মাদকাসক্তদের পুলিশের হাতে দিলেন গ্রামবাসীরা

একই অবস্থা নদিয়ার পড়শি মুর্শিদাবাদের বহরমপুর লাগোয়া হাতিনগর পঞ্চায়েত এলাকায়। মাদক বিক্রির রমরমার কারণে অসামাজিক কাজকর্ম বাড়ছে এই অভিযোগে রবিবার বহরমপুর থানায় স্মারকলিপি জমা দেন গ্রামবাসীরা। রবিবার বহরমপুর থানার আইসি-র কাছে যে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়, তাতে প্রায় ৪০০ জন গ্রামবাসীর সই রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নবদ্বীপ শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৭ ০৩:১০
Share:

প্রতীকী ছবি।

দিনেদুপুরে উধাও হয়ে যাচ্ছে বাড়ির থালা-বাসন, সাইকেল-ঘড়ি, পোশাকও। কিছু দিন পরে গ্রামেরই অন্য কারও বাড়িতে দেখা মিলছে খোয়া যাওয়া জিনিস। নাজেহাল অবস্থা ভালুকার বাসিন্দাদের।

Advertisement

শেষপর্যন্ত গোয়েন্দাগিরি শুরু করেন গ্রামেরই বাসিন্দারা। স্পষ্ট হয়, এ কাণ্ড মাদকাসক্তদের। নেশার টাকা জোগাড় করতে তারাই হাত সাফাই করছে তারাই। ভৌগলিক অবস্থার কারণে, পুলিশের নজরদারি থেকে বেঁচে যাচ্ছে তারা। হাত গুটিয়ে বসে না থেকে অবশেষে মাদকাসক্তদের ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিলেন এলাকার বাসিন্দারাই। শনিবার রাতের এমন ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে পুলিশও।

একই অবস্থা নদিয়ার পড়শি মুর্শিদাবাদের বহরমপুর লাগোয়া হাতিনগর পঞ্চায়েত এলাকায়। মাদক বিক্রির রমরমার কারণে অসামাজিক কাজকর্ম বাড়ছে এই অভিযোগে রবিবার বহরমপুর থানায় স্মারকলিপি জমা দেন গ্রামবাসীরা। রবিবার বহরমপুর থানার আইসি-র কাছে যে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়, তাতে প্রায় ৪০০ জন গ্রামবাসীর সই রয়েছে। বহরমপুর থানার আইসি শৈলেনচন্দ্র বিশ্বাস জানান, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে পদক্ষেপ করা হবে।

Advertisement

ভালুকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, সকাল-দুপুর-রাত, নবদ্বীপ কৃষ্ণনগর এমনকি বর্ধমানের পূর্বস্থলী, সমুদ্রগড়, শ্রীরামপুরের মতো দূরবর্তী এলাকা থেকে নানা বয়সের মানুষ এসে এখানে নিত্যহাজিরা দেন নেশার ঠেকে। এ ঠেকগুলিতে গাঁজা, হেরোইনের পুরিয়া সহজেই মেলে। ভালুকা মোড় থেকে কৃষ্ণনগরের দিকে যেতে বিষ্ণুপুর, জাহাঙ্গিরপুর পর্যন্ত প্রায় দেড়-দু কিলোমিটার এলাকা জুড়ে রাস্তার ধারের ঝোপঝাড় থেকে গ্রামের খেলার মাঠ, কিংবা সরকারি হাসপাতালের পরিত্যক্ত কোয়ার্টার্স— সবই নেশারুদের দখলে চলে গিয়েছে।

গ্রামের মানুষের অভিযোগ এ বিষয়ে পুলিশকে বারবার বলেও কোন ফল হয়নি। তাই শনিবার নিজেরা নেমে পড়লেন ময়দানে। অন্য কাজকর্ম শিকেয় তুলে দিনভর ওঁত পেতে রইলেন এবং দফায় দফায় ধরলেন বেশ কয়েকজন মাদকাসক্তকে। তুলে দিলেন নবদ্বীপ ও কোতোয়ালি থানার পুলিশের হাতে। তাদের মধ্যে কয়েকজন আবার মাদকের কারবারি।

কিন্তু এই এলাকায় মাদকের এতো রমরমা কেন? এলাকার ভৌগলিক অবস্থান এর জন্য কিছুটা দায়ী। নবদ্বীপের দিকে ভালুকা বটতলা পর্যন্ত নবদ্বীপ থানা এলাকা। বটতলা থেকে কৃষ্ণনগরের দিকে কোতোয়ালি থানা এলাকা। বটতলা পর্যন্ত নবদ্বীপ পুলিশের টহলদারী ভ্যান পৌঁছালেও বটতলা থেকে বিষ্ণুপুর বা জাহাঙ্গিরপুর পর্যন্ত দেড় দু কিমি এলাকা কার্যত পুলিশি নজরদারীর বাইরে থেকে যায়।

গ্রামের মহিলাদের অভিযোগ দিনের বেলা বাড়ির মেয়ে-বৌদের উদ্দেশ্যে ভেসে আসছে নানা কটূক্তি। এলাকার বহু বাড়ি থেকে খোয়া যাচ্ছে বাসনপত্র, সাইকেল, জুতো এমনকী ছাগল মুরগি পর্যন্ত। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন