শব্দবাজি, ডিজে রোধে কড়া পুলিশ

অভিযোগ শব্দবাজি নিয়ে পুলিশি সক্রিয়তা চোখে পড়লেও ডিজে নিয়ে কারও তেমন হেলদোল চোখে পড়ে না। অথচ এই রাজ্যে ডিজে নিষিদ্ধ। কিন্তু সে নিষেধ শুনছে কে?

Advertisement

সামসুদ্দিন বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৪৯
Share:

এ শব্দে কেঁপে ওঠে ব্রহ্মতালু! জব্দ হয় গাঁ-গঞ্জ-মফস্‌সল-শহর। বিয়ে কিংবা পিকনিক মরসুমে ডিজে-দৌরাত্ম্য তো থাকেই। আর পুজো এলেই সে উদ্বেগ দ্বিগুণ বেড়ে যায়। কারণ, ডিজে-তে রক্ষা নেই, দোসর শব্দবাজি।

Advertisement

অভিযোগ শব্দবাজি নিয়ে পুলিশি সক্রিয়তা চোখে পড়লেও ডিজে নিয়ে কারও তেমন হেলদোল চোখে পড়ে না। অথচ এই রাজ্যে ডিজে নিষিদ্ধ। কিন্তু সে নিষেধ শুনছে কে?

সেই দুর্গাপুজো থেকে শুরু হয়েছে শব্দবাজি ও ডিজে-দৌরাত্ম্য। লক্ষ্মীপুজো পেরিয়ে গিয়েছে। রাত পোহালেই কালীপুজো। তার পরে রয়েছে জগদ্ধাত্রী, রাস। ফলে নদিয়া ও মুর্শিদাবাদ শব্দ-আতঙ্কে কার্যত সিঁটিয়ে রয়েছে। নদিয়ার করিমপুরের এক বৃদ্ধা যেমন বলছেন, ‘‘আনন্দের উৎসবে এ কেমন অত্যাচার বলুন তো? বাজি ছিলই। কয়েক বছর যোগ হয়েছে ডিজে। কান ঝালাপালা করে। অসুস্থ বোধ করি। এ আওয়াজ কি প্রশাসনের কানে পৌঁছয় না?’’ এক বাসিন্দা বলছেন, ‘‘আইন তো থাকে খাতা-কলমে। পুজো কমিটিগুলি কোনও না কোনও রাজনৈতিক দলের ছায়ায় থাকে। নিষিদ্ধ জেনেও শব্দবাজি, ডিজে-র বিরুদ্ধে কেউ মুখ খোলার সাহস পান না। প্রশাসনও দেখে না দেখার ভান করে চুপ থাকে।’’

Advertisement

কলকাতা পুলিশ যেমন ডিজে-র বিরুদ্ধে কোমর বেঁধে নেমেছে। দুর্গা পুজো এবং গণেশ পুজোর বিসর্জনের শোভাযাত্রায় শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ডিজের ব্যবহার সামনে আসায় মুখ পুড়েছিল তাদের। কালীপুজোয় যাতে সে অভিযোগ না ওঠে, তাই এ বার নানা এলাকায় পোস্টার লাগানো ও লিফলেট বিলি শুরু করেছে কলকাতা পুলিশ। কিন্তু জেলায় কী অবস্থা?

নদিয়ার পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া বলেছেন, ‘‘কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠক করে ডিজে ও শব্দবাজি নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে। নিয়ম ভাঙলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” পুলিশ সুপারের দাবি, নিষিদ্ধ শব্দবাজির বিরুদ্ধে জেলা জুড়ে অভিযান চলছে। ইতিমধ্যে নিষিদ্ধ শব্দবাজি উদ্ধারের পাশাপাশি স্থানীয় বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।

সম্প্রতি বহরমপুরে ও ধুলিয়ানেও প্রচুর শব্দবাজি উদ্ধার করে পুলিশ। তবে কেউ ধরা পড়েনি। নদিয়ার মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার মুকেশ কুমারও বলছেন, ‘‘জেলা জুড়ে নিষিদ্ধ শব্দবাজির বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। ডিজে বাজালেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

এ বছর দুর্গাপুজোর মণ্ডপে ডিজের দাপট কিছুটা কম ছিল। কিন্তু ভাসানের দিন সে খামতি পূরণ করে দিয়েছে বহু পুজো কমিটি। ফাটানো হয় শব্দবাজি। শব্দ-দানবকে রুখে আলোর উৎসবে শহর শান্ত রাখাটাই এখন পুলিশের বড় চ্যালেঞ্জ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন