প্রতীকী ছবি।
নাবার্ডের কাছে প্রশংসা কুড়িয়েছে নদিয়া জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্ক। কৃষ্ণনগরে এসে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সেই ব্যাঙ্কের প্রশংসা করে গিয়েছেন। তবে এত দিন সমবায়ের অধীন গোষ্ঠীগুলি সরকারি কাজের বরাত তেমন একটা পেতেন না। এ বার সেই শিকে ছিঁড়ল।
জেলা সর্বশিক্ষা মিশন থেকে প্রতিটি ব্লকের প্রায় ৫০টি করে সমবায়ের অধীনে থাকা স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে পোশাক তৈরির জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। ওই গোষ্ঠীগুলির নাম পাঠানো হবে বিভিন্ন চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকদের কাছে। সেখান থেকে স্কুলগুলি পছন্দের গোষ্ঠীকে কাজের বরাত দেবে।
নদিয়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) প্রিয়াঙ্কা সিংলা জেলা সমবায় দফতরের সহকারী নিবন্ধক ও বিডিওদের সঙ্গে বৈঠক করে ঠিক করেছেন, এ বছর পোশাক তৈরির বরাত পাবে সমবায়ের মাধ্যমে গঠিত স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। নদিয়া জেলায় প্রায় চোদ্দো হাজার স্বনির্ভর দল রয়েছে। সদস্য সংখ্যা লক্ষাধিক। স্কুলের পোশাক তৈরিরও বরাত পাওয়ায় তাঁদের আর্থিক হাল ফিরবে বলে প্রশাসনের কর্তারা মনে করছেন। সমবায় দফতরের সেন্ট্রাল জোনের যুগ্ম নিবন্ধক মহম্মদ ইনাসউদ্দিন বলেন, ‘‘এটা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির ক্ষেত্রে একটা বড় সাফল্য।’’
জেলা সর্বশিক্ষা মিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ পড়ুয়া রয়েছে জেলায়। স্কুলের পোশাক তৈরি করার জন্য ফি বছর পড়ুয়া পিছু ৪০০ টাকা ধার্য করা হয়। এর আগে জাতীয় গ্রামীণ জীবিকা মিশনের অধীনে তৈরি গোষ্ঠীগুলিকে পোশাক তৈরির কিছুটা বরাত দেওয়া হয়েছিল। সরকারি সংস্থা মঞ্জুষাও বরাত পায়।
ধুবুলিয়ার দেশবন্ধু হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক হায়দার আলি বিশ্বাস বলেন, ‘‘কোনও লাভজনক সংস্থার পরিবর্তে প্রত্যন্ত গ্রামের মহিলাদের পোশাক তৈরির দায়িত্ব দেওয়াটা খুব ভাল সিদ্ধান্ত।’’ এই প্রসঙ্গে জেলা সর্বশিক্ষা মিশনের প্রকল্প আধিকারিক সচ্ছিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ইতিমধ্যে গোষ্ঠী বাছাইয়ের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। ধুবুলিয়ার একটি গোষ্ঠীর সদস্য আনোয়ারা বিবি জানাচ্ছেন, বছর খানেক আগে তিনি সেলাইয়ের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। এ বার পোশাক তৈরির বরাত পেলে শেখা বিদ্যা কাজে লাগবে। অনটনের সংসারে কিছু উপার্জন হবে।
মুর্শিদাবাদে সমবায় দফতরের অধীনে ১৬ হাজার গোষ্ঠী রয়েছে। দফতরের সহকারি নিবন্ধক বিনয় বিশ্বাস জানান, বিষয়টি নিয়ে তিনি জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করবেন। ডোমকলের বাসিন্দা ওয়াজেদা বিবি জানান, তাঁর গোষ্ঠীর অনেকেই সেলাইয়ের কাজ জানান। এ রকম সরকারি কাজের বরাত পেলে মেয়েদের আর্থিক হাল ফিরবে।
সহ প্রতিবেদন: সামসুদ্দিন বিশ্বাস