কৃষ্ণনগরে ‘সেভ ডেমোক্রেসি ফোরামের সভা’।— নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যের বর্তমান অবস্থাকে ‘হীরক রাজার দেশের’ সঙ্গে তুলনা করলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়। রবিবার কৃষ্ণনগরের এভি স্কুলের মাঠে ‘সেভ ডেমোক্রেসি ফোরামের’ পক্ষ থেকে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেই সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে অশোকবাবু বলেন, ‘‘কে কোন খবরের কাগজ পড়বেন সেটাও মুখ্যমন্ত্রী ঠিক করে দেবেন। তিনি কোন প্রশ্ন শুনতে চান না। একটি অনুষ্ঠানে এক ছাত্রী তাঁকে প্রশ্ন করায় তিনি তাঁকে মাওবাদী বলে দেগে গিয়েছিলেন। শিলাদিত্যকে জেলে ভরলেন। অম্বিকেশ মহাপাত্র কারাবাস করলেন। এ যেন হীরক রাজার দেশ!’’
এ দিন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘শিক্ষামন্ত্রী বলছেন যে কেন আমি নাক গলাব না? আমি মাইনে দিই! এর আগে সব শিক্ষামন্ত্রী যে ভাল ছিলেন বলব না। কিন্তু এই ধরনের কথা এই প্রথম।’’
সাত্তারের নির্যাতিতা মহিলাকে গ্রেফতার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘সাত্তারের মেয়েটি জেলে গেল। কিন্তু তার অপরাধ কী ?’’ রাজ্যে গণতন্ত্র আক্রান্ত বলে জানিয়ে এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ডাক দেন তিনি।
এ দিনের ওই সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে একই আহ্বান জানান প্রাক্তন নকশাল নেতা অসীম চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন,‘‘এই রাজ্যে আইনের শাসন চলছে না চলছে মর্জির শাসন। তাই যত মতপার্থক্য থাকুক না কেন এই লুম্পেন রাজের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। গণতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য দলমত নির্বিশেষে সকলে জড়ো হন।’’
এ দিন একদম প্রথমে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিশিষ্ট আইনজীবী ও কংগ্রেস নেতা অরুণাভ ঘোষ সাত্তারের নির্যাতিতা মহিলার গ্রেফতার প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘সাত্তারের মহিলাকে গ্রেফতার করল। জেলে পাঠিয়ে দিল। আর যারা বোমা মজুত রাখল বোমা মারল তারা জামিন পেয়ে গেল।’’ এ দিন বক্তব্য রাখেন আইনজীবী ও প্রাক্তন মেয়র বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যও রাজ্যে গণতন্ত্র নেই বলে দাবি করেন।
এ ছাড়াও ওই সভায় বক্তব্য রাখেন ভারতী মুৎসুদ্দি, বিধানসভার প্রাক্তন অধ্যক্ষ হাসিম আব্দুল হালিম, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অশোকনাথ বসু, অম্বিকেশ মহাপাত্র সহ একাধিক বক্তা। এই সভার আয়োজক সেভ ডেমোক্রেসি ফোরাম হলেও দর্শক আসনে সিপিএম এর চেনা মুখের সংখ্যাই ছিল বেশি।