পুলিশ নিয়ে মাদ্রাসায়, গন্ডগোলে উড়ল ইট-পাথর

এ দিনই প্রথম নয়, বিতর্কিত ওই প্রধানশিক্ষককে মঙ্গলবারও পুলিশ প্রহরায় স্কুলে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। বিক্ষোভে থমকে গিয়েছিলেন স্কুল গেটেই। বৃহস্পতিবার শমসেরগঞ্জ থানার ওসি অমিত ভকত-সহ বেশ কয়েক জন মিলে তাঁকে নিয়ে বেলা পৌনে ১১টা নাগাদ হাইমাদ্রাসায় যান। এ দিন ছিল পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের সরকারি পাঠ্যপুস্তক জমা দেওয়ার দিন। সেই জন্য স্কুলে হাজির ছিল প্রায় হাজার চারেক ছাত্রছাত্রী। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ধুলিয়ান শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:২৭
Share:

ভাঙচুর করা হয়েছে পুলিশের গাড়ি। নিজস্ব চিত্র

হাইকোর্টের নির্দেশে ডিবিএস হাইমাদ্রাসায় পুলিশ প্রহরায় ঢুকতে চেয়েছিলেন প্রধানশিক্ষক রফিকুল ইসলাম। আর তার জেরেই বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রায় চার ঘণ্টা ধরে চলল তাণ্ডব। পুলিশের উপর উড়ে এল অনর্গল ইট-পাথর। পুলিশের দিক থেকে পাল্টা ছুটে গেল লাঠি, কাঁদানে গ্যাস। ভাঙচুর হল পুলিশের পাঁচটি গাড়ি। আহত হলেন জঙ্গিপুরের এসডিপিও-সহ চার জন পুলিশকর্মী। গ্রেফতার করা হল পাঁচ বিক্ষোভকারীকে।

Advertisement

এ দিনই প্রথম নয়, বিতর্কিত ওই প্রধানশিক্ষককে মঙ্গলবারও পুলিশ প্রহরায় স্কুলে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। বিক্ষোভে থমকে গিয়েছিলেন স্কুল গেটেই। বৃহস্পতিবার শমসেরগঞ্জ থানার ওসি অমিত ভকত-সহ বেশ কয়েক জন মিলে তাঁকে নিয়ে বেলা পৌনে ১১টা নাগাদ হাইমাদ্রাসায় যান। এ দিন ছিল পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের সরকারি পাঠ্যপুস্তক জমা দেওয়ার দিন। সেই জন্য স্কুলে হাজির ছিল প্রায় হাজার চারেক ছাত্রছাত্রী।

পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে প্রধানশিক্ষক হাইমাদ্রাসায় ঢুকতেই উত্তেজিত হয়ে ছাত্রেরা তাঁকে তাড়া করে। বেগতিক দেখে পুলিশ তাঁকে নিয়ে টিচার্স রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন। এই সময় ঘরের বাইরে থাকা সিভিক কর্মীরা ছাত্রদের উপর লাঠি চালাতে শুরু করে বলে অভিযোগ। তাতেই উত্তেজনা ছড়ায়। হাজার খানেক ছাত্র উত্তেজিত হয়ে শুরু করে ভাঙচুর। ভেঙে দেওয়া হয় স্কুলের জানলা, পুলিশের গাড়ির কাচ।

Advertisement

অভিযোগ এই সময়ে বোমাও পড়তে শুরু করে। খবর পেয়ে সুতি ও ফরাক্কা থানা থেকে বাড়তি পুলিশ যায় ঘটনাস্থলে। যান জঙ্গিপুরের এসডিপিও-সহ কমব্যাট ফোর্স। অভিযোগ, এই সময়ে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের উপর লাঠি চালায়। বেশ কয়েক রাউন্ড কাঁদানে গ্যাসও ছোড়া হয়। এর পরেই ছত্রভঙ্গ হয়ে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের উপর ইট ছুড়তে শুরু করে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই সময়ে পুলিশ দু’রাউন্ড গুলিও চালায়।

জঙ্গিপুরের এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আদালতের নির্দেশেই ওই হাইমাদ্রাসায় প্রধান শিক্ষককে নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। পুলিশের উপর এ ভাবে হামলা মানা যায় না। ছাত্রদের সামনে রেখে কিছু স্থানীয় মানুষ এই হামলা চালিয়েছে। তবে পুলিশ গুলি চালায়নি।’’

২০১৪ প্রধানশিক্ষক পদে ওই মাদ্রাসায় যোগ দেন রফিকুল। কিছু দিনের মধ্যে পরিচালন সমিতির সঙ্গে বিবাদ বাধে তাঁর। তাকে একাধিক বার শোকজের পর সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত হলেও প্রধান শিক্ষক তাঁর বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। সেই রায়েই পুলিশ নিয়ে মাদ্রাসায় ঢুকতে গিয়েছিলেন তিনি। সেই বিবাদই ফের মাথা চাড়া দেয় এ দিন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন