বেসরকারি দুগ্ধপ্রকল্পে উৎপাদন বন্ধ হল বহরমপুরে

সম্প্রতি রাজ্য সরকারের নির্দেশে দুধে ভেজাল রুখতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই কমিটি এ দিন অভিযানের সিদ্ধান্ত নেয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৮ ০২:৩৯
Share:

নিজস্ব চিত্র

অভিযোগ আসছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। রবিবার অভিযান চালিয়ে একটি বেসরকারি চিলিং প্ল্যান্ট বন্ধ করে দিল জেলা প্রশাসন। বহরমপুরের উত্তরপাড়ার ওই প্ল্যান্ট থেকে দুধ, গুড়ো দুধ, দুধের ক্রিমের নমুনাও সংগ্রহ করা হয়েছে। এ দিন উপ মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক ২ পার্থপ্রতিম গুপ্ত, জেলা খাদ্যসুরক্ষা আধিকারিক বিশ্বজিৎ মান্না, ভাগীরথী মিল্ক ইউনিয়ানের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ভাস্বর নন্দীর নেতৃত্বে এই অভিযান চালানো হয়েছে। তাঁরা সেখানে তল্লাশি চালিয়ে নমুনা সংগ্রহ করেন। সেখানে উৎপাদন বন্ধ রাখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

জেলাশাসক পি উলাগানাথন বলেন, “সংগৃহিত নমুনা পরীক্ষায় পাঠানো হবে। তদন্তে ভেজাল পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্ল্যান্টটি সাময়িক ভাবে বন্ধও করা হয়েছে।” সম্প্রতি রাজ্য সরকারের নির্দেশে দুধে ভেজাল রুখতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই কমিটি এ দিন অভিযানের সিদ্ধান্ত নেয়। এ দিন সকালে প্রথমে বহরমপুরের হাতিনগরে একটি জায়গায় দুধে ভেজালের অভিযোগে হানা দেয় জেলা প্রশাসনের একটি দল। কিন্তু সেখানে তেমন কিছু পাওয়া যায়নি। এর পরেই তাঁরা উত্তরপাড়ায় ওই বেসরকারি প্ল্যান্টে হানা দেন।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দুধের উৎপাদন হচ্ছিল। প্ল্যান্টের ভিতরে গুড়ো দুধের বস্তা, প্যাকেট সব নোংরা জায়গায় পড়ে ছিল। ছিল ড্রাম ভর্তি সালফিউরিক অ্যাসিড। চিলিং প্ল্যান্টে যাঁরা কাজ করছিলেন তাঁদের কারও হাতে গ্লাভস ছিল না। অ্যাপ্রন ছাড়াই কাজ করছিলেন কর্মীরা। এ সব দেখে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের চক্ষু চড়ক গাছ। জেলা খাদ্যসুরক্ষা আধিকারিক বিশ্বজিৎ মান্না বলেন, “দুধকে সুষম খাদ্য বলে। কিন্তু এমন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দুধ উৎপাদন করা যায় না। গ্লাভস, টুপি, অ্যাপ্রন কিছুই নেই। এমন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দুধের প্ল্যান্ট চলতে পারে না।”

Advertisement

ওই কারখানার মালিক অমৃত ঘোষের দাবি, ‘‘নিয়ম মেনে আমি প্ল্যান্ট চালাচ্ছি। কাগজপত্রও রয়েছে। দুধে কোনও ভেজাল মেশানো হয়নি। দু’দিন ধরে প্ল্যান্টে রঙের কাজ চলছে। তাই প্ল্যান্ট কিছুটা অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় রয়েছে।’’ জেলাশাসক জানান, সেখানে দুধ উৎপাদনে যে জল ব্যবহার হয়, তার কোনও রিপোর্ট নেই। দুধ উৎপাদনের জন্য তাঁরা কোনও লাইসেন্স দেখাতে পারেননি। দুধ উৎপাদনের ল্যাব টেকনিশিয়ানকে বিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক হতে হবে। সেখানে যে দু’জন টেকনিশিয়ান আছেন, তাঁদের এক জন উচ্চ মাধ্যমিক পাশ, অন্য জন কলা বিভাগে স্নাতক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন