বাড়িতে অসুস্থ রোগী। আয়া চাই?
ফিউজ উড়ে গিয়েছে। ইলেকট্রিক মিস্ত্রি চাই?
ঘরের ছাদ ফুটো হয়ে জল পড়ছে, ঢালাই করতে হবে। রাজমিস্ত্রি লাগবে। কিংবা ঘরের দরজা-জানলাটা পুরনো হয়েছে, বদলাতে হবে, ছুতোর মিস্ত্রি প্রয়োজন।
এক ফোনেই বাজিমাত।
নির্দিষ্ট নম্বর ডায়াল করলেই হাতের কাছে হাজির প্রশিক্ষিত নার্স থেকে ইলেক্ট্রিক মিস্ত্রি, আয়া, রাজমিস্ত্রি থেকে ছুতোর মিস্ত্রি।
দ্বিজেন্দ্রলাল রায় বহুমুখী পরিষেবা প্রদান কেন্দ্রের (নগর জীবিকা কেন্দ্রের) মাধ্যমে শহরের বাসিন্দাদের এমনই সব পরিষেবা দিতে চলেছে কৃষ্ণনগর পুরসভা।
সম্প্রতি কৃষ্ণনগরের জেলখানা রোডে ফ্লাড শেল্টারের তিনতলায় উদ্বোধন হয়েছে ‘নগর জীবিকা কেন্দ্রের’। সেখান থেকে যেমন মিলবে কলের মিস্ত্রি থেকে আয়া, তেমনই স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে ব্যবসা সংক্রান্ত তথ্যও দেওয়া হবে। কী ভাবে প্রশিক্ষণ নেওয়া যায়, কী ভাবে উৎপাদিত সামগ্রী বিপণন করা যায়, সে সংক্রান্তও পরামর্শ দেবে পুরসভা। দীনদয়াল অন্তঃদ্বয় যোজনা এবং পশ্চিমবঙ্গ নগর জীবিকা মিশনের যৌথ উদ্যোগে ‘নগর জীবিকা কেন্দ্র’।
কৃষ্ণনগর পুরসভার চেয়ারম্যান অসীমকুমার সাহা বলেন, “টিভি সারাতে হবে, রাজমিস্ত্রি থেকে শুরু করে কলের মিস্ত্রি, গাড়ির চালক, গৃহশিক্ষক-সহ বাড়ির নানা পরিষেবার জন্য সঠিক লোকের খোঁজ দেবে নগর জীবিকা কেন্দ্র। এই সব পরিষেবার জন্য কেউ ফোনে যোগাযোগ করতে পারেন, আবার সরাসরি জীবিকা কেন্দ্রে গিয়েও যোগাযোগ করতে পারেন।’’ পুরসভার টোল ফ্রি নম্বর হল ৯৪৭৪৭৫২১৭৬। সোমবার থেকে নম্বরটি চালু হয়ে যাবে। তা ছাড়াও কৃষ্ণনগর পুরসভার হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরেও (৭৭৯৭৭১৭৭৭৪) যোগাযোগ করা যেতে পারে।”
হঠাৎ এমন উদ্যোগ?
পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে, এমন একটা উদ্যোগে এক দিকে যেমন সাধারণ বাসিন্দাদের উপকার হবে, তেমনই বহু লোক কাজ পাবেন। কৃষ্ণনগর পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রশিক্ষিত নার্স থেকে শুরু করে আয়া, কলের মিস্ত্রি, ছুতোর মিস্ত্রি, রাজমিস্ত্রি, গৃহস্থালির কাজ জানা পুরুষ কিংবা মহিলা, বিউটিশিয়ান থেকে মোটর মেকানিক, ফিজিওথেরাপিস্টের নাম রেজিস্ট্রেশন করা হচ্ছে। নেওয়া হচ্ছে সেলাই ও হাতের কাজ জানা পুরুষ ও মহিলা, রান্নার লোক, অঙ্কন শিক্ষক, গৃহশিক্ষক, গাড়ির চালক, বাগান পরিষ্কার করার লোক। তবে রেজিস্ট্রেশনের আগে পরীক্ষা করে দেখে নেওয়া হচ্ছে, তাঁরা আদৌ কাজটা জানেন কি না। বা কেমন পারছেন। ইতিমধ্যেই ৮০ জনের নাম রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে। তাঁদের ঠিকানা ও ফোন নম্বরও রেখে দিচ্ছে পুরসভা। পরিষেবার জন্য কেমন পারিশ্রমিক দিতে হবে, তা-ও ঠিক করে দেবে পুরসভা।
এমন অভিনব ব্যবস্থায় খুশি বাসিন্দারাও। আমিনবাজারের গৃহবধূ সুস্মিতা ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘ঘরে-বাইরে সব কাজই সামলাতে হয় আমাকে। ফোন ঘোরালেই যদি কাজ হয়ে যায়, দারুণ হবে!’’ একই বক্তব্য নগেন্দ্রনগরের বাসিন্দা দেবাশিস বিশ্বাসের। বললেন, ‘‘দারুণ ব্যবস্থা। পুরসভাকে ধন্যবাদ।’’