প্রতীকী ছবি।
নাটকীয় ভাবে রঘুনাথগঞ্জ থানার পুলিশের হাতে ধরা পড়ল মুর্তুজ আলি নামে বছর ৬২ বয়সের এক জাল নোটের কারবারি। মালদহের বৈষ্ণবনগর থানার পারদিয়ারপুরের বাসিন্দা মুর্তুজ জাল নোটের পাকা কারবারি বলেই জানিয়েছে পুলিশ।
এ দিন তার লুঙ্গির কোঁচর থেকে মিলেছে ২.১০ লক্ষ জাল নোট। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে পুলিশকে জানিয়েছে, বীরভূমের এর খদ্দেরের এই জাল টাকা নিতে আসার কথা ছিল। কিন্তু সময়ে না আসায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর অজগরপাড়া মোড়ে সে অপেক্ষা করতে থাকে দীর্ঘক্ষণ। আর এই অপেক্ষার জেরেই পুলিশি সন্দেহে পড়ে সে।
রঘুনাথগঞ্জের আইসি সৈকত রায় জানান, সোমবার দুপুরে ধরা পড়ার পরে ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ইতিমধ্যেই বৈষ্ণবনগর থানার সঙ্গে কথা হয়েছে। এর সঙ্গে কারা জড়িত তাদের নামও জানা গেছে। মিলেছে ক্রেতার নামও। বীরভূম ও বৈষ্ণবনগরে পুলিশ তল্লাশি চালাবে।
পুলিশ জানায়, হঠাৎই বাসটা এসে দাঁড়ায় অজগরপাড়ার মোড়ের মাথায়। জনা সাতেক যাত্রী বাস থেকে নেমে যে যার মত রওনা দিলেন। কিন্তু ব্যতিক্রম এক জন। পরনে আধ ময়লা চেক লুঙ্গি, ফুল হাতা জামার উপর হাফ হাতা শোয়েটার। বাস থেকে নেমে কোনও দিকে না গিয়ে বসল সে রাস্তার কংক্রিটের ফলকের উপরই। এই শীতেও কপাল ঘামছে তার। লুঙ্গি দিয়ে মুছে ফের উঠে দাঁড়াচ্ছে। মুখে টেনশন। এটাই চোখ এড়ায়নি পুলিশের।
পাঁচ সঙ্গীকে নিয়ে পাক্কা খবর পেয়েই বেলা ১টা থেকেই সুতির আহিরণ লাগোয়া অজগরপাড়ায় ঠাঁই গেড়েছিল সাদা পোশাকের জনা ছয় পুলিশ অফিসার ও কর্মী। কিন্তু ঘণ্টা পেরিয়েও অপেক্ষাই সার। ঘড়ির কাঁটা তখন পেরিয়েছে আড়াইটে। এ দিক ওদিক চেয়েও পুলিশও ঠিক ঠাওর পাচ্ছে না আসল জনের। খবর আছে মালদহ থেকে কয়েক লক্ষ টাকার জাল নোট নিয়ে আসার কথা অজগরপাড়ার বাসস্ট্যান্ডের মোড়েই। সেখান থেকে বাঁক নিয়েছে কানুপুর – বহুতালি সড়ক। ইতিমধ্যেই বার দুয়েক টেলিফোনে কথা হয়েছে আইসি সৈকত রায়ের সঙ্গে। তার নির্দেশ “অপেক্ষা কর। যারা মোড়ে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করছে অথচ কোনও দিকের বাসেই চড়ছে না নজরে রাখ তাদের দিকে।”
কেটে গেছে আরও আধ ঘন্টা। এর পরেই আইসি নিজে এসে পৌঁছন ঘটনাস্থলে। আচমকা তাঁর নজরে পড়ে ওই লোকটিকে। আর জেরা করতেই বেরিয়ে পড়ে তার পরিচয়।