ফাইল চিত্র।
দলনেত্রীর সভায় লক্ষাধিক লোকের সমাবেশ করে মাঠ ভরাতে চাইছে তৃণমূল। নিচুতলা থেকেই সভায় মানুষ আনার উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। গোটা জেলা থেকেই দলীয় নেতাকর্মীরা যেমন আসবেন, তেমনই এলাকার মানুষকে জনসভায় শামিল করার বিষয়েও গুরুত্ব দিচ্ছেন দলের জেলা নেতৃত্ব।
আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে রানাঘাটে তৃণমূল দলনেত্রীর জনসভা কার্যত শক্তিপরীক্ষাই শাসক দলের কাছে। রানাঘাট ১ ব্লকের ছাতিমতলার মাঠ ভর্তি করিয়ে নিজেদের সাংগঠনিক শক্তি এবং জনসমর্থনের বার্তা দিতে চাইছে তৃণমূল। গত লোকসভা ভোটে এই রানাঘাটই তাদের থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছিল। গত বিধানসভা ভোটেও রানাঘাট মহকুমার তিনটি কেন্দ্র তাদের হারাতে হয়েছিল বাম-কংগ্রেস জোটের কাছে। মুখরক্ষা করেছিল রানাঘাট উত্তর-পূর্ব। কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের একাংশ রানাঘাট মহকুমার মধ্যে পড়ে। পাঁচ বছর আগের বিধানসভা ভোটে তৃণমূল কৃষ্ণগঞ্জে জয় পেলেও দু’বছর আগের উপ-নির্বাচনে সেখানেও পদ্ম ফুটেছে। ফলে নেত্রীর এই জনসভা সফল করতে মরিয়া তৃণমূল।
আগামী সোমবারের এই সভার জন্য জেলার নানা জায়গায় তৃণমূলের প্রস্তুতি সভাও চলছে। দলীয় সূত্রের খবর, নিচুতলায় বুথস্তরে দলের বুথ সভাপতি এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা যেমন আসবেন তেমনই তাঁদের সঙ্গে এলাকার কর্মী ও ভোটারদের বেশি সংখ্যায় আনার উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি জেলায় দলের নানা স্তরের পদাধিকারী ও জনপ্রতিনিধিরা আসবেন সভায়।
জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে লোক এলেও যেহেতু রানাঘাট ১ ব্লকে এই সভা হচ্ছে, সে ক্ষেত্রে রানাঘাট মহকুমা এলাকা থেকেই বেশি সংখ্যায় মানুষ আসবেন বলে মনে করা হচ্ছে। ব্লকে বিভিন্ন অঞ্চলে ইতিমধ্যে প্রস্তুতি সভা করে বুথস্তর থেকে জনপ্রতিনিধি এবং দলীয় সভাপতিকে লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হচ্ছে। রানাঘাট ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তাপস ঘোষ বলেন, “সর্বত্র নিচুতলায় প্রস্তুতি বৈঠক করা হচ্ছে। আমাদের ব্লকে প্রতি বুথ থেকে অন্তত ৫০ জন আনার লক্ষ্য রাখা হয়েছে।”
আশপাশের বীরনগর, তাহেরপুর, রানাঘাট শহর, রানাঘাট ২ ব্লক, শান্তিপুর ব্লক তো বটেই, দূরের নবদ্বীপ, কৃষ্ণনগর, তেহট্ট থেকেও মানুষ আসবেন বলেই জানাচ্ছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর দীপক বসু বলেন, “জেলার সমস্ত জায়গা থেকেই মানুষ আসবেন। তবে কাছাকাছি এলাকার মানুষের চাপ কিছুটা তো বেশি থাকবেই। বুথস্তর থেকে দলের সভাপতি এবং জনপ্রতিনিধিদের লোক নিয়ে আসতে বলা হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট ভাবে কোনও সংখ্যা নেই। নেত্রীর সভায় সকলেই আসবেন।” জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র বাণীকুমার রায়ের দাবি, “লক্ষাধিক মানুষের জমায়েত হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় এমনিই মানুষ ছুটে আসেন, এ বারেও তার ব্যতিক্রম হবে না।”
কোথা থেকে কত?
n রানাঘাট শহর: দুই থেকে তিন হাজার লোক।
n তাহেরপুর: পুরসভার ১৩টি ওয়ার্ড থেকে এক হাজার লোক। তার জন্য ৭০টি টোটো ছাড়াও অন্য গাড়ির ব্যবস্থা হয়েছে।
n রানাঘাট ১ ব্লক: বুথ প্রতি ৫০ জন, মোট প্রায় ১৫ হাজার।
n রানাঘাট ২ ব্লক: কমপক্ষে আড়াই হাজার লোক আনার জন্য বাস, লরি, ম্যাটাডরের ব্যবস্থা হয়েছে।
n শান্তিপুর ব্লক: রানাঘাট উত্তর পশ্চিম বিধানসভার অন্তর্গত চারটি পঞ্চায়েত এলাকা থেকে কমপক্ষে চার হাজার লোক আনার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। শান্তিপুর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ছ’টি পঞ্চায়েত থেকে আলাদা গাড়িতে নেতা ও কর্মীরা যাবেন।
n বীরনগর, নবদ্বীপ, চাকদহ বা কল্যাণীর জমায়েতের লক্ষ্যমাত্রা রাত পর্যন্ত স্পষ্ট হয়নি
*তৃণমূল সূত্রে প্রাপ্ত জেলার দক্ষিণ ভাগের আংশিক হিসেব