জেলার মাদক-অপরাধীদের চিহ্নিত করা এবং সংশ্লিষ্ট মামলাগুলি তদারক করতে বিশেষ সেল তৈরি করল মুর্শিদাবাদ পুলিশ।
জেলা পুলিশের এক অফিসার-ইন-চার্জ’কে (ওসি) ওই সেলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। গত ২৭ এপ্রিল, জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে ওই সেল সম্পর্কে ইতিমধ্যেই বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়েছে। জেলার পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার, মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে এ ব্যাপারে রিপোর্ট পেশ করে জানিয়েছেন, প্রতি দিন জেলার বিভিন্ন আদালতে মাদক সংক্রান্ত মামলাগুলি থেকে কে বা কারা জামিন পাচ্ছেন, কাদের জামিন খারিজ হচ্ছে, জামিন হলে সরকার পক্ষ জামিন খারিজের আবেদন করছে কি না, তা নজর রাখতে বিশেষ একটি সফট্ওয়্যার তৈরির কাজও শুরু করেছে মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ।
হাইকোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর শাশ্বতগোপাল মুখোপাধ্যায় জানান, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া ও সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে মাদক আইনে ধৃত অভিযুক্তেরা জামিন পেয়ে যাওয়ায় গত ২৪ এপ্রিল উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অসীম রায়। কেবল মাদক মামলা নয়, জাল নোট সংক্রান্ত মামলাতেও বার বার এমন ঘটছে বলেই তাঁর পর্যবেক্ষণ ছিল। ওই দিন মুর্শিদাবাদ জেলার মাদক সংক্রান্ত একটি মামলায় এক অভিযুক্ত নিম্ন আদালত থেকে জামিন পেয়ে গিয়েছে দেখেই বিচারপতি রায় মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘এই ধরনের ঘটনা মুর্শিদাবাদেই বেশ ঘটছে।’’
পিপি জানান, ওই দিন মামলার নথি দেখে বিস্ময় প্রকাশ করে বিচারপতি সরকার পক্ষের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, নিম্ন আদালতে অভিযুক্তের জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করা হয়নি কেন। তাঁর পর্যবেক্ষণ ছিল— বাজেয়াপ্ত করা মাদকের রাসায়নিক পরীক্ষার রিপোর্ট আসতে দেরি হওয়ায় এবং গ্রেফতারির পরে চার্জশিট পেশের সময়সীমা ১৮০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ নিয়ে নিম্ন আদালতে অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের আবেদন করেছিলেন ওই অভিযুক্ত। রাসায়নিক পরীক্ষার রিপোর্ট আসতে দেরি হচ্ছে দেখে নিম্ন আদালতে চার্জশিট পেশের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন সরকারি কৌঁসুলি কেন করেননি, সেই প্রশ্নও সে দিন তুলেছিলেন বিচারপতি।
মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার হাইকোর্টে পেশ করা রিপোর্টে জানিয়েছেন, ২০১৫ সাল থেকে চলতি বছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত ওই জেলায় মাদক সংক্রান্ত মোট মামলা দায়ের হয়েছে ৫১৮টি। তার মধ্যে ৩৮৯ মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ হয়েছে। ১২৯টি মামলায় বাজেয়াপ্ত মাদক রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। তার রিপোর্ট এখনও জেলা পুলিশ
হাতে পায়নি।