আধার নেই, সাহায্যও নয়

সরস্বতীর বাপের বাড়ি ছিল নবদ্বীপে। শ্বশুরবাড়িও সেখানেই। তাঁর বয়স যখন পঁচিশ বছর, স্বামীকে হারান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শান্তিপুর শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৯ ০১:৫৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

আক্ষরিক অর্থেই তাঁর চালচুলো নেই। জরাজীর্ণ বাড়িতে কোনও মতে এত দিন বাস করে এসেছেন বৃদ্ধা সরস্বতী গুঁই।

Advertisement

না আছে তাঁর ভোটার কার্ড, না আধার কার্ড। পরিচয়পত্র না থাকায় সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত বছর আশির সরস্বতী। শান্তিপুরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের রাজপুতপাড়া লেনে তাঁর বাড়িটি সম্প্রতি মেরামত করে দিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারাই। কিন্তু পরিচয়পত্রের সমস্যা কী ভাবে মিটবে, সেই চিন্তা রয়েই গিয়েছে।

সরস্বতীর বাপের বাড়ি ছিল নবদ্বীপে। শ্বশুরবাড়িও সেখানেই। তাঁর বয়স যখন পঁচিশ বছর, স্বামীকে হারান। স্বামী একটি সোনার দোকানে কাজ করতেন। তাঁর মৃত্যুর পরে সরস্বতী চলে আসেন শান্তিপুরে। চার ছেলেমেয়ের মধ্যে শুধু এক মেয়ে জীবিত। বিবাহিতা সেই মেয়ে থাকেন শান্তিপুরেই। তিনিও বিধবা, সংসারে দারিদ্র্য। মেয়ে-জামাই এক সময়ে সামান্য জমি কিনেছিলেন ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে রাজপুতপাড়া লেনে।

Advertisement

সরস্বতী জানাচ্ছেন, এক সময়ে তাঁর রেশন কার্ড ছিল। সেই কার্ডের কী হল, তা আর বলতে পারেন না তিনি। তবে আধার কার্ড, ভোটার কার্ড কিছুই নেই। শেষ বয়সে এসে ‘পরিচয়’-হীন সরস্বতী বলেন, “এগুলো কেউ আমায় করিয়ে দেয়নি। কেউ বলেওনি।”

পরিচয়পত্র না থাকায় সরকারি আবাস প্রকল্প, বিধবা ভাতা, বার্ধক্য ভাতার মতো সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে সরস্বতী যেমন বঞ্চিত, তেমন জাতীয় নাগরিকপঞ্জি নিয়ে তৎপরতা শুরু হলেও ভোগান্তির শিকার হতে পারেন তিনি।। যারা তাঁর বাড়ি সংস্কারের বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছেন, তাঁদের অন্যতম সুব্রত মৈত্র বলেন, “ওঁর মতো বহু মানুষ আছেন যাঁরা পরিচয়পত্রের অভাবে সরকারি সুযোগ সুবিধা পান না। এঁদের ভোটার কার্ড নেই, তাই ভোট নেই। সেই কারণেই কেউ তাঁদের দিকে তাকায় না।”

১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার বিভাস ঘোষ বলেন, “ওঁর সরকারি পরিচয়পত্র না থাকায় সরকারি সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন না। উনি যদি এই বিষয়ে সাহায্য চান, চেষ্টা করব।” রানাঘাটের মহকুমশাসক হরসিমরন সিংহ বলেন, “নির্দিষ্ট নথিপত্র ও তথ্যপ্রমাণ দিয়ে ভোটার কার্ড বা আধার কার্ড করাতে হয়। প্রশাসনের সঙ্গে ওঁরা যোগাযোগ করতে পারেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন