Sagardighi By Election

বিক্ষিপ্ত অশান্তিতে ভোট মিটল সাগরদিঘিতে, ত্রিমুখী লড়াই হলেও জয়ের আশায় সব পক্ষই

রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত সাহার মৃত্যুর পর সাগরদিঘি আসনে উপনির্বাচনের আয়োজন। এই আসনে তৃণমূল জয়ী হয়েছে ৩ বার। সেই আসন ধরে রাখা মর্যাদার লড়াই শাসকদলের কাছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সাগরদিঘি শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২০:৩৯
Share:

বিক্ষিপ্ত অশান্তির মধ্যে ভোট সাগরদিঘিতে। — নিজস্ব চিত্র।

বিক্ষিপ্ত অশান্তির মধ্যে ভোট মিটল মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি আসনে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৭৩.৪৯ শতাংশ। সাগরদিঘি আসনে লড়াই ত্রিমুখী। তবে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী সব পক্ষই।

Advertisement

রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত সাহার মৃত্যুর পর সাগরদিঘি আসনে উপনির্বাচনের আয়োজন। এই আসনে তৃণমূল জয়ী হয়েছে ৩ বার। সেই আসন ধরে রাখা মর্যাদার লড়াই শাসকদলের কাছে। আবার রাজ্যে যে সময়ে এই উপনির্বাচন হচ্ছে সেই সময়ে শাসকদলের একাধিক নেতার বিরুদ্ধে উঠেছে দুর্নীতির অভিযোগ। এই আবহে ওই আসনে বিরোধীরা কতটা দাঁত ফোটাতে পারবে তাও দেখার বিষয়। সাগরদিঘিতে প্রার্থী দেয়নি বামেরা। তাদের সমর্থন কংগ্রেসের দিকে। ফলে এখানে লড়াই ত্রিমুখী। সোবার ভোট শেষের পর জয় নিয়ে আশাবাদী সব দলই। তৃণমূলের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে বিজেপি প্রার্থী দিলীপ সাহার বক্তব্য, ‘‘বিভিন্ন জায়গায় ভোট প্রভাবিত করার চেষ্টা হয়েছে। সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করে ছাপ্পা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। সাধারণ মানুষ তা প্রতিরোধ করেছেন। পুলিশকে দিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নিষ্ক্রিয় রাখার চেষ্টা হয়েছে। তবে তা সব ক্ষেত্রে সফল হয়নি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘আমরা ফলাফলের ব্যাপারে অত্যন্ত আশাবাদী।’’

তৃণমূলকে বিঁধে একই সুর কংগ্রেস প্রার্থী বাইরন বিশ্বাসের গলাতেও। তিনি বলেন, ‘‘সংখ্যালঘু এলাকাগুলিতে তৃণমূল ভয় দেখিয়েছে। তবুও মানুষ ভোট দেওয়ার জন্য বেরিয়েছেন। আমাকে বিভিন্ন জায়গায় আটকে দিয়ে ভয়ের পরিবেশ তৈরির চেষ্টা হয়েছিল। তা ব্যর্থ হয়েছে।’’ তাঁর আত্নবিশ্বাসী মন্তব্য, ‘‘জয় শুধু সময়ের অপেক্ষা।’’ কংগ্রেসের জয় নিশ্চিত বলে দাবি করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও।

Advertisement

সাগরদিঘিতে তৃণমূল প্রার্থী সুব্রত জিতেছিলেন ২০১১ সালে। ২০১৬ সালে তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ প্রার্থী ছিল ওই আসনে। তার ফলে চতুর্মুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জোড়াফুল শিবিরের ভোট কমলেও জয় পায় জোড়াফুল শিবির। ২০২১ সালে ওই আসনে বিজেপির সংখ্যালঘু প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও জেতেন সুব্রতই। তিনি ভোট পান ৫০.৯৫%। তৃণমূলের গড় সাগরদিঘিতে উপনির্বাচন নিয়ে জোড়াপুলের প্রার্থী দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ভাল ভোট হয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় বাহিনী বেশ কিছু জায়গায় বাড়াবাড়ি করেছে। মানুষ আমাদের সঙ্গে আছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নে ভোট হয়েছে। মার্জিন কত বাড়বে তাই নিয়েই চিন্তা করছি।’’ তবে এই নির্বাচনে ফ্যাক্টর সাগরদিঘি বিধানসভা এলাকার প্রায় আড়াই লক্ষ ভোটারের মধ্যে সাগরদিঘির ৩০ হাজার পরিযায়ী শ্রমিক। কারণ, ভোট দিতে এক দিনের জন্য ঘরে ফিরতে নারাজ তাঁদের অনেকেই। ২ মার্চ অবশ্য স্পষ্ট হয়ে যাবে সাগরদিঘি কার দখলে থাকবে।

সোমবার উপনির্বাচন ঘিরে দিনভর বিক্ষিপ্ত অশান্তি হয়েছে সাগরদিঘিতে। শাসকদলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে বিজেপি এবং কংগ্রেস। এই নিয়ে বিজেপি এবং কংগ্রেসের মধ্যে ‘অশুভ আঁতাঁত’ রয়েছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেছে তৃণমূলও। সোমবার ভোটগ্রহণের পর বিজেপির কয়েক জন এজেন্টকে পুলিশ সাগরদিঘি থানায় আটকে রাখে বলে অভিযোগ করেছে বিজেপি। এই নিয়ে থানা ঘেরাও করেন বিজেপি প্রার্থী-সহ দলীয় কর্মী-সমর্থকরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন