ট্রেকারের রেষারেষি, দুর্ঘটনা চলছেই

গত অগস্টেও বহরমপুর থানার ভাকুড়ি বকুলতলায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে ট্রেকার দুর্ঘটনায় মারা গিয়ছিলেন দু’জন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৭ ০২:০৮
Share:

ফেরেনি হুঁশ। নিজস্ব চিত্র

বারবারই দুর্ঘটনা ঘটছে। কিন্তু কারও হুঁশ ফিরছে না। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ পুলিশ-প্রশাসনও।

Advertisement

রেষারেষির চোটে নয়ানজুলিতে ট্রেকার উল্টে রবিবার মারা গিয়েছেন এক মহিলা। আহত হন জনা কুড়ি। বহরমপুর-হরিহরপাড়া রাজ্য সড়কে খিদিরপুরের কাছে বারুইপাড়া-মাঠপাড়ায় রবিবার ওই দুর্ঘটনা ঘটে। আহতেরা মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে কলেজে ভর্তি।

গত অগস্টেও বহরমপুর থানার ভাকুড়ি বকুলতলায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে ট্রেকার দুর্ঘটনায় মারা গিয়ছিলেন দু’জন। ধোপঘাটি ট্রেকার স্ট্যান্ড থেকে প্রতি দিন বিভিন্ন রুটে চারশো ট্রেকার চলে। আইএনটিউসি অনুমোদিত মুর্শিদাবাদ জেলা অটো-ট্রেকার শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ভাস্কর বাজপেয়ীর দাবি, মালিক পক্ষের চাপে চালক-খালাসিরা বাধ্য হন ছাদে ও পাদানিতে যাত্রী তুলতে। মজুরি কম লাগে লাইসেন্স নেই এমন চালকদেরও কাজে নেওয়া হচ্ছে।

Advertisement

শ্রমিক সংগঠনের নেতা তথা ট্রেকার চালক বাবু শেখের কথায়, ‘‘বাইশ বছর ধরে ট্রেকার চালাচ্ছি। এখন কম মজুরিতে যদি অদক্ষ চালক দিয়ে ট্রেকার চালানো হয়, তা হলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে। অনেক সময়ে খালাসিদের দিয়েও ট্রেকার চালাচ্ছেন এক শ্রেণির মালিক। ওঁরাই জোর করে ট্রেকারের ছাদে ও পাদানিতে যাত্রী তুলতে বাধ্য করেন।’’

মুর্শিদাবাদ জেলা অটো-ট্রেকার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নিহারুদ্দিন শেখের পাল্টা যুক্তি, ট্রেকারের বিমা, কর, যন্ত্রাংশ, টায়ার-টিউব থেকে ডিজেল-মবিলের দাম যা বেড়েছে, তাতে বাড়তি যাত্রী না তুলে উপায় নেই। পাশাপাশি টুকটুক, লছিমন থেকে বিভিন্ন গাড়ি যে ভাবে চলছে তাতে তাঁদের টিকে থাকাই দায় হয়ে উঠেছে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ট্রেকারের ছাদে ও পাদানিতে যাত্রী না তুললে গাড়ি চালাতে পারব না।’’

মুর্শিদাবাদের ডেপুটি পুলিশ সুপার (ট্র্যাফিক) বিকাশ ভাণ্ডারী জানান, ট্র্যাফিক আইন ভেঙে বাড়তি যাত্রী তোলায় প্রতি মাসেই কিছু ট্রেকার চালকের থেকে জরিমানা আদায় করা হয়। তবে তাঁর মতে, ‘‘এক শ্রেণির যাত্রী জোর করে ট্রেকারের ছাদে ও পাদানিতে দাঁড়িয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন। অনেক সময়ে তাঁদের জোর করে নামিয়েও দেওয়া হয়। মানুষ সচেতন না হলে পুলিশ-প্রশাসন কিছুই করতে পারবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন