বাজেয়াপ্ত শব্দবাজি। নিজস্ব চিত্র
আদালত ফরমান জারি করে। প্রশাসন কর্তারা এক কান দিয়ে শোনেন। কিন্তু শব্দদানবের দাপট থামে না।
কালীপুজো এসে গেল। চোরাপথ দিয়ে আনাচ-কানাচে ঢুকে পড়ছে বস্তা বোঝাই নিষিদ্ধ বাজি। পুলিশ পাকড়াও করতে না পারলে দু’চার দিনের মধ্যে যা চলে যাবে হাতে-হাতে, ছড়িয়ে পড়বে ঘরে-ঘরে। আর দীপাবলির সাঁঝ ঘনাতেই শুরু হয়ে যাবে উৎপাত— দুম! দাম! গুড়ুম!
পুলিশ যে বাতাসে বারুদের গন্ধ পাচ্ছে না, তা অবশ্য নয়। নদিয়া আর মুর্শিদাবাদে টুকটাক ধরপাকড়ও চলছে। শুক্রবার দুপুরে ধুলিয়ানের সব্জি বাজারে ধরা পড়েছে লক্ষাধিক টাকার ১১০০ বান্ডিল শব্দবাজি। দু’সপ্তাহ আগে বহরমপুরেও শব্দবাজি আটক করেছিল পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছিল এক জনকে।
সমশেরগঞ্জ থানার ওসি অমিত ভকত বলেন, “এ দিন আটক হওয়া বাজির মধ্যে বেশির ভাগই রকেট, দোদমা, চকোলেট। এখনও কাউকে ধরা যায়নি, তবে শব্দবাজি আমদানির মাথাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।” এ দিন কৃষ্ণনগরের বউবাজার, ষষ্ঠীতলা ও বেলেডাঙায় একাধিক দোকানে হানা দিয়ে আট কেজি মতো শব্দবাজি উদ্ধার করেছে কোতোয়ালি থানার পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে শব্দবাজি পোড়ানোর অভিযোগে শান্তিপুরের গবার চর এলাকা থেকে দুই যুবককে গ্রেফতারও করা হয়েছে। রামকৃষ্ণ কলোনি থেকে ২০ প্যাকেট চকোলেট বোমা ও ৫০ প্যাকেট কালিপটকা-সহ এক ব্যবসায়ী ধরা পড়েছে। তার পরেও অবশ্য দুই জেলাতেই দেদার চলছে শব্দবাজি বিক্রি।
এক সময়ে অরঙ্গাবাদে দরিয়াপুর এবং নতুন চাঁদরার বাজির রমরমা বাজার ছিল। সবাই নিজের বাড়িতে নানা রকম বাজি তৈরি করত। সেই সব বাজি যেত মুর্শিদাবাদের নানা প্রান্তে। এখন পুলিশের নজরদারিতে তা পুরোপুরি বন্ধ। তাই জেলায় বাজির প্রায় সবটাই আসে কলকাতা থেকে। পুলিশের সন্দেহ, কলকাতা থেকে ধুলিয়ানে শব্দবাজি আনা হয়েছিল আশপাশের এলাকায় পাঠাবার জন্য। ঝাড়খণ্ড এবং পাশেই গঙ্গা লাগোয়া বৈষ্ণবনগরের চর গ্রামগুলিতেও এই সব বাজি নিয়ে যাওয়া হত।
ইতিমধ্যে নদিয়ার বিভিন্ন থানা শব্দবাজি নিয়ে জনতাকে হুঁশিয়ারি দিতে শুরু করেছে। এ দিনই শান্তিপুর থানার পক্ষ থেকে টোটোয় মাইক বেঁধে প্রচার করা হয়। কোতোয়ালি থানাও বিভিন্ন জনবহুল ও বাজার এলাকায় ফ্লেক্স টাঙানোর তোড়জোড় করছে। হাঁসখালি থানা আজ, শনিবার বাজার কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠক করে শব্দবাজি বিক্রি না করার জন্য আবেদন জানাবে বলে ঠিক করেছে।
কাজ কতটা হবে, সময়ই বলবে।