নদী-গ্রাস: ভাঙছে গঙ্গার পাড়। সোমবার চাকদহে। নিজস্ব চিত্র
আশঙ্কাটা ঘুরপাক খাচ্ছিল ঘূর্ণি জলের মতোই। সেই আশঙ্কাকে সত্যি করে গঙ্গাগর্ভে তলিয়ে গেল আরও ছ’টি বাড়ি। সঙ্গে ২০ ফুটের বেশি মোরামের রাস্তা। ভাগীরথীতে জল কমার সঙ্গে সঙ্গেই আরও ভয়াল হল চাকদহের সরাটি এলাকার ভাঙন। স্থানীয় বাসিন্দাদের তৎপরতায় আরও বড় বিপদ এড়ানো গিয়েছে। আটটি পরিবারের সদস্যদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।
নাগাড়ে বৃষ্টিতে টানা সাত দিন ধরে জল বেড়েছে ভাগীরথীতে। সেই জল কমতেই ভাঙন শুরু হয়েছে চাকদহের সরাটি গ্রামপঞ্চায়েতের গঙ্গা তীরবর্তী এলাকায়। এই এলাকাগুলি দীর্ঘদিন ধরেই ভাঙন কবলিত। জল কমতে শুরু করার পরে শনিবার রাত থেকে ভাঙন শুরু হয় এই এলাকায়। রাতেই নদীতে তলিয়ে তলিয়ে যায় ছ’টি বাড়ি। তলিয়ে যায় কয়েকশো বিঘা চাষের জমি। রবিবার প্রশাসন জানিয়েছিল, ৫০টি বাড়ি বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। সেই বাড়িগুলিতে নিয়ে আশঙ্কা ছিলই। রবিবার রাতে সেই আশঙ্কা সত্যি প্রমাণিত হয়। পাড় ভাঙায় নদী পাড়ের আটটি বাড়ি তলিয়ে যায়। ভেঙে গিয়েছে ২০ ফুট রাস্তা। এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা দেখা গিয়েছে।
ভাঙনের আশঙ্কা ছিল বলে, এলাকার অনেকেই বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। কয়েকজন ঘরের ইট এবং গাছ কেটে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। স্থানীয় বাসিন্দা রমজান বাগানিয়া, কোরবান মণ্ডল, আনসার মোল্লারা বলেন, “সব তো শেষ হয়ে গেল। এখন যা পাওয়া যায়। সেই চেষ্টাই করছি।” তাঁদের কথায়, “আরও কত বিপদ যে আমাদের জন্য অপেক্ষা করে রয়েছে, বুঝতে পারছি না।” বিডিও নিশীথভাস্কর পাল বলেন, “আরও ৮ পরিবারকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এলাকার সঙ্গে যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা ভাঙতে শুরু করেছে। আশ্রয়হীনদের ত্রিপল ও চাল দেওয়া হয়েছে।”
চাকদহ ব্লকের সরাটি পঞ্চায়েতের ন’টি গ্রাম সংসদের মধ্যে আটটিই গঙ্গার তীরে। ইতিমধ্যে উত্তর সরাটি, রায়ডাঙ্গা এবং তারিণীপুর, হেমনগর এলাকায় ভাঙনে কয়েকটি পরিবার আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে। সরাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মলয় কীর্তনিয়া বলেন, “সাড়ে ৪ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ভাঙন শুরু হয়েছে। চাষের জমি নদী গর্ভে তলাচ্ছে। পরিস্থিতির কথা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।”