, অ্যালোভেরা।

এদের নাকি নানা গুণ। কিন্তু এ সব গাছ চেনে ক’জন ছাত্রছাত্রী? না চিনে শুধু শুকনো পাতা উল্টে গিয়ে লাভটাই বা কী?

Advertisement

এই চিন্তা থেকেই একশো দিনের কাজের প্রকল্পে স্কুলে-স্কুলে ওষধি গাছ লাগাতে উদ্যোগী হয়েছে জেলা প্রশাসন। নদিয়ায় ইতিমধ্যে গাছ লাগানো শুরু হয়ে গিয়েছে। কত জমি আছে জানতে চেয়ে মুর্শিদাবাদে চিঠি পাঠানো হয়েছে সব স্কুলে।

বেশি কিছু দিন আগেই কৃষ্ণনগরে সর্বশিক্ষা মিশনের অফিস চত্বরে প্রায় ৩০০ বর্গফুট জায়গায় ১০০টি ওষধি গাছ লাগানো হয়েছে। বাসক, তুলসী, অশ্বগন্ধা, ভৃঙ্গরাজ, সাতমূলী, পুদিনা, থানকুনি-সহ বিশ প্রজাতির গাছ টবে লাগানো হয়েছে। সর্বশিক্ষা মিশনের জেলা প্রকল্প আধিকারিক সচ্চিদানন্দ বন্দোপাধ্যায় বলেন, “স্কুলগুলিকে ওষধি গাছ লাগানোয় উৎসাহ দিতেই আমাদের অফিস চত্বরে ওষধি গাছ লাগানো হয়েছে।”

গত মার্চে ওষধি গাছ লাগানোর প্রশিক্ষণ নিতে নদিয়ার বেশ কিছু চাষিকে নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যালয়ে পাঠানো হয়েছিল। তেহট্ট ১ ও ২ এবং নাকাশিপাড়া ব্লকের সাত জন সেখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন। জেলা প্রশাসন প্রথমে ওই তিন ব্লকেই ওষধি গাছ লাগানোর পরিকল্পনা নিয়েছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (‌জেলা পরিষদ) শেখর সেন জানান, একশো দিন কাজের প্রকল্পে চাষিদের দিয়ে গাছ লাগানো হবে। স্কুলগুলিতেও গাছ বসবে। তাঁর মতে, এতে ছাত্রছাত্রীরা যেমন ওষধি গাছ চিনবে, ভবিষ্যতে ওষধি বিক্রিও করা যাবে। তাতে স্কুলের লাভ হবে।

একশো দিন কাজের প্রকল্প দফতর সূত্রে জানা যায়, ওষধি গাছ ছোট হওয়ায় জায়গা কম লাগে। ফলে স্কুল চত্বরে সামান্য জমি থাকলেই তা লাগানো যাবে। নদিয়ায় প্রতিটি স্কুলে তিনশোটি করে গাছ লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে। মুর্শিদাবাদ জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) পূরবী বিশ্বাস দে জানান, ওষধি গাছ লাগানোর জায়গা কার কতটা আছে, তা জানতে চেয়ে এক সপ্তাহ আগেই সব স্কুলকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

কোথায় বসানো যায় ওষধি গাছ?

বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, যে সব জমিতে রাসায়নিক সারের ব্যবহার হয়নি, এমনকী পতিত জমিতেও এ সব গাছ বসানো যেতে পারে। চাষ করা যেতে পারে বজ, একাঙ্গী, ব্রাহ্মী, কুলেখাড়া, বাসক, নিম, ভুঁই আমলা, সর্পগন্ধা, অ্যালোভেরা।

চারা কোথায় মিলবে?

জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, একশো দিন কাজের প্রকল্পের দফতর স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের দিয়ে নার্সারিতে চারা তৈরি করাচ্ছে। তা ছাড়া কল্যাণীতে স্টেট মেডিসিনাল বোর্ডের নার্সারি থেকেও ওষধি গাছের চারা এনে স্কুলগুলিকে দেওয়া হবে।

নদিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি বাণীকুমার রায় বলেন, “প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয় মিলিয়ে আপাতত সাড়ে চারশো স্কুলকে এই প্রকল্পের জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। সেগুলিতেই গাছ লাগানো হচ্ছে।”

মুর্শিদাবাদে অবশ্য এই বাছবিচার করা হয়নি। জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) জানান, স্কুলগুলি তাদের জমির পরিমাণ জানালেই সেই মতো চারা বিলি করা শুরু হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন