বেহাল সর্বাঙ্গপুর থেকে ত্রিমোহিনী পর্যন্ত যাওয়ার রাস্তা। — নিজস্ব চিত্র
এই এলাকায় প্রচুর পরিমাণে পেঁয়াজ চাষ হয়। কিন্তু সেগুলো সংরক্ষণের কোনও ব্যবস্থা নেই। গত বছর মাঠে পেঁয়াজ পড়েছিল। সে সময় শিলাবৃষ্টিতে প্রচুর পেঁয়াজ নষ্ট হয়। সংরক্ষণের ব্যবস্থা করলে ভাল হয়।
বলরাম মণ্ডল, সর্বাঙ্গপুর
নানা সময়ে পঞ্চায়েত চাষিদের পরামর্শ দেয়। এ ছাড়া এলাকার মানুষের দাবি মেনে আমরা পঞ্চায়েত এলাকায় কৃষি সমবায় সমিতিতে ৫৫০ বগর্ফুট জায়গায় একটি ছোট আকারের পেঁয়াজ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। কিছু দিনের মধ্যে পেঁয়াজ কাটা শুরু হবে সেই পেঁয়াজ পরীক্ষামূলক ভাবে রাখা হবে।
আমাদের এই এলাকাটা তুলনায় নিচু। সামান্য বৃষ্টিতে জল জমে। ফলে রাস্তা দিয়ে স্কুলে-বাজারে যাওয়া, হাসপাতালে যেতে গেলে সমস্যায় পড়তে হয়। এর সমাধান চাই।
শুকদেব কুণ্ডু, সর্বাঙ্গপুর
প্রাকৃতিক ভাবে সবার্ঙ্গপুর খানিক নিচু। বৃষ্টি গড়িয়ে জল জমে। তবে আগে যা ছিল তার থেকে বর্তমানে অবস্থা ভাল। পঞ্চায়েত সাধ্য মতো নর্দমা গড়েছে। হাতে টাকা এলে আরও নালা তৈরি করা হবে।
সর্বাঙ্গপুর থেকে ত্রিমোহিনী যাওয়ার পিচরাস্তাটি বেহাল। ওই রাস্তা দিয়ে নওদা ব্লকের সদর আমতলা যেতে হয়। সেখানে হাসপাতাল, ব্লক দফতর সবই আছে। কিন্তু বৃষ্টি হলে যাতায়াত করা যায় না। এর থেকে নিষ্কৃতি মিলবে কি?
বিকাশ মণ্ডল, সর্বাঙ্গপুর
এটা পঞ্চায়েতের সব থেকে বড় সমস্যা। প্রতিটা প্রশাসনিক মিটিংয়ে এই নিয়ে সরকারের প্রতিনিধিদের জানাই। কিন্তু দীর্ঘদিন কোনও কাজ করেনি। আমাদের এক্তিয়ারে এত বড় কাজ করার ক্ষমতা নেই। শুনেছি প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় এই রাস্তা হবে। কিন্তু কবে হবে জানি না।
পঞ্চায়েতের ১৬টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের মধ্যে ১৩টির স্থায়ী কোনও ভবন নেই। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে, ক্লাবের বারান্দায়, প্রতিবেশির বাড়িতে, কোথাও কিছু না পেলে গাছের তলায় পড়ুয়ারা বসে। এই ভাবে কত দিন চলবে?
দিলীপ বিশ্বাস, সর্বাঙ্গপুর
সমস্যার কথা জানি। তাই এই সংক্রান্ত কোনও বড় জটিলতা হলে দ্রুত ব্যবস্থা নিই। কিন্তু জমি না মেলায় স্থায়ী ভবন তৈরি করা সম্ভব হয়নি। জমির সমস্যা নিয়ে যাতে সমস্যা মেটে তার ব্যবস্থা করছি।
পঞ্চায়েতের চোদ্দোটি শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের মধ্যে তেরোটি অন্যের জায়গায় হচ্ছে। এতে পড়াশুনো ও মিড-ডে মিলের সমস্যা হচ্ছে। কী ভাবে এই সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে?
শচীন মণ্ডল, সর্বাঙ্গপুর
বর্ষায় সমস্যা নাগাল ছাড়ায়। আসলে জমির অভাবে ভবন গড়া যাচ্ছে না। প্রশাসনকে জানিয়ে কোনও ব্যবস্থা করা যায় কিনা দেখছি।
সর্বাঙ্গপুরে প্রচুর পাট চাষ হয়। কিন্তু সেগুলো পচানোর মতো জলাশয় নেই। বৃষ্টি কম হলে সেই অভাব বাড়ে। কারণ অতীতে যে সমস্ত জলাশয় ছিল সেগুলো বর্তমানে অনেকগুলি বুজে গিয়েছে। পঞ্চায়েত এ নিয়ে কিছু ভাবছে?
আসরফ শেখ, সোনাটিকুরি
বর্ষার সময় জলাশয়ে জলের অভাব হওয়ার কথা নয়। কিন্তু বর্ষা সে ভাবে না হলে সমস্যা হয়। কোথায় মাটিতে গর্ত করে, কোথায় জলাশয়ে সেচের জল ফেলে সেখানে পাট পচাতে হয়। আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করি। পুকুর বা নালা যাতে কেউ না বোজাতে পারে তার দিকেও নজর রয়েছে।
এলাকায় পরিস্রুত পানীয় জলের সমস্যার কথা ভেবে সরকারের পক্ষে পিএইচই সর্বাঙ্গপুরে একটি প্রকল্প শুরু করে। কিন্তু কয়েক বছর ধরে সেই কাজ বন্ধ। প্রকল্পের কাজ কবে সম্পূর্ণ হবে?
স্বপন ঘোষ, সর্বাঙ্গপুর
জায়গাটা অনেক দিন ধরে পড়ে আছে। আমরা পঞ্চায়েতের মিটিং ও ব্লকে গিয়ে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরী দফতরকে সব কথা জানিয়েছি। কিন্তু তবুও কেন এ ভাবে পরে আছে জানি না। সামনে গ্রীষ্ণকাল, তখন জলের সমস্যা দেখা দেবে। যদি প্রশাসন এ বিষয়ে নজর দেয় তা হলে সকলেই উপকৃত হয়।
সর্বাঙ্গপুর থেকে নওদা যাওয়ার রাস্তা খারাপ। বাধ্য হয়ে রেজিনগর হয়ে বেলডাঙা অথবা বহরমপুর যেতে হয়। কিন্তু সে রাস্তা প্রায় ১৩ কিলোমিটার। রাস্তা থাকলেও যানবাহন পরিমাণে কম। রাত হলে যানবাহন পেতে সমস্যা হয়। পঞ্চায়েত যদি এ ব্যাপারে কোনও সদর্থক পদক্ষেপ করলে ভাল হয়।
বেল্লাল মণ্ডল, দুধসর
রেজিনগর যেতে ১৩ কিলোমিটার রাস্তায় বাস, ট্রেকার, টোটো সবই কমবেশি পাওয়া যায়। তবে রাতে এমনিতেই গাড়ি কমে যায়। পঞ্চায়েত এ নিয়ে চিন্তা ভাবনা করছে।
সর্বাঙ্গপুরে একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থাকা সত্ত্বেও সেখানে সেভাবে চিকিৎসা পরিষেবা মেলে না। অ্যালোপ্যাথির কোনও চিকিৎসক নেই। সময় মতো হাসপাতাল খোলা হয় না। ফলে বেলডাঙা বা বহরমপুর যেতে হয়। তাতে টাকা ও সময় দু’টোই ব্যয় হয়।
অমিয় মণ্ডল, সর্বাঙ্গপুর
হাসপাতালে চিকিৎসক না থাকার জন্য পুরো পরিষেবা মেলে না। তবে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক রয়েছেন। সিস্টারদের সব রকম ভাবে সাহায্য করার কথা বলা হয়। পঞ্চায়েতের পক্ষেও সব সহযোগিতা করা হয়।
এলাকায় ১৮ বছরের আগেই বিয়ে দেওয়ার প্রবণতা রয়েছে। পুলিশ, প্রশাসন পঞ্চায়েত কোনও ভাবেই কিছু করে উঠতে পারছে না। পুলিশ প্রশাসনের চাপে যদিও বা কোনও ক্ষেত্রে বিয়ে বন্ধ হয়। কিন্তু পরে ঘুর পথে সেই মেয়ের বিয়ে হয়ে যায়। কিছুতেই তা আটকানো যাচ্ছে না। এ বিষয়ে পঞ্চায়েত আরও গুরুত্ব দিক।
কৃষ্ণেন্দু ঘোষ, সর্বাঙ্গপুর
নাবালিকাদের বিয়ে এই এলাকায় একটা সমস্যা। অভিভাবকরা ভবিষ্যতের কথা চিন্তা না করেই বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে। সে ব্যাপারে আমরা খুব চিন্তিত। বিষয়টি নিয়ে সচেতনতার কাজ চালাচ্ছি। একটু সময় লাগছে। তাতে নিশ্চয় সমস্যা কমবে।
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার সেন্টার পড়ে নওদার ঝাউবোনা হাইস্কুলে। সেখানে যেতে রাস্তা এতটাই খারাপ যে সাইকেল বা হেঁটে গেলে পদে পদে হোঁচট খেতে হয়। যদি রাস্তাটা সংস্কার করা যায়।
কাশীনাথ হাজরা, সর্বাঙ্গপুর
পঞ্চায়েতের পক্ষে ওই রাস্তা সংস্কারের কোনও ক্ষমতা নেই। জেলা প্রশাসনকে বিষয়টি বারবার জানানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনার মাধ্যমে সেটা হবে বলেও শুনেছি। কিন্তু কবে হবে জানি না।
এলাকার অনেকগুলি আইসিডিএস কেন্দ্র চলে সকালে প্রাথমিক বিদ্যালয়। কিন্তু খুব গরমের সময় প্রাথমিক বিদ্যালয় সকালে হয়ে গেলে আইসিডিএস কেন্দ্রে বাচ্চাদের নিয়ে কাজ করার সুযোগ থাকে না। তখন দুপুরে এত গরম ফলে সমস্যা চরমে ওঠে।
আসরাফ মণ্ডল, সোনাটিকুরি
সমস্যার কথা জানি। সেই মতো আইসিডিএস কেন্দ্রের জন্য আলাদা ভবনের চিন্তাও করা হয়েছে। কিন্তু জায়গা মিলছে না। ফলে কোনও কাজ হচ্ছে না।
পঞ্চায়েতের পক্ষে ১০০ দিনের কাজ করেও অনেক সময় শ্রমিকেরা মজুরি পাচ্ছে না। এর প্রতিকার কি?
রাঘব মণ্ডল, সর্বাঙ্গপুর
সরকারের কাজে যথপোযুক্ত নথি জমা দেওয়া হয়েছে কিন্তু তা সত্বেও টাকা পাওয়া যাচ্ছে না । ফলে পঞ্চায়েত এলাকায় উন্নয়ন বাধা পাচ্ছে।