পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল নবদ্বীপের এক মঠের সম্পাদক-সহ দু’জনের। সোমবার দুপুরে পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরার দলপরিপুরে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে। মৃতদের নাম সন্তোষ দাস অধিকারী (৫০) ও বিকাশ দাস অধিকারী (৪৪)। সন্তোষ দাস অধিকারী নবদ্বীপ শ্রীচৈতন্য সারস্বত মঠের সম্পাদক। বিকাশ দাস অধিকারী মঠের ভক্ত। ঘটনায় আহত হন আরও ৬ জন। তাঁদের মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের আঘাতও গুরুতর বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে।
মঠ ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মেদিনীপুর শহরের জানা পাড়ায় শ্রীচৈতন্য সারস্বত মঠের একটি শাখা রয়েছে। রবিবার থেকে সেখানে বিগ্রহ প্রতিষ্ঠার বার্ষিক উৎসব শুরু হবে। সেই উৎসবের আয়োজন তদারকি করতেই এ দিন সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ সম্পাদক-সহ আট জন মঠের প্রধান কেন্দ্র নবদ্বীপ থেকে গাড়িতে মেদিনীপুরের উদ্দেশে রওনা হন। মঠেরই এক ভক্ত বিশ্বরূপ দাস অধিকারী গাড়ি চালাচ্ছিলেন। দুপুর একটা নাগাদ খড়্গপুর-মুম্বই ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে ডেবরার দলপতিপুরে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা একটি লরির পিছনে ধাক্কা মেরে গাড়িটি উল্টে যায়। গাড়িতে চালকের পাশের আসনে বসা মঠ সম্পাদক সন্তোষ দাস অধিকারীর ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। স্থানীয়রা বাকিদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে বিকাশ দাস অধিকারীকেও মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে খবর, আহতদের মধ্যে গাড়ির চালক বিশ্বরূপ দাস ছাড়াও রয়েছেন কৃষ্ণপদ দাস, নরোত্তম দাস, গোপালকৃষ্ণ দাস অধিকারী, রামচন্দ্র দাস অধিকারী, নীলকৃষ্ণ দাস অধিকারী। তাঁদের মধ্যে তাঁরা সকলেই মেদিনীপুর মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন। মেদিনীপুর মেডিক্যালের সুপার যুগল কর বলেন, “জখমদের শারীরিক অবস্থার দিকে নজর রাখা হয়েছে।”
২০১০ সাল থেকে মঠের সম্পাদকের দায়িত্বভার সামলাচ্ছেন সন্তোষ দাস অধিকারী। মঠের প্রতিষ্ঠাতা শ্রীধর গোস্বামী মহারাজের শিষ্য ভক্তিসুন্দর গোবিন্দ মহারাজের কাছে সন্তোষ দাস অধিকারী দীক্ষা গ্রহণ করেন। গোবিন্দ মহারাজের পর ভক্তিনির্মল আচার্য মঠের সভাপতি হয়ে সন্তোষ দাস অধিকারীকে সম্পাদকের দায়িত্বভার প্রদান করেন। মঠের সাংগঠনিক কাজের বেশির ভাগই সামলাতেন তিনি। অন্য দিকে, বিকাশ দাস অধিকারী মঠের উলুবেড়িয়া জোনের ভারপ্রাপ্ত ছিলেন। এই দুর্ঘটনার পরে মেদিনীপুরের উৎসব আপাতত স্থগিত থাকছে বলে মঠ সূত্রে জানা গিয়েছে।