প্রতীকী ছবি।
এতদিন আগ্নেয়াস্ত্রের যে কারবার সুতি আর সমশেরগঞ্জের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল, তা জেলা জুড়ে জাল ছড়াচ্ছে বলে সন্দেহ পুলিশের।
গত মঙ্গলবার লালবাগ, কান্দি ও সাগরদিঘিতে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করার পরে পুলিশের এই ধারণা জোরদার হয়েছে। গত দু’মাসে ৬৪টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ২০০টি গুলি উদ্ধার হয়েছে। ধরা পড়েছে ১৫ জন দুষ্কৃতী। পুলিশ প্রায় নিশ্চিত, আরও অনেকে এই কারবারে জড়িত। সাম্প্রতিক কালে কখনও এত আগ্নেয়াস্ত্র ধরা পড়েনি মুর্শিদাবাদে।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, প্রতিটি ক্ষেত্রেই আগ্নেয়াস্ত্রের আমদানি হয়েছে বিহারের মুঙ্গের ও ঝাড়খণ্ডের পাকুড় থেকে। তবে দালাল হিসেবে কালিয়াচকের কয়েক জনের নামও পাওয়া গিয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত মঙ্গলবার সাগরদিঘি থেকে যে পাঁচ জনকে ধরা হয়, তাদের মধ্যে এড়োয়ালির সাইদুল শেখই মূল পান্ডা। বাড়ি বীরভূমের মাড়গ্রামে। দ্বিতীয় বার বিয়ে করেছিল খড়গ্রামের জটারপুরে। সেই সূত্রেই এখন এড়োয়ালিতে থাকা। তার উপর পুলিশ বেশ কিছু দিন ধরেই নজরদারি চালাচ্ছিল। সফর আলির গাড়ি ভাড়া করে কালিয়াচক থেকে ব্যাগ বোঝাই করে সে অস্ত্র ও গুলি নিয়ে আসছিল কান্দিতে।
গাড়িচালক সফর পুলিশের কাছে দাবি করেছে, সে গাড়িটি ভাড়া দিয়েছিল মাত্র। আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যাপারে কিছু জানত না সে। কিন্তু পুলিশ তা বিশ্বাস করছে না। পুলিশের সন্দেহ, মোটা টাকার লোভেই সে গাড়ি ভাড়া দিয়েছিল। আগেও দিয়েছে।
আর এক ধৃত গাফফারও কান্দির চন্দ্রনগরে সমাজবিরোধী হিসেবে বেশ পরিচিত। সে যে আগ্নেয়াস্ত্রের কারবার করে তা গ্রামে সবাই জানে। একাধিক বার সে গ্রেফতারও হয়েছে। ধৃতদের জেরা করে কান্দির জেঠিয়া গ্রামের কয়েক জনের দুষ্কৃতীর নামও জানতে পেরেছে পুলিশ। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
গত ৯ এপ্রিল ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে ধুলিয়ান ডাকবাংলো মোড়ে একটি গাড়ি আটকে ১৫টি নাইন এমএম পিস্তল ও ৪১টি গুলি উদ্ধার করেছিল সমশেরগঞ্জ থানার পুলিশ। গ্রেফতার হয় তিন জন। মালদহের বৈষ্ণবনগর ও কালিয়াচকের বাসিন্দা তারা। আগ্নেয়াস্ত্র আসছিল কালিয়াচক থেকেই। পুলিশের আক্ষেপ, ধৃতেরা এক মাসের মধ্যেই জামিন পেয়ে যাচ্ছে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই অস্ত্র কারবারের বাড়বাড়ন্ত রোখা তাতেই আরও শক্ত হয়ে দাঁড়াচ্ছে।