কিছুক্ষণের মধ্যেই বরযাত্রী নিয়ে পাত্রের হাজির হওয়ার কথা। কোথায় বরযাত্রীরা বসবেন, তাঁদের জন্য জলখাবার তৈরি আছে কি না দেখাশোনায় ব্যস্ত মেয়ের বাবা। খুদেরা বাড়িতে ছোটাছুটি করছে। বাড়ির বাইরে ঢাউস সাউন্ড বক্সে বাজছে হিট বাংলা সিনেমার গান। ঠিক সেই সময়ে বাড়ির সামনে থামল দু’টি গাড়ি। বাড়ির লোকজনও হইহই করে ছুটে এসেছিলেন—‘বর এসেছে, বর এসেছে।’ কিন্তু বর কোথায়? এ তো প্রশাসনের লোকজন।
বুধবার সন্ধ্যায় ভরতপুর ২ ব্লকে ঠিক বিয়ের দিনেই তিন নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করল প্রশাসন। নাবালিকার পরিবারের তরফে জানানো হয়েছিল—সব আয়োজন সারা। এই অবস্থায় বিয়ে কী করে বন্ধ হবে? প্রশাসনের কর্তাদের স্পষ্ট জবাব—‘কোনও ভাবেই নাবালিকার বিয়ে হবে না। বিয়ে দিলে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন এলাকায় রয়েছে কন্যাশ্রী যোদ্ধা, স্বয়ংসিদ্ধারা। এই অবস্থায় নাবালিকার বিয়ে দেওয়া কার্যত অসম্ভব। এ ক্ষেত্রে অবশ্য স্থানীয় স্কুলের শিক্ষক ও গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যদের মাধ্যমে খবর পেয়েই ওই নাবালিকাদের বিয়ে বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে। এ দিকে ডোমকল চাইল্ড লাইনের কর্মীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে এ দিনই ডোমকলের রায়পুর গ্রামে হাজির হন প্রশাসন ও পুলিশের কর্তারা। পাত্র ও পাত্রী পক্ষের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে বন্ধ হয় বিয়ে।
পুলিশ জানিয়েছে, বছর পনেরোর ওই নাবালিকার বিয়ে ঠিক হয়েছিল জলঙ্গিতে। বর ও আত্মীয়েরা সকলেই হাজির হয়েছিলেন বিয়ের আসরে। সেই সময়েই পুলিশ এসে বিয়ে বন্ধ করে দেয়। পাত্রী পক্ষের দাবি, আইন-কানুন না জানার ফলে এমন ভুল হয়েছে। তবে সব আয়োজন তৈরি থাকায় বিয়ে হয়নি। কিন্তু সবাইকে খাইয়ে বাড়ি পাঠানো হয়েছে।