TMC MLA

সত্যজিতের ক্লাবে পুজো নেই এ বারও

বছর খানেক আগে সরস্বতী পুজোর আগের সন্ধ্যায় পাড়ার ক্লাবের মণ্ডপের সামনে সাংস্কৃতির অনুষ্ঠান চলাকালীন গুলি করে খুন করা হয়েছিল সত্যজিৎকে।

Advertisement

সুস্মিত হালদার 

হাঁসখালি শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২০ ০১:২৭
Share:

বাড়িতে সত্যজিতের ছেলে।

প্লাস্টিকের চেয়ারে বসে আপনমনে মোবাইল ঘাঁটছিল বছর আড়াইয়ের সম্যজিৎ। বুধবার সরস্বতী পুজোর দিন। স্বাভাবিক অবস্থায় বাড়িতে বা পাড়ায় এই সময় পুজোর আয়োজনের ব্যস্ততা, আনন্দের মধ্যে থাকার কথা তার। কিন্তু তার চার দিকে ছিল শোকের আবহাওয়া। যে মণ্ডপের মধ্যে সে বসে রয়েছে সেটি তার বাবা প্রয়াত তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাসের বাৎসরিক কাজের জন্য বাঁধা হয়েছে।

Advertisement

বছর খানেক আগে সরস্বতী পুজোর আগের সন্ধ্যায় পাড়ার ক্লাবের মণ্ডপের সামনে সাংস্কৃতির অনুষ্ঠান চলাকালীন গুলি করে খুন করা হয়েছিল সত্যজিৎকে। দিনটা ছিল ৯ ফেব্রুয়ারি। তিথি অনুযায়ী বুধবার সরস্বতী পুজোর দিন ছিল বাৎসরিকের কাজ।

উঠোনের ডান দিকে টিনের ঘরটা ছিল সত্যজিৎ-এর অফিস। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সেই ঘরেই একসময় উপচে পড়ত ভিড়। গত এক বছরে সব বদলে গিয়েছে। ঘরে ঝুল জমেছে। লোকজন আর কেউই প্রায় আসে না। ছেলের দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকতে থাকতে চোয়াল শক্ত হয় সত্যজিৎ-এর স্ত্রী রূপালি বিশ্বাসের। বলেন, “আমি সেই আসল মাথার সন্ধান চাই। বড় কোনও মাথা ছাড়া এ ভাবে আমার স্বামীকে কেউ খুন করতে পারে না। আমার সন্তানকে যারা পিতৃহারা করেছে তাদের কঠিন শাস্তি চাই আমি।”

Advertisement

সত্যজিৎ বরাবর মেতে থাকতেন নিজের ক্লাবের সরস্বতী পুজো নিয়ে। সেই ক্লাবে এ বারও পুজো হয়নি। গোটা এলাকায় শোকের ছায়া। শুধু ফুলবাড়ি গ্রামের ভিতরে থেকে মাইকে গানের শব্দ ভেসে আসে।

অথচ সত্যজিৎ ক্লাবের হাল ধরার পর সরস্বতী পুজোর জৌলুস ছিল দেখার মতো। পাঁচ দিন ধরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হত। সেই মণ্ডপেই খুন হন সত্যজিৎ। সেই মাঠ ফাঁকা। পুজো নেই। এলাকার যুবক রকি বিশ্বাস, মধুসূদন বিশ্বাসেরা বলছেন, “সত্যদা নেই। তাই পুজোর কথা ভাবতেই পারছি না।”

গত বছরও পুজো হয়নি প্রতিমার। এমনিই বিসর্জন করে দেওয়া হয়েছিল। পুজোর দিন মঞ্চের সামনে নিয়ে আসা হয়েছিল সত্যজিতের মৃতদেহ। এর পর রূপালিকে লোকসভা ভোটে রানাঘাট কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। কিন্তু তাঁকে হারতে হয়েছে।

এখন তিনি পুরোপুরি ছেলেকে নিয়েই থাকেন। মাঝেমধ্যে ডাক পেলে দলের মিটিং-এ যান। সত্যজিৎ দক্ষিণপাড়া রাধাসুন্দরী পাল চৌধুরী বিদ্যাপিঠ স্কুলের করণিক ছিলেন। সত্যজিৎ এর চাকরিটা পেয়েছেন রূপালি। স্কুল আর সন্তান নিয়েই কেটে যায় তাঁর জীবন। নিজেকে ব্যস্ত রাখার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন