সৈকত সাহা। —নিজস্ব চিত্র।
গুছিয়ে একটা নিজস্বী। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে দেওয়া। তারপর অজস্র ‘লাইক’, ‘কমেন্ট’ কিংবা ‘ওয়াও’। এই নিজস্বী-চক্করে পড়ে কখনও রেললাইন, কখনও সমুদ্রে মারাও গিয়েছেন অনেকে। কিন্তু তারপরেও যে হুঁশ ফেরেনি তা ফের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল নবদ্বীপের ঘটনা। শুক্রবার সকালে নবদ্বীপের গঙ্গায় নিজস্বী তুলতে গিয়ে তলিয়ে গেলেন শক্তিনগরের বাসিন্দা সৈকত সাহা (১৮)। পরের দিন তাঁর দেহ মেলে নবদ্বীপ থেকে প্রায় ষোলো কিলোমিটার দূরে, সমুদ্রগড়ের জ্বালুইডাঙা ঘাটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ রানিরঘাটে স্নান করতে নামেন সৈকত, তাঁর মা ও বন্ধু অভিষেক। তাঁদের স্নান হয়ে যাওয়ার পরে ‘সেল্ফি’ তুলতে ফের জলে নামেন সৈকত ও অভিষেক। তাঁদের মতিগতি দেখে আগেই সাবধান করেছিলেন ঘাটের অন্য লোকজন। কিন্তু সে কথা তাঁদের কৈনে পৌঁছয়নি। দু’জনেই ডুবে ছিলেন স্মার্টফোনের চওড়া স্ক্রিনে। আচমকাই চিৎকার করে ওঠেন অভিষেক। সঙ্গে সঙ্গে লোকজন চলে এসে অভিষেককে উদ্ধার করেন। কিন্তু মারা যান সৈকত।
সৈকতের বাবা সুব্রতবাবু জানান, শনিবার বাড়িতে কালীপুজো ছিল। সেই কারণেই সপরিবার তাঁরা গঙ্গাস্নানে এসেছিলেন। তাঁর কথধায়, ‘‘সাঁতার জাননত না। বোকার মতো জলে নেমে ছবি তুলতে গিয়েই ছেলেটা শেষ হয়ে গেল।” একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে কেবলই জ্ঞান হারাচ্ছেন সৈকতের মা।
রানিরঘাটেই ছিলেন পার্বতী নন্দী। তিনি বলেন, ‘‘জলে নেমে দু’জনেই খুব হইহই করছিল। আমি ধমক দিলেও কথা শোনেনি।”