টোল আদায়ের প্রতিবাদে বীরনগরে রাস্তা অবরোধ

টোল আদায়ের নামে পুরসভা তোলাবাজি চলছে বলে অভিযোগ তুলে রাস্তা অবরোধ করলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের সঙ্গে যোগ দিলেন গাড়ির চালক-খালাসিরাও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রানাঘাট শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০০:৪২
Share:

টোল আদায়ের নামে পুরসভা তোলাবাজি চলছে বলে অভিযোগ তুলে রাস্তা অবরোধ করলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের সঙ্গে যোগ দিলেন গাড়ির চালক-খালাসিরাও।

Advertisement

মঙ্গলবার সকাল ন’টা থেকে নদিয়ার তাহেরপুর থানার বীরনগর রেলগেটের কাছে ওই অবরোধের ফলে রানাঘাট-কৃষ্ণনগর বাইপাস রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তার দু’ধারে দাঁড়িয়ে যায় গাড়ির সারি। তবে, অ্যাম্বুল্যান্স-সহ জরুরি পরিষেবার গাড়িকে অবরোধের বাইরে রাখা হয়েছিল। অবরোধকারীদের অভিযোগ, টোল আদায়ের নামে তোলাবাজি শুরু করেছে তৃণমূল পরিচালিত বীরনগর পুরসভা। যার কাছে যেমন খুশি টোল আদায় চলছে। দিনের পর দিন সে কথা জানিয়েও সুরুহা না হওয়ায় বাধ্য হয়ে অবরোধ, জানালেন অবরোধকারীরা। বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাসে ঘণ্টা পাঁচেক পরে অরবোধ তুলে নেওয়া হয়।

টোল আদায় নিয়ে কারচুপির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বীরনগর পুরসভার পুরপ্রধান পার্থকুমার চট্টোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, বোর্ড মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত মতো ট্যাক্স আদায় করা হচ্ছিল। ওই দায়িত্বে রয়েছে একটি এজেন্সি। তারা গাড়ি প্রতি পাঁচ ও দশ টাকা করে আদায় করছিল। তিনি বলেন, ‘‘পুরবাসীর আপত্তির কথা মাথায় রেখে আপাতত ট্যাক্স আদায় বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’ অবরোধের পিছনে রাজনৈতিক অভিসন্ধিও দেখছেন পুরপ্রধান। তাঁর কথায়, গত পুরসভা নির্বাচনে যাঁরা তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল, বকলমে তাঁরাই এলাকাবাসীকে প্ররোচিত করেছে। পুরসভার কর্তারা আরও দাবি করেন, পূর্ত দফতরের রাস্তায় ট্যাক্স আদায় করা হচ্ছিল না। ওই রাস্তার সঙ্গে পুরসভার সংযোগকারী রাস্তায় ট্যাক্স আদায় করা হচ্ছিল।

Advertisement

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে ওই রাস্তার তিন জায়গায় টোল আদায় করছিলেন কয়েক জন যুবক। যার কাছ থেকে যেমন খুশি ট্যাক্স আদায় করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ। কারোর কাছে বড় গাড়ি বাবদ একশো টাকা কারও কাছ থেকে আবার দু’শো টাকা। ছোট গাড়ি থেকেও নানা রকমের টাকা নেওয়া হচ্ছিল বলে অবরোধকারীদের অভিযোগ। আবার পরিচিত কিছু লোকের কাছ থেকে এই কোনও ট্যাক্সই নেওয়া হচ্ছিল না। এই নিয়ে গাড়ির চালকদের সঙ্গে ট্যাক্স আদায়কারীদের বিরোধ বাধে। কথাকাটাকাটি থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। শেষমেষ পথ অবরোধ করেন স্থানীয়েরা।

বীরনগর পুরসভার নির্দল কাউন্সিলর গোবিন্দচন্দ্র পোদ্দারের কথায়, ওই রাস্তায় ট্যাক্স আদায় করা ঠিক হবে না, তা বোর্ড মিটিংয়ে জানিয়েছিলাম। সেটা পুরপ্রধান মানেননি। তিনি বলেন, ‘‘সেই সময়ে কথা শুনলে হয়তো এই সমস্যা হত না।’’ রানাঘাটের ভারপ্রাপ্ত মহকুমাশাসক সুরেশচন্দ্র রানো জানান, পুরসভা তার নিজের রাস্তায় ট্যাক্স আদায় করতেই পারে। এ ক্ষেত্রে ঠিক কী হয়েছে, খতিয়ে দেখতে হবে। তবে অবরোধকারীদের দাবি, পুর এলাকার রাস্তায় নয় পূর্ত দফতরের রাস্তা থেকে টোল আদায় করা হচ্ছিল। তার প্রতিবাদেই অবরোধ।

হামলার নালিশ। ধর্মঘটের প্রচারে আয়োজিত এসইউসি-র সভায় হামলার অভিযোগ উঠল এসইউসি-র বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার খড়্গপুর বাসস্ট্যান্ডে ধর্মঘটের বিরোধিতায় তৃণমূেলর পক্ষ থেকে এক সভার আয়োজন করা হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়, দলের খড়্গপুর শহর সভাপতি দেবাশিস চৌধুরী, তৃণমূল নেতা প্রদীপ সরকার প্রমুখ। এ দিন তৃণমূলের প্রচার কর্মসূচি শুরুর আগে ওই এলাকায় ধর্মঘটের সমর্থনে প্রচার শুরু করে এসইউসি।

অভিযোগ, সেই সময় এসইউসির প্রচার ভ্যানে হামলার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের কর্মীদের বিরুদ্ধে। ছিঁড়ে দেওয়া হয় মাইকের তার। গাড়িতেও ভাঙচুর করার চেষ্টা হয়। এর প্রতিবাদে এ দিন সন্ধ্যায় বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সভা করে এসইউসি। দলের খড়্গপুর লোকাল কমিটির সম্পাদক সুরঞ্জন মহাপাত্র জানান, এই ধর্মঘট খেটে খাওয়া মানুষের স্বার্থে। তাঁদের প্রচার ভ্যানে তৃণমূলের লোকজন যে ভাবে হামলা চালিয়েছে, তার নিন্দাও জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, এ ভাবে এসইউসিকে ভয় দেখানো যায় না। ধর্মঘট সফল হবেই বলে দাবি তাঁর। অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলেন, “আমার কাছে এমন হামলার অভিযোগ কেউ করেনি। আমরা কর্মীদের শান্ত থাকতে বলেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন