Riyadh

বিদেশে মৃত্যু, দেহ ফেরানো নিয়ে দুশ্চিন্তা

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় চার বছর আগে সৌদি আরবের রিয়াধ শহরে একটি সংস্থার অধীনে দিনমজুরের কাজ করতে রওনা দিয়েছিলেন সিদ্দিক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

করিমপুর শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০২০ ০১:১৪
Share:

শোকে ভেঙে পড়েছেন সৌদি আরবে মৃত সিদ্দিক খানের পরিজনেরা। ইনসেটে, মৃত সিদ্দিক খান। রবিবার মুরুটিয়ার দিঘলকান্তিতে। নিজস্ব চিত্র

বিদেশে কাজে গিয়ে মৃত্যু হল মুরুটিয়ার দীঘলকান্দির বাসিন্দা এক ব্যক্তির। মৃতের নাম সিদ্দিক খান (৪০)। করোনা পরিস্থিতিতে তাঁর মৃতদেহ কী ভাবে দেশে ফেরানো যাবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় মৃতের পরিবার।

Advertisement

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় চার বছর আগে সৌদি আরবের রিয়াধ শহরে একটি সংস্থার অধীনে দিনমজুরের কাজ করতে রওনা দিয়েছিলেন সিদ্দিক। দু’বছর আগে একবার বাড়ি ফিরেছিলেন। দেড় মাস ছুটি কাটিয়ে আবার ফিরে গিয়েছিলেন। বাড়িতে তাঁর স্ত্রী, দশম শ্রেণির ছাত্রী মেয়ে এবং ১১ বছরের এক ছেলে রয়েছে। গত বুধবার রাতে রিয়াধ থেকে সিদ্দিকের এক সহকর্মী এবং এলাকার বাসিন্দা ফোন করে তাঁর পরিবারকে মৃত্যুর খবর জানান। তারপর থেকে বাড়িতে শোকের পরিবেশ।

খবর পেয়ে সিদ্দিকের গ্রামের বাড়িতে ভিড় করছেন আত্মীয় পরিজনরা। সিদ্দিকের স্ত্রী বারবার সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ছেন। তিনি বলেন, ‘‘অভাবের কারণেই দূর দেশে কাজে গিয়েছিল বাড়তি রোজগারের আশায়। কাছে না থাকার কষ্ট থাকলেও তার পাঠানো টাকাতেই ছেলে মেয়ের পড়াশোনা আর সংসার চলছিল।’’ তিনি জানান, স্বামী প্রতিদিন ফোন করে বাড়ির খবর নিতেন। এখন তাঁর মৃত্যুতে নাবালক ছেলে-মেয়েকে নিয়ে কীভাবে সংসার চালাবেন, সেটাই বুঝে উঠতে পারছেন না। তাঁর কথায়, “স্বামীর মৃতদেহ যদি কোনও ভাবে বাড়িতে আনা সম্ভব হয়, সে ব্যাপারে প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করছি।”

Advertisement

মৃতের ভাই মুস্তাকিন খান জানান, এই গ্রামের আরও কয়েকজন সেখানে এক জায়গায় একসঙ্গে কাজ করেন। তাঁদের একজন আজিজ সেখ ফোনে জানিয়েছেন, মঙ্গলবার ওখানে সিদ্দিক-সহ সবাই কাজে হাজির ছিলেন। দুপুরের খাওয়ার সময় আচমকা সিদ্দিককে গলায় ফাঁস লাগানো ঝুলন্ত অবস্থায় দেখা যায়।

বিষয়টি জানার পর মুরুটিয়া থানায় ও স্থানীয় ব্লক নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে। এর আগেও এলাকার বেশ কিছু মানুষ বিদেশে মারা যাওয়ার পরে মৃতদেহ বাড়িতে ফিরেছিল। এবার করোনার কারণে স্বাভাবিক পরিস্থিতি নেই। তবুও যদি প্রশাসন উদ্যোগী হয়ে দেহ আনার ব্যবস্থা করে তার জন্য সবার কাছে জানানো হচ্ছে।

মৃতের আরেক ভাই সাহাজান খান বলেন, “ভাইয়ের মৃত্যু নিয়ে অনেক প্রশ্ন ও সন্দেহ রয়েছে। কিন্তু দূর দেশে থেকে তার তদন্ত সম্ভব নয়। এখন সংস্থার আর্থিক সুবিধা ও বকেয়া তিন মাসের বেতন পেলে পরিবারের সদস্যরা উপকৃত হত। কিন্তু এখান থেকে কী ভাবে যোগাযোগ করব আমরা তা বুঝতে পারছি না।”

করিমপুর ২ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ ইরাজুল মণ্ডল জানান, বিশ্বব্যাপী করোনার কারণে এখন দেশ বিদেশের মধ্যে বিমান চলাচলে অনেকে নিষেধাজ্ঞা ও নিয়ম চালু আছে। তবুও মৃতদেহ আনার ব্যাপারে দলীয় নেতৃত্ব ও প্রশাসনকে জানিয়ে চেষ্টা করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন